আগের দিনে (!) সারারাত আমসত্ত্ব ভিজিয়ে রাখা হত। কৃষক বা গৃহস্থ মাঠে কাজ করে গরমের দুপুরে ফিরলে বাড়ির বৌ সেই ভিজিয়ে রাখা আমসত্ত্ব দিয়ে শরবত বানিয়ে দিতেন। এখন আর সেই দিন নাই। একজন কৃষক বা গৃহস্থ কারো আর সেই আদর, কদর নাই! আদর, কদর আছে টাকাওয়ালাদের! স্বামীর যদি টাকা থাকে তবেই স্ত্রী তাকে আদর যত্ন করে! হা হা হা…।। আমার চোখে দেখা সব কিছু! আমার চোখ ফাকি দেয়া এত সহজ নয়! তবে ধনী সেয়ামীরা যে ডাইরেক্ট স্ত্রী থেকে এই শরবত মার্কা আদর, কদর পেয়ে থাকেন তা নয়! টাকার কারনে (নিজের বুঝ পাগলেও বুঝে) স্ত্রী কাজের মেয়ে/বুয়া দিয়ে এখন শরবত বানিয়ে নিয়ে পরিবেশনার সময় তিনি এগিয়ে যান! এই তো!
যাই হোক, বেশী কিছু বলতে চাই না! বললে আবার আপনারা আমাকে টেনে নিয়ে যাবেন অন্য দেশে! আমি ভিন্ন দেশে যেতে চাই না, বাংলাদেশ আমার দেশ। এই দেশেই আমি মরতে চাই! এত দেশের ভালবাসাই আমার দরকার।
আমার বাবা শরবত পান করতে বেশ আনন্দ পেতেন। আমার পরিস্কার মনে আছে আমার বাবা দুপুরে ভাত খেতে অফিস থেকে হেঁটে বাসায় আসতেন এবং গরমে ঘেমে যেতেন। আমার আম্মা সময় হলেই এক গ্লাস শরবত বানিয়ে রাখতেন। এখন কে ঘামল, আর কে মর্ কার কিবা আসে যায়! দূর, আবারো কোথায় চলে যাচ্ছি! আসলে যা বলতে চাইছি। আমার বাবা আমসত্ত্বের শরবত বেশ পছন্দ করতেন। আমি আমার আম্মাকে অনেক বার এই শরবত বানাতে দেখেছি। তবে অনেক আগের কথা, আম্মা ধারে কাছে নেই, আর বাবা পরপারে আছেন! রেসিপি আমি হবহু বলতে পারবো না।
মনে পড়া (আন্দাজ) থেকে আপনাদের জন্য এই শরবত তুলে দিলাম। আমার রেসিপি টেষ্টার বুলেট এবং পাশের বাসার দুই বুড়ি খুকি এই শরবত পান করে আনন্দ পেয়েছে। শরবত কয়েকদিন আগে বানানো হয়েছিল, যখন দেশে খুব গরম পড়ছিলো! চুলন দেখে ফেলি।
উপকরনঃ
– আমসত্ত্ব (অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে পারলে ভাল হত, সেই টাইম পাই নাই)
– তেঁতুল (সামান্য)
– চিনি (পরিমান মত)
– বিট লবন (এক চিমটি)
– ঠান্ডা পানি (তিন গ্লাস)
প্রনালীঃ
আমসত্ত্বকে কুচি করে কাটার চেষ্টা।
তেঁতুল, চিনি, বিট লবন (ছবিতে নেই)
সামান্য পানিতে সব কিছু কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখলাম।
বেন্ড করে তাতে ঠান্ডা পানি যোগ দিলাম (বরফ থাকলে ভাল হত)
আবার সামান্য বেন্ড করলাম। সামান্য পান করে দেখতে পারেন – চিনি, টক, মিষ্টি ঠিক হল কি না!
ছাঁকুন দিয়ে ছেঁকে গ্লাসে নিলাম। ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। (বিদ্যুৎ না থাকায় ছবি গুলো ভাল হয় নাই)
আহ, কি শান্তি!
গরমে নেমে ঘেমে অস্থির হয়ে উঠলে এমন এক গ্লাস শরবত মনে কি আনন্দ দেয়, তা না পান করলে বুঝানো মুস্কিল!
শরবত ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ!
আমসত্ত আর তেঁতুল দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাই হবে খেতে! 🙂
একবার ট্রাই করে দেখতে হবে। পোস্টের জন্য ধন্যবাদ, উদরাজী ভাই।
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই।
আসলে শরবত এখন আর চলছে না। আগে যেমন ঘরে ঘরে ছিল। এখন শরবতের আগের সেই কদর নেই।
বেশ ভাল হয়েছিল। আশা করি আপনারও ভাল লাগবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
কদর হয়তো কিছুটা কমেছে বাজারে সফট ড্রিংকস আসার পর থেকে। কিন্তু এখনো কিছুটা হলেও আছে, প্রধাণত ফ্রেস ফ্রুটস-এর শরবত। যাই হোক, ট্রাই করে দেখবো আশা রাখি। 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই। আজকাল নুতন আর কি করছেন? নুতন ছবি দেখতে চাই।
LikeLike
হা হা… ভালো বলেছেন। নতুন কিছু করার উদ্দেশ্য তো মোটামুটি প্রতিদিনই থাকে। সময় পেলে ব্লগে ঘুরে আসতে পারেন। নতুন কিছু হয়তো চোখে পড়তেও পারে! হা হা। http://dhakaimenu.blogspot.com/
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই।
আমি আপনার ব্লগ দেখি। আপনার ক্যামেরা চোখ অসাধারন। আমি নিজে রান্না করি এবং ছবি তুলি সাধারন একটা ক্যামেরায়। যারা রান্না করতে চায় তাদের আমি ধরে রাখতে চাই। (কবে একটা ভাল ক্যামেরা কিনতে পারবো!)
ব্লগপোষ্টে কমেন্ট করা কঠিন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ধন্যবাদ উপরাজী ভাই!
আসলে ক্যামেরা দিয়ে যদিও ছবি তোলা হয়, ছবি কিন্তু নির্ভর করে ফটোগ্রাফারের উপরে। আর ঘরের ভিতরে ছবি তোলার ক্ষেত্রে আলো একটা বড় ব্যাপার। আলোর সঠিক ব্যবহারই ছবিকে আলাদা করে ফেলবে।
আমি অবশ্য কমেন্ট পাচ্ছি ব্লগে, উদরাজী ভাই। সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে জানি না। আমি ওয়ার্ড ভেরিফিকেশনও কিন্তু উঠিয়ে দিয়েছি।
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই।
হা, আপনাকে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার মনে হয়। ছবি মানেই আলোর খেলা।
ওকে, এবার কমেন্ট করে মজা পাওয়া যাবে।
ধন্যবাদ।
LikeLike
Osadharon
LikeLike
ধন্যবাদ মান্নান ভাই।
কেমন আছেন? অনেকদিন পর দেখলাম। আশা করি ভাল আছেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD