নেটে আমি রেসিপি লিখি এটা মোটামুটি আমার অনেক কাছের বন্ধু ও পরিচিতজনরা জানেন। আগে লুকালেও এখন আর লুকাই না। লুকিয়ে আর লাভ কি? হয়ত কেহ খেতে চাইবে নুতবা কেহ খাওয়াবে, এইতো! না লুকানোতে লাভ হচ্ছে আমার, নুতন নুতন রেসিপি জানতে পারি, ইচ্ছা করে আড্ডায় খাবার দাবার নিয়ে কথা বলি, সবাই আলাদা আনন্দ পায়! বিশেষ করে বেইলী রোড়ের আড্ডায় এখন কিছুক্ষন রান্না রেসিপি নিয়ে কথা উঠেই!
আমি সবার পছন্দ এবং কে কি রেসিপি দিতে চায় তা আমি মন দিয়ে শুনি। আমার বেইলী রোড়ের বেশীর ভাগ বন্ধুই রান্না টেষ্টার! রান্না টেষ্টার মানে হচ্ছে রান্নার স্বাদ ভাল বুঝে কিন্তু রান্নাঘরে প্রবেশ করে না! রান্না খারাপ হলে আবার রেগেও যায়! হা হা হা… যাই হোক দুনিয়াতে সবাইকে দিয়ে সব কিছু হয় না! আমাকে দিয়েও যে রান্না হবে এটা এখনো আমার কিছু বন্ধু, আত্মীয় এখনো বিশ্বাস করে না!
আসলে সময়, মানুষের জীবন কখন কি করে, কোথায় যায়, কে জানে? কখন কার ইচ্ছা কি হয় তা কে জানে? তবে আমি যেহেতু রান্না করা শিখে গেছি, আমি নিশ্চিত, আপনারাও চাইলে পারবেন! রান্না কি আর এমন কাজ! না, এটা ভুল, রান্না একটা বিরাট কাজ! যারা মনে করেন রান্না কোন কাজ নয় তাদের জন্য আমার দুঃখবোধ থাকবে! রান্না আসলে বিরাট এবং মনোহর কাজ। যারা এই কাজ করেন, তাদের নিশ্চিত সন্মান করতেই হবে। আর যারা ভাবছেন রান্না মেয়েদের কাজ, তারাও এখনো বোকার স্বর্গে আছেন। রান্না মেয়েদের কাজ নয়, মেয়েরা বা মায়েরা আপনাকে আমাকে ভালবাসেন বলেই আমাদের জন্য এই কাজটা করে দেন মাত্র।
যাই হোক, আজ আপনাদের জন্য আমার এই রেসিপিটা আমার এক বন্ধু বলে দিয়েছেন। কিছুদিন আগে বলেছিলো, আমি রান্না করার সুযোগ করতে পারছিলাম না। আজ করেই ফেললাম। কথা কম কাজ বেশী, চলুন দেখে ফেলি!
উপকরনঃ
– বুটের ডাল (হাফ কাপ)
– ঝিগা বা তরই (ঝিংগাকে ঢাকাই ভাষায় তরই বলে) কয়েকটা
– ডিম (একটা বা দুইটা), ডিমের ঝুরি বানাতে
– কিছু চিংড়ি মাছ বা মাশরুম (যে কোন একটা থাকলেই হবে)
– পেঁয়াজ কুচি হাফ কাপ
– রসুন বাটা, এক টেবিল চামচ
– মরিচ গুড়া, হাফ চা চামচ (ঝাল বুঝে)
– হলুদ গুড়া, হাফ চা চামচ বা কম
– কাঁচা মরিচ কয়েকটা
– ধনিয়া পাতার কুচি
– লবন (পরিমান মত)
– তেল হাফ কাপের কম
(দুটো কাজ আগে করে নেয়া দরকার। আমার দুই চুলা ছিল বলে পাশাপাশি করে নিয়েছি। প্রথমে বুটের ডালকে হাফ সিদ্ব করে নিতে হবে। দ্বিতীয় ডিমের ঝুরা বানিয়ে নিতে হবে)
প্রনালীঃ
আমি তেল কমে রান্না শুরু করি। কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সামান্য লবন যোগে ভাঁজতে শুরু করুন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ চিরে দিয়ে দিতে পারেন। পরে দেবেন রসুন বাটা। ভাল করে ভাজবেন।
ভাঁজা হয়ে গেলে সামান্য পানি দিয়ে দিন। ব্যস ঝোল প্রিপারেশন, এবার মরিচ ও হলুদ দিন।
কষিয়ে ঝোলের তেল উঠিয়ে নিন। এই ঝোল চেখে দেখুন, এই ঝোল স্বাদ হলে রান্না অবশ্যই স্বাদের হবে।
এবার সিদ্ব করে রাখা বুটের ডাল দিয়ে দিন। আরো কিছুক্ষন সিদ্ব করুন। প্রয়োজনে আরো কিছু পানি দিতে পারেন।
এবার চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে দিন।
ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কিছুক্ষন কষান।
এবার ঝিংগা গুলো দিয়ে দিন।
আবারো কিছুক্ষন ঢেকে রাখুন। ঝিঙ্গা মজে যাবে।
এবার ডিমের ঝুরা (এটা আগে বানিয়ে রাখবেন, খুব সহজ। সামান্য তেলে ডিম ফেটে ঘেঁটে দিলেই ডিমের ঝুরা হয়ে যায়) দিয়ে দিন। এবং ভাল করে নাড়িয়ে নিন।
এবার ধনিয়া পাতার কুচি দিয়ে দিন এবং ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন না লাগলে ‘ওকে’ বলুন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
এমন চমৎকার রঙের খাবার পেলে, কে খাবে না বলুন?
