গ্যালারি

রেসিপিঃ নিমকি (সুজির ঝুরি নিমকি)


আমাদের মত নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোর জন্য বিকালের নাস্তা একটা বাড়তি খরচ! কিন্তু উপায় নাই গোলমাল হোসেন! আপনি না খেয়ে থাকলেও চলবে কিন্তু পরিবারের ছোট/বড়দের খাওয়াতেই হবে। এদিকে প্রতিদিন বাইরের খাবার খাওয়ানো চলে না, আর্থিক চিন্তা করতে হয় এবং দোকানের খাবারে বিরাট ভেজাল থাকেই! সুতারাং সামান্য কিছু খরচে যদি নাস্তা বানাতে পারেন তবেই মঙ্গল। বিকালের নাস্তায় প্রতিদিন আবার নুতন কিছু না হলে শিশুদের মন ভরে না। আজ আপনাদের এমনি একটা সহজ এবং ঘরে থাকা  দ্রব্য দিয়ে একটা নাস্তা বানানো দেখাবো। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে, হ্যাঁ ‘নিমকি’! অনেকে ‘ঝুরি নিমকি’ও বলে থাকেন।

চলুন দেখে ফেলি। আগেই বলে রাখি যে কোন দিন বানিয়ে কাচের বোয়ামে ভরে রেখে দিতে পারেন, সপ্তাহ খানেক ভাল থাকবে। শিশুরা পছন্দ করে খাবে। বড়রা তো খাবেই সাথে যদি এক কাপ চা হাজির করেন, তবে আর কথাই বলবে না!

উপকরনঃ
– সুজিঃ এক কাপ (আপনারা চাইলে ময়দা দিয়েও বানাতে পারেন, তবে সুজির টা বেশি মচমচে হয়, স্বাদও ভাল)
– কালি জিরাঃ হাফ চা চামচ
– বেকিং পাঊডারঃ এক চা চামচ
– লবনঃ পরিমান মত
– পানিঃ পরিমান মত
– সামান্য ময়দা (পিঁড়িতে বেলার জন্য)
– তেলঃ ডুবো তেল (ময়ানে কয়েক চামচ লাগবে)

প্রনালীঃ

সুজি নিন এবং এতে একে একে বেকিং পাঊডার, লবন মিশান। (সব সময় ভালমানের বেকিং পাউডার ব্যবহার করুন, দোকানীরা সাধারনত কমদামী, লোকাল মানহীন এবং পরিমানে বেশী ব্যবহার করে। খেতে স্বাদ হয় বটে তবে শরীরের বারটা বেজে যায়!)


কালি জিরা হচ্ছে এই খাবারের প্রান! কালি জিরা আর একটু বেশীও দিতে পারেন যদি আপনি পছন্দ করেন।


ভাল করে মিশিয়ে নিন।


পানি দিয়ে ময়ান বানাতে থাকুন। সুজি কিন্তু শক্ত হয়ে যায়, তাই প্রয়োজনীয় পানি দিন এবং ভাল করে মাখুন।


এবার তেল দিয়ে আবারো মাখুন। এই মাখাই স্বাদ বের করে আনবে! যত ভাল মখাবেন তত ভাল হবে।


কিছুক্ষনের জন্য রেখে দিন। ৩০ মিনিটের বেশী হলে ভাল।


এবার রুটি বানানোর জন্য এক গোলা নিন এবং রুটি বেলুন। এখানে সামান্য ময়দা ব্যবহার করবেন যেন রুটি পিঁড়িতে না লেগে যায়।


এবার ছুরি দিয়ে কাটুন। ডিজাইন সাধারণত এমনই করা হয়।


কড়াইতে তেল গরম করে কাঁচা নিমকি গুলো দিন।


বেশী ভাঁজবেন না, কালিজিরা যেন না পুড়ে যায়। হলদে ভাব এলে তুলে নিন।


ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। টপাটপ!


খাবার আগে এক চিমটি বিট লবন (যা আমরা দিতে ভুলে গেছি) ছিটিয়ে দিয়ে আরো আরো মজা তুলে নিতে পারেন।

আমার রান্না টেষ্টার বুলেট এটা এতই পছন্দ করেছে যে, আমি আমার ব্যাটারীকে বলেছিলাম পাশের বাসার ভাবীদের কিছু বিলিয়ে দিতে, কিন্তু সে বলল, তোমরা অন্য একদিন বানিয়ে বিলিয়ে দিও, আজ নয়!

