এটা হলফ করে বলতে পারি আপনারা অনেকে এখনো ছোলা ডালের পোলাউ খেয়ে দেখেন নাই। এটা আমি এজন্য বলতে পারি যে, এটা আমাদের দেশে এখনো খাবারের তালিকায় কমন হয়ে উঠে নাই। কিছু এলাকা এবং কিছু সংখ্যক মুরুব্বী এই পোলাউ রান্না করেন, তাও রোজার মাসে এবং ইফতারের জন্য। ইফতারের একটা চমৎকার আইটেম হিসাবে এই ছোলার পোলাউ বেশ মজাদার খাবার।
রোজার মাস শুরু হতে যাচ্ছে, আমাদের ইচ্ছা আছে এই মাসে ইফতারের জন্য আমাদের যা কিছু আইটেম আছে, তা আপনাদের জন্যও তুলে দেব। আগেই বলে রাখি, আপনারা যারা আমাদের জানেন এবং আমাদের রেসিপি নিয়মিত পড়েন তারা জানেন যে, আমরা কঠিন ও বেশি মুল্যের খাবার এড়িয়ে চলি। আর আমাদের রেসিপির টার্গেট গ্রুপ যেহেতু নবীন, ব্যাচেলর, প্রবাসী এবং রান্নায় যারা উৎসাহী তাদের জন্যও, তাই আমাদের এই সকল রেসিপি/খাবার সহজ ও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে হবে। ঘরে যা আছে তা দিয়েই কি করে রান্না করা যায়, কি করে একটু সামান্য পরিবর্তনে রান্নার রুপ, রস ও ঘ্রান পাল্টে দেয়া যায়, সেই চেষ্টাই আমাদের চলবে। আশা করি আপনারা আমাদের সাথেই থাকবেন।
চলুন আজ একটা সহজ রেসিপি দেখে ফেলি। ছোলা ডালের পোলাউ। ছোলা ডাল আশা করি সবার বাসায় আছে, বিশেষ করে ছোলা ভাজি না খেলে ইফতারে কি আমাদের চলে? হা হা হা।। ইফতারের সামান্য ছোলা এবং কিছু পোলাউ চাল নিয়েই আপনিও এই আইটেম বানিয়ে নিতে পারেন। খেয়ে বলতেই হবে, কিছু একটা খেলুম! আর বিকালের নাস্তা হিসাবে সোনামনিদের জন্য তো এই আইটেমের জুড়ি নেই!
উপকরনঃ (আমরা কিছু কম বানিয়েছি, তবে আমি উপকরন আধা কেজি চাল এবং পনে এক কাপ ছোলার জন্য দিয়ে দিচ্ছি)
– পোলাউ চালঃ আধা কেজি
– ছোলাঃ এক কাপের চেয়ে কম
– পেঁয়াজ কুচিঃ হাফ কাপ
– দারুচিনিঃ দুই টুকরা
– এলাচিঃ দুই তিনটে
– আদা বাটাঃ দুই টেবিল চামচ
– রসুন বাটাঃ এক টেবিল চামচ
– জিরা বাটাঃ হাফ চা চামচ
– কাঁচা মরিচঃ কয়েকটা
– লবন
– তেল (হাফ কাপের কম)
– পানি
প্রনালীঃ
লবন যোগে ছোলা ভাল করে সিদ্ব করে নিন। তার পর ভাল করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। পোলাউ চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন।
এবার কড়াইতে তেল গরম করে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ ভাঁজুন। তার পর আদা, রসুন এবং জিরা বাটা, দারুচিনি, এলাচি দিয়ে দিন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ চিরে দিতে পারেন।
ভাল করে ভেঁজে নিন। তেল উঠে যাবে।
এবার ছোলা দিয়ে দিন। এবং ভাল করে কষিয়ে নিন।
সুন্দর একটা ঘ্রান বের হবে। এবার পোলাউ চাল দিয়ে দিন।
ভাল করে মিশিয়ে নিন।
এবার পানি দিন। পানির পরিমান হতে হবে চাউলের উপর এক ইঞ্চির মত। যারা পোলাউ রান্না করতে জানেন তারা খুব সহজে এই পানির অনুমান করতে পারবেন। পানি শুরুতে কম হলেও কিছু যাবে আসবে না, পানি কম হলে দেয়ার অফশন আছে। শেষের দিকে…। হা হা হা…
এবার হালকা আঁচে মিনিট বিশেকের জন্য ঢেকে রাখুন। কোথায়ও গিয়ে বসে পড়লে চলবে না! রান্নাঘরেই থাকুন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে। পানিতে এবার লবন দেখুন, পোলাউএর পানি কটা হতে হবে। (লবন ছোলা সিদ্বে এবং শুরুতে দেয়া হয়েছে, কাজেই বুঝে শুনে)
চাল দেখেই বুঝতে পারবেন, আরো পানি লাগবে কি না। লাগলে পানি দেবেন তবে বুঝে, পানি বেশি হয়ে গেলে পোলাউ নরম এবং ভিজাভিজা হয়ে যেতে পারে, তাই সাবধানে!