রান্না করতে সময় লাগে, খেতে সময় লাগে না! খাবার টেবিলে ব্যাটারী এবং বুলেটকে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন হল? জবাব না দিয়ে তারা শুধু হাসছিলো! ভাল রান্না হলে কেহ জবাব দেয় না, খারাপ হলে সবাই বলে উঠে, এটাই দুনিয়ার কারবার!
যারা এতক্ষন কষ্ট করে আমার রেসিপি দেখছিলেন তারা নিশ্চয় আমার বন্ধুকে দেখতে চাইবেন। আপনাদের হতাশ করবো না। হা, আমার বন্ধু বেশ উদার, ছবি প্রকাশে বাঁধা নেই। ‘শাক সবজি না খেলে মাব্বে!’
কৃতজ্ঞতাঃ এনামুল গনি শ্যামল, বেইলী রোড
FATAFATI RANNA MONE HOYACE.. AMIO CHESTA KORBO.KORBO.
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ কামাল ভাই।
কামাল নামে আমার অনেক বন্ধু আছে। সব কামাল নামের ছেলেরা খুবই আড্ডাবাজ। আপনি কেমন আড্ডা দেন।
আশা করছি রান্না করে দেখবেন, আমি নিশ্চিত ভাল লাগবে। আমি রান্নার আগেই বুঝতে পারছিলাম না, কেমন হবে কম্বিনেশন! রান্না এবং খেয়ে দেখে তাজ্জব হয়ে গেছি! বেশ মজাদার রান্না। যদিও রান্নায় কিছুটা সময় সাপেক্ষ এবং কঠিন।
শুভেচ্ছা থাকল। মাঝে মাঝে এসে দেখে যাবেন।
LikeLike
Your friend pic looks like a Munna bhai(Sanjay dotto)…thanks you and thanks your friend …
LikeLiked by 1 person
হা হা হা…। কি যে বলেন রেদোয়ান ভাই!
আমার বন্ধু নিশ্চয় খুশি হবেই! তবে বাস্তবে সে হিরোদের চেয়ে কম নয়!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
সহজ রান্না। আমি চেষ্টা করবো।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন। আপনার চেষ্টাই আমাদের নুতন নুতন রেসিপি দিতে উৎসাহ যোগাবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
সবই বুঝলাম। ঝিঙ্গে পাওয়াটাই মুশকিল! তবুও চেষ্টা করে দেখবো। ধন্যবাদ সাহাদাত ভাই!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ উদাসীন ভাই।
এখন ঢাকার বাজারে ঝিঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে। আপনি কি প্রবাসে আছেন! তা হলে ভিন্ন কথা।
যাই হোক, আশা করি একদিন রান্না করবেন, বেশ মজাদার রান্না। একবার খেলে সারা জীবন মনে থাকবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
হ্যাঁ, আমি তো প্রবাসী ভাই.. দেখি কাল বাজারে গিয়ে দেখব..ধন্যবাদ আপনাদের:-)
LikeLike
ধন্যবাদ উদাসীন ভাই।
ভাল থাকুন। আশা করি জম্বে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আপনার রেসিপি মত রাধলাম, অসাধারণ হয়েছে।
যে কোন পদ নতুন রান্নার ইছ্ছে হলেই আপনার ব্লগে ঢু মারি, ভালো থাকুন ..
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ latitude ভাই,
আপনারা আমাদের রেসিপি পছন্দ করেন বলেই আমরা আছি। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের পাথেয়।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
সাহাদত ভাই , মাছের ডিম রান্নার ভালো কোন রেসিপি দিলে খুব খুশি হতাম
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ latitude ভাই, মাছের ডিমের রান্নার একটা রেসিপি লাইনে আছে, দিবো দিবো করে দেয়া হচ্ছে না। আপনার কমেন্টে সেটা তাড়াতাড়ি করবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ল্যাটিচুড ভাই, আপনার জন্য মাছের ডিমের একটা রেসিপি হাজির করে ফেললাম। আশা করি সময় পেলে দেখে নেবেন। আরো একটা রান্না আসছে।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
LikeLike
মজার রেসিপি বোঝাই যাচ্ছে!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ আপা।
আসলেই এটা একটা মজাদার রান্না ছিল। আমি আর একবার রান্না করবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
অনেক ভালো লাগলো আপনাদের রান্না
LikeLiked by 1 person
অনেক ভালো লাগলো আপনাদের রান্না
LikeLiked by 1 person