খুব সহজ নাস্তা, একদিন বানিয়ে দেখতে পারেন। আশা করি আমাদের কথা স্মরণ করবেন। সবাইকে শুভেচ্ছা।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

13 responses to “রেসিপিঃ নিমকি (সুজির ঝুরি নিমকি)

  1. ময়দা দিয়ে এটা তৈরি করার চেষ্টা করেছিলাম একবার কিন্তু মচমচে হয়নি । আজ বুঝলাম সুজি দিয়েও করা যায় আর মচমচেও হয় । ধন্যবাদ ।

    Like

  2. ভাইয়া রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।

    Like

  3. ছোটবেলায় আমার মা এই নিমকি বানিয়ে বয়ামে ভরে রাখতো, আরও রাখতো চিনির প্রলেপ দেয়া শক্করপরা নামের আরো এক জাতীয় নাস্তা। সত্যি চায়ের সাথে এই সুজির নিমকি অনন্য নাস্তা। আমিও চেষ্টা করবো, মেধার জন্য নিত্য নতুন নাস্তার যোগান দিতে গিয়ে আমিও হিমশিম খাচ্ছি। যাই দেই বলে এইটা আমি কালকে খেয়েছি আজকে আর খাবো না। তার প্রতিদিন চাই নতুন কিছু। ধন্যবাদ ভাইজান মনে করিয়ে দেয়ার জন্য। এই ময়ান দিয়ে মা আরো এক ধরণের নাস্তা বানাতো সেইটার নাম ছিলো ডোনাট। ছোট বিস্কিটের মতো মাঝখানে ফাঁকা বৃত্ত।

    Like

    • ধন্যবাদ বোন।
      মেধা কেমন আছে? আসলে শিশুদের ব্যাপারই আলাদা। কখন যে কি খেতে চায় তা বুঝাও মুস্কিল। এক খাবার একমাসে এক বার হলেও ওরা বলে এই তো সেদিন খেলাম! শুধু মুরগী পোলাউ এর ক্ষেত্রে ওদের না নেই।

      হা, আমরাও ডোনাটের একটা রেসিপি হাজির করবো কিছুদিনের মধ্যে।

      ব্লগে আসার জন্য আবারো ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।

      Like

  4. অসাধারণ!!!!!

    নিমকির এই ঝুরি রেসিপিটা সত্যিই খুব ভাল হয়েছে। দেখতে সেইরকম হয়েছে
    আমার কাছে বড় নিমকি অসহ্য লাগে। আর এই নিমকি ভাল লাগে।

    আঙ্কেল, চিনির সিরায় একবার ডুবিয়ে খেয়ে দেখবেন। অনেক ভাল্লাগবে

    শুভেচ্ছা

    Like

  5. আপনি আপনার প্রায় প্রতিটা রেসিপি ( বিশেষ করে যেগুলোতে কর্ণফ্লাওয়ার , বেকিং পাউডার , ব্যবহার করা হয় ) সেখানে বলেন ” (সব সময় ভালমানের বেকিং পাউডার ব্যবহার করুন, দোকানীরা সাধারনত কমদামী, লোকাল মানহীন এবং পরিমানে বেশী ব্যবহার করে। খেতে স্বাদ হয় বটে তবে শরীরের বারটা বেজে যায়!) ” এটা বলেন । এই সম্পর্কে বিস্তারিত কি বলা যাবে । মানে কি ক্ষতি হয় ? আমি আমার বাসার কাছের দোকান থেকে এগুলো কিনি । আমারটার নাম ” HAIKO – everyday good food ” আমি বুঝতে পারছিনা এটা ভালো নাকি খারাপ কম্পানির প্রডাক্ট । আগে একবার AHMED’s এর টা ব্যবহার করেছিলাম । ভালো এবং বাজে কোম্পানির টা বুঝবো কি করে ?

    Like

    • ধন্যবাদ বোন।
      আসলে এটা এইজন্য লিখি, বাজারে এগুলো নকল পাওয়া যায় এবং যাচ্ছে। নকল গুলো ব্যবহারে রেজাল্ট ভাল আসে না, শারীরিক সমস্যা তো হবেই। বুক জ্বালাপোড়া, বার বার ঢেকুর আসা, গ্যাস হওয়া, মুখে টক স্বাদ বা তিতা ভাব আসতে পারে। সেজন্য এটা লিখে মনে করিয়ে দেই। Haiko র নাম শুনিনাই। আহমেদের এই ধরনের প্রোডাক্ট আছে তবে আমরা যেহেতু ঘরে ব্যবহার করি তাই বিদেশী ভালটাই ব্যবহার করা উচিত। এবং এটার ডেট দেখে কিনতে হয়। আমরা ফস্টার ক্লার্ক্স এর জিনিষে ভাল রেজাল্ট পাই।

      আমাদের দেশের এই সকল জিনিষের উৎপাদনে এখনো জাতে উঠতে পারে নাই। ভেজালে সয়লাব।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  6. কুঁচো নিমকি/কাঁটা নিমকি/ঝুরা নিমকি যাই বলেন, বিকেলে চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে আমার খুব প্রিয়। তবে সুজির নমকি কখনো খাইনি। এর মধ্যে বানাবো ইন শা আল্লাহ!

    Like

  7. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]