এখন বাজার থেকে মাছ কিনলেই মাছের পেটে ডিম পাবেন। মাছের পেটে ডিম নেই বলে মাছ বিক্রেতা বললেও আপনি সেই মাছের পেটে আপনি ডিম পেয়ে যাবেন। কারন এটা মাছের বংশবৃদ্দির সিজন! হা হা হা… ইলিশ মাছের ডিম নিয়ে কারো কোন আপত্তি না থাকলেও অন্যান্য মাছের ডিম নিয়ে প্রায় পরিবারেই আপত্তি আছে। কারন সব মাছের ডিম আমাদের পরিবার গুলো পছন্দ করেন না। পছন্দ না করার কারন হচ্ছে, মাছের ডিম রান্না করার পরও অনেকে সেই ডিম খেতে চান না।
কিছুদিন আগে আমাদের এক রেসিপি প্রিয় পাঠক ‘ল্যাটিচুড ভাই’ তার এক কমেন্টে আমাকে মাছের ডিম রান্না করার একটা রেসিপি দিতে অনুরোধ করেছেন। আমি গত কয়েক সপ্তাহে যত মাছ কিনেছি তাতে ডিম পেয়েছি। প্রায় সব মাছের ডিম খেতে পারি নাই। আমার ব্যাটারীও মাছের ডিম পছন্দ না করার কারনে সেই ডিম কোথায় গিয়েছে তার হিসাব আমি রাখি নাই। তবে মাছের যা দাম, ডিমের দামও তাই বলে আমার কিছু বলার ছিলো। আমি এবার আমার ব্যাটারীকে জানালাম, আমি মাছের ডিম রান্না করবো এবং খাবো। এত টাকার জিনিষ না খেয়ে রাখা যায় না।
ছোট বেলায় আমার আম্মাকে দেখতাম তিনি মাছের ডিমের কোপ্তা বানিয়ে ঝোল রান্না করতেন এবং সেটা আমাদের খাওয়াতেন। আমি সেই আইডিয়া নিয়ে মাছের ডিম রান্না করতে লেগে গেলাম!
চলুন, মাছের ডিম রান্না দেখে ফেলি। ইলিশ মাছের ডিম অবশ্য সাধারন রান্নার মত করেই রান্না করা যায়, এটা একটু আলাদা। তবে মাছের ডিমের সাধারন রান্নাও একদিন আপনাদের দেখিয়ে দেব। আজ প্রথমে মাছের ডিমের কোপ্তা এবং তার পর আবার রান্না!
উপকরন ও প্রনালীঃ
প্রথমে মাছের ডিম ভাল করে ধুয়ে নিন। এবং তাতে কিছু পেঁয়াজ কুঁচি, মরিচ কুঁচি, সামান্য লাল মরিচ গুড়া, হলুদ গুড়া এবং সামান্য লবন দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
মিশানোর পর এমন দেখাবে।
এবার একটা কড়াইতে তেল গরম করে মাছের ডিমের কাই থেকে চামচ দিয়ে ছোট ছোট গোলা করে ভেঁজে ভেঁজে তুলে রাখুন।
ব্যস হয়ে গেল মাছের ডিমের কোপ্তা। সব ভেঁজে তুলে রাখুন।
এবার ঝোল পর্ব! বেঁচে যাওয়া তেলে এবার আবার কিছু পেঁয়াজ কুঁচি, মরিচ কুঁচি, সামান্য লাল মরিচ গুড়া, সামান্য হলুদ গুড়া, সামান্য জিরা গুড়া, সামান্য আদা বাটা, সামান্য রসুন বাটা ও সামান্য লবন দিয়ে ভাল করে ভেঁজে নিন। পেঁয়াজের রং হুলদে হয়ে গেলে হাফ কাপ পানি দিন।
ব্যস হয়ে গেল ঝোল। ভাল করে কষিয়ে নিন। তেলে ভেসে উঠবে।
এবার সেই ঝোলে ডিমের কোপতা গুলো দিয়ে দিন। এবং আবারো কষিয়ে নিন।
আরো হাফ কাপ পানি (পরিমান বুঝে) দিয়ে ঢাকনা দিয়ে মিনিট ২০ এর অন্য মাধ্যম আগুনের আঁচে রেখে দিন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে ভুলবেন না। যে কোন রান্নাই রান্নাঘর ছেড়ে যাবেন না, এটাই রান্নার প্রতি ভালবাসা। মাঝে মাঝে দেখুন এবং নেড়ে দিন।
এমন একটা অবস্থায় আসতে সময় নিবে না। লবন দেখুন, লাগলে দিন। সব ঠিক থাকলে কিছু ধনিয়া পাতার কুঁচি দিন এবং নেড়ে নামিয়ে ফেলুন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। গরম ভাতের সাথে চমৎকার লাগবে।
আশা করি, আপনাদের ভাল লাগবে। আমি খেয়ে বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। যদিও আমার ব্যাটারী মুখে দিয়েও দেখেন নাই! আমার রান্না টেষ্টার বুলেট বেশ মজা করে খেয়েছিল।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
(মাছের ডিমের আর কোন মজার রান্না আপনার জানা থাকলে আমাদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। তবে আমার কাছে মাছের ডিমের জুরা রান্নার আর একটা রেসিপি আছে তা সময়ে আপনাদের কাছে হাজির করে ফেলবো।)
এটা কোন মাছের ডিম ? মাছের ডিমের কোপ্তা প্রথম দেখলাম । ধন্যবাদ । এটা অনেকটা চিতল মাছের কোপ্তার মত ।