আগুন বেশি না লাগার জন্য তাওয়া দিয়ে দম দিতে পারেন। অল্প আঁচে হতে থাকুক। ঢাকনা থাকবে। আশা করি আরো মিনিট বিশেকের মধ্য হয়ে যাবে।
ব্যস হয়ে গেল। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন।
ইফতারে এই পোলাউ ভাগাভাগি করে খেতে বেশ মজাদার। একবার রান্না করে দেখুন এবং আমি আশা করি আমার সাথে আপনি একমত হবেন ও বলবেন, ওয়াও!
সবাইকে শুভেচ্ছা। সবাই ভাল থাকুন। দেশে বিদেশ যেখানেই থাকুন, শুভেচ্ছা নিন। কলকাতা, ইন্ডিয়ার বাংলা ভাষাভাষী বন্ধুদেরও শুভেচ্ছা। আপনারা আমাদের রেসিপি পড়েন বলেই আমাদের রেসিপি লিখতে ও রান্না করতে ভাল লাগে।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
সিলেটি পরিবারে এই ছোলার পোলাও ও মেথি দিয়ে সাদা জাউ/নরম খিচুড়ি ইফতারীতে মাষ্ট! খেতে ভালোই লাগে। আর সারাদিন রোজা রেখে আদা কুচি মেথির নরম খিচুড়ি পেটের জন্যও ভালো।
LikeLike
হা হা হা, আপা। আমি ছোট বেলায় অনেক যাউ খেয়েছি। ঝাউ রান্না করার জন্য একবার চাল কিনেছিলাম, এখনো সেটা আছে। আপনি মনে করিয়ে দিলেন। একদিন ইফতারে রান্না করে দেখবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
It is a new Item, thanks SHADAT bhai. to give us easy but YUMMY YUMMY recipe …….:)
LikeLike
ধন্যবাদ রেদোয়ান ভাই।
রান্নার প্রতি আপনার আগ্রহ বেশ ভাল লাগে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
jee, as salamu Alaikum. Kheye dekhe nei, tar por montobyo korbo. Jodi moja na lage tobe hu hu, bujhtei paren….
LikeLike
হা হা হা… আরে এ যে দেখছি আমাদের আমিন ভাই।
এটা নিশ্চিত, খুব মজা হবেই। ওপেন চ্যালেঞ্জ! হা হা হা… লবন দিয়ে ছোলাকে ভাল করে সিদ্ব করতে ভুলবেন না।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ভাই, ইফতার আর ঈদের নতুন নতুন রেসিপি নিয়ে হাজির হবেন নিয়মিত……. 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। আমাদের চেষ্টা থাকবে, বাকী উপরওয়ালার ইচ্ছা।
আমাদের জন্য দোয়া করবেন আশা করি।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Thk for healthy recipy.
LikeLike
আপনাকেও ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
LikeLike
সিলেটে ভুনা খিচুড়ি তে ছোলা যোগ করা হয় আমি অবশ্য করি না । আমি ছোলা ছাড়াই করি । তবে এটা রান্না করা অতিরিক্ত রয়ে যাওয়া ছোলা দিয়েও করা যাবে নাস্তা হিসাবে ।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। কত প্রকারের খাবার যে আছে এই দুনিয়াতে। আমরা কটাই বা জানি। তবে আমি মনে করি যে কোন খাবার রান্না করে সুস্বাদু করতে পারলেই তা সুখাদ্য।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
সিলেটে প্রথম খেয়েছিলাম… অনেক ধন্যবাদ রেসিপির জন্য 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। কেমন আছেন? অনেকদিন পর দেখলাম। আশা করছি, কুশলে আছেন। মাঝে মাঝে দেখে যাবার অনুরোধ জানিয়ে গেলাম।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমার আগে অনেকেই বলেছেন, তবুও আমি বলি, আমার শশুরবাড়িতেও এই ছোলার পোলাওয়ের প্রচলন রয়েছে। এটা ফেভারেট খাবারের লিস্টের মধ্যেই পড়ে। 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই।
আমারো জানা ছিল না, আসলে ছোলা পোলাউ বেশ মজাদার, আখাউড়া বিবাহ না করলে হয়ত জানাই হত না!
আপনার শশুর বাড়ী কোন জেলায়?
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমার শশুর বাড়ী রাজশাহী। তবে আমার শাশুড়ির অরিজিন সিলেট। তাঁরা একেবারে ছোট থাকতে রাজশাহীতে চলে গিয়েছিলেন। আমার বাড়ী কিশোরগঞ্জ, আবার মা’র বাড়ি চাঁদপুর। তাই আমাদের বাড়িতে নানা দিকের নানা ফ্লেভার রয়েছে। 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই।
হা, আমাদের জেনারেশনে আমরাও চারিদিকে চারি জেলায় মিলে মিশে আছি। এটা ভাল, মাল্টি কালচার! কিন্তু অনেক সময় খাবারের ব্যাপারে কিছুটা এদিক সেদিক হয়! হা হা হা…। রুচি আর কি!
যাই হোক ভাল থাকুন। আপনাদের জীবন আনন্দে কাটুক।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Salam. My mom used to make these sometimes and I totally forgot about them. Thanks for the reminder.
LikeLike
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
আপনার আম্মাকে আমাদের সালাম বলবেন। হা, আমরা জানি আমাদের যারা প্রবাসে থাকেন তারা তাদের খাদ্যাভাস পাল্টে ফেলছেন। বিশেষ করে আপনাদের প্রবাসী জেনারেশন তো আর বাংলা খাবার খাবেন ই না। আপনারা খাঁটি প্রবাসী। যাই হোক, লোকে বলে বাংলাদেশীদের খাবারের কোন ঐতিয্য নাই, আমি এটা মানি না। আমাদের খাবার গুলো বেশ ভাল, শুধু চর্চা ও পরিবেশন দরকার। এত কম মশলায় এবং এত কম সময়ে অন্য কোথায়ও খাবার তৈরী হয় না।
ভাল থাকুন।
LikeLike
Not quite true 🙂 We love Bangladeshi food. Not being able to make it everyday because of 100 other responsibilities is a different issue 😦 However, dal bhaat is on the menu for sure on the weekends when there is little more time on hand 🙂 So glad to have found your blog.
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আমি নিজেও এক সময় প্রবাসী ছিলাম। প্রবাসের ব্যাপার গুলো আমার জানা আছে, জীবন দেখতে সুন্দর কিন্তু এই সুন্দর জীবনের জন্য অনেক অনেক ব্যস্ত বা কষ্ট করতে হয়।
হা, প্রবাসে দেশী খাবার সব সময় খাওয়া যায় না। তবুও মাঝে মাঝে করবেন। আপনার ব্লগে গিয়ে মনে শান্তি পেয়েছি।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
একদিন রান্নার জন্য গিন্নীকে অনুরোধ করতে হবে।
LikeLike
মানিক ভাই, খেতে বেশ মজাদার। আশা করি একদিন খেয়ে দেখবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ নাস্তা বা ইফতারে সুস্বাদু ছোলার পোলাউ | RupCare:: Bangladesh's First Style, Fashion, Beauty care, Skin care, Hair care, Celebs, Women, Health, Home Decor, Recipes Site
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ গাঁজর পোলাউ (রেসিপি লাভার্সদের জন্য) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
পিংব্যাকঃ Cholar pulao recipe | Bangladeshi Ramadan Recipe | রমজানের ছোলার পোলাউ | With A Spin