বোয়াল মাছের ডিম প্রথমে হালকা করে ভেজে নেই । তারপর চাকু দিয়ে ছোট পিস করে কাটি । এরপর মশলা ভুনে সেই মশলা তে ডিম ভাজা দিয়ে দেই । বেশিক্ষন চুলায় রাখি না । মাখামাখা ভুনা করি । ( বোয়াল মাছের ডিম বেশী ভাজলে এবং বেশী জ্বাল দিলে শক্ত হয়ে যায় ) । খুব কম সময়ে রান্না হয়ে যায় ।
অন্যান্য ছোট মাছের ডিম ঝুরি ভাজা করে রান্না করি ।
রুই মাছের ডিম কাচাআম দিয়ে ঝোল রান্না ( খুবই মজার ) । এটা ঠিক সকল মাছের ডিম খেতে মজা লাগে না ।
বাইম মাছে একবার ডিম পেয়েছিলাম , রান্না করে দেখি স্বাদ তেতো হয়ে যায় । পরেরবার আর এটা রান্না করিনি ।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আপনার রান্নার অভিজ্ঞতা দেখে বুঝতে পারি, আপনি বেশ ভাল রান্না করেন।
হা, ডিম নিয়ে আপনার সব কথা ভাল লাগল।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
maximum macher dim e pocha lage…tobe sing macher dim jhole dile othoba alada vuna korle khub moja lage . apni jeta korecen seta mone hocce rui macher dim……ekbar motamuti ei vabe korecilam…eto bajeeeeee !! er por r iccha nai rui macher dim khaoar
LikeLike
হা হা হা……।। ধন্যবাদ বোন।
ইলিশ ছাড়া আর কোন মাছের ডিমে স্বাদ নাই!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আগে আমি রুই, পাঙ্গাস মাছের ডিম আমার সাহায্যকারীনিদের দিয়ে দিতাম। কিছুদিন আগে পাঙ্গাস মাছের ডিম সেই ঝুরি করে ভেজে দিলো। কড়া করে ভাজেনি। মোলায়েম ছিলো। খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিলো। তবে রুই মাছের ডিম ঐ রকম করে ভেজে সেই স্বাদ আর পাইনি। মাঝে মাঝে মাছের রুই মাছের ডিম জমিয়ে রেখে মেয়েকে দেই। সে টমেটো দিয়ে মাছের ডিমের টক রান্না করে যেটা আমার নাতি নাতনিরা বেশ পছন্দ করে। মাছের ডিমের কোপ্তাও আমার কাছে শক্ত মনে হয়।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
হা, আমি কখনো মাছের ডিমের ব্যাপারে ভাবি নাই। ছোট বেলায় খেয়েছি তবে ইলিশ ছাড়া অন্য কোন মাছের ডিমে মন ভরে না। এবার হাতের কাছে রুই মাছের ডিম ছিল বলে একটা চেষ্টা করলাম মাত্র।
মাছের ডিমের টক রান্নাটা জেনে নেব একদিন।
ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা।
LikeLike
ইলিশ মাছের ডিম ছাড়া অন্য কোন মাছের ডিম খাওয়ার ইচ্ছা নেই, তিতা আর বিস্বাদ।
তবে আপনি যে বড়া ভেজেছেন তার শুধু ভাজা বড়া টা খেতে ইচ্ছা করছে
LikeLike
হা হা হা…। ধন্যবাদ ভাতিজা।
ইলিশ মাছের ডিমের স্বাদের কাছে অন্য সব মাছের ডিমের স্বাদ শূন্য। আমি মানি।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমার খুব পছন্দের একটা খাবার হইলো এই মাছের ডিম । আব্বাও অনেক কিনে এই ডিম কিন্তু আমার প্রেশার ধরা পরার পর আব্বা আর এই মাছ কিনেনা। একবার লুকিয়ে দোকানে যেয়ে খেয়েছিলাম মাছের ডিম তারপর রাতে প্রেশার গেলো বেড়ে । আব্বার ঝাড়িটা একটু বেশীই হয়ে গেসিল তারপর আর ভয়ে মাছের ডিম খাইনা। আপনার পোস্ট টা দেখে খুব লোভ হচ্ছে । বাড়াবো নাকি আরেকবার প্রেশার ?
LikeLike
ধন্যবাদ শিবলী ভাই।
না, দরকার নেই, যা খেলে শরীরের সমস্যা হয় তা খাবার দরকার নেই। আপনি ভাল থাকুন, আপনার পরিবারের সবাই ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
ভাই আপনি তো আলাদিনের দৈত্য লেভেলে পৌঁছেছেন। যা চাই সবই আছে আপনার ভাণ্ডারে। আজকে ভুলে ইলিশের বদলে রুই মাছের ডিম কিনে নিয়ে এসে মহা ফ্যাঁসাদে পড়ে গেছলাম। এখন এটা দেখে কী যে শান্তি লাগছে!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার। মাছের ডিম আমার খুব পছন্দের খাবার। চান্স পেলেই হল। যাই হোক, রান্না করেছেন জেনে ভাল লাগলো। আনন্দে সময় কাটূক।
LikeLike