রান্না করতে গেলেই চলে না! সেই রান্না কারা খাবে, কার কার জন্য সেটা ভাল হবে সেদিক চিন্তা করেও রান্না করতে হয়। সব ছেয়ে বেশী ত্যাগ করতে হয়, যিনি রান্না করেন তাকেই! রান্নাকারীর যদি ঝাল পছন্দ হয় এবং সেটা ভেবে তিনি রান্না করেন, দেখা যাবে খেতে বসে অনেকেই আর সেই খাবার খেতে পারছেন না। বিশেষ করে পরিবারে থাকা শিশু এবং বৃদ্ধদের কথা আগেই ভাবতে হবে। রান্নার একটা মাঝারি দিক আছে সেটা একজন রান্নাকারীকে প্রথম থেকেই ভাবতে হবে। যেহেতু প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা করে রান্না সম্ভব নয়, তাই যে কোন রান্নাই মাঝামাঝি করে রান্না উচিত, যাতে করে সবাই কিছুটা করে হলেও খেতে পারে। নিজের স্বভাব বা রুচি যেমনি অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়, তেমনি খাদ্য খাবার ব্যাপারেও তা করা উচিত নয়।
আমাদের দেশে মুসলিমদের গরুর গোসত খাবার অভ্যাস পুরানো। নানান ধর্মীয় উৎসবে, আনন্দে গরুর গোসত বেশ ঝাঁকিয়ে রান্না করা হয়। এ ছাড়া সুযোগ ও সামর্থ থাকলে প্রায় মুসলিম পরিবারে গরুর গোসত রান্না হয়। নানান প্রকারে, নানান ধরনে এই গরুর গোসত রান্না করা যায়, আমি আপনাদের নানা রকমের এই গরুর গোসত রান্না দেখিয়েছি। তবে যেনতেন করে এই গরুর গোসত রান্না করে দিলে শিশু এবং বৃদ্ধরা খেতে পারে না, এতে আরো নানান শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আজ আমি আপনাদের এমনি কম মশলাপাতি এবং মোলায়েম করে এই গরুর গোসত রান্না দেখাবো, স্পেশালি এই রান্না শিশুরা এবং বৃদ্ধরা খুব পছন্দ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। চলুন দেখে ফেলি, সাধারণ এবং সহজ, বাড়তি তেমন কিছুই নেই।
শুধু সময় একটু বেশি লাগবে, তাই হাতে সময় নিয়ে এই রান্না করবেন।
উপকরণঃ
– গরুর গোসতঃ ৭০০ গ্রাম (হাড় গোড় না নেয়াই ভাল, ক্যারোলীর গোসত হলে বেশ)
– পেঁয়াজ কুঁচিঃ হাফ কাপের কম
– রসুন বাটাঃ ১ টেবিল চামচ
– আদা বাটাঃ ১ টেবিল চামচ
– দারুচিনিঃ ২ সেমি, ২/৩ টুকরা
– এলাচিঃ ৩/৪ টা
– লাল মরিচ গুড়াঃ পরিমান মত (খুব কম)
– হলুদ গুড়াঃ হাফ চা চামচ
– জিরা গুড়াঃ এক চিমটির বেশী
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– লবন পরিমান মত
– তেলঃ হাফ কাপের কম
– পানি (পরিমান মত)
– দুটো মাঝারি পেঁয়াজ কুঁচি (বেরেস্তার জন্য)
প্রনালীঃ
তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুঁচি দিন। এবার সামান্য লবন যোগের বাকী সব মশলা দিয়ে ভাল করে ভেঁজে নিন। একটা ঘ্রান বের না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
এবার তিন কাপ পানি দিয়ে ঝোল বানিয়ে নিন।
ঝোলে ধুয়ে রাখা গোসতের টুকরা গুলো দিয়ে দিন (টুকরা ছোট করে কাটাই ভাল)
আরো এক কাপ পানি দিয়ে গোসত ডুবো ডুবো করে মাধ্যম আঁচে ঢাকনা দিয়ে রাখুন। মাঝে মাঝে দেখে ও নেড়ে দিতে পারেন। গোসত না মজলে আরো পানি দিতে পারেন। আপনাকে গোসত মজে নরম ও মোলায়েম হয়ে যাবার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এই সময়টাই সেরা। ঝোল শুকাতে থাকবে, আপনিও দেখতে থাকবেন। এভাবে গোসত রান্নায় সময় বেশি লাগে, মাধ্যম আঁচে আস্তে আস্তে রান্না হতে থাকবে।
হাতের কাছে কাঁচা মরিচ থাকলে দিয়ে দিন। গোসত না নরম হলে আরো পানি দিতে পারেন।
মোটামুটি ঝোল কমে, গোসত নরম ও মোলায়েম হয়ে এমন একটা পর্যায়ে এসে যাবেই।
এবার অন্য একটা কড়াইতে পেঁয়াজ কুঁচি ভেঁজে/বেরেস্তা বানিয়ে দিয়ে দিন। এবং ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। শিশু এবং বৃদ্ধদের এভাবে কম মশলা যোগে রান্না করে একবার পরিবেশন করে দেখুন। প্লিজ।
আমি নিজেও এখন আর তেমন গরুর গোসত রান্না খাই না, কিন্তু মাঝে মাঝে আমি নিজেই রান্না করি এবং আমার হাতের এই রান্না খেয়ে কে কি বলে তা লক্ষ করি। আমার রান্না টেষ্টার বুলেট (সে তো এখনো শিশু) এই রান্নার এতই প্রশংসা করে যে, আমি বেশ আনন্দ পাই। ভাবি, এই জীবনে রান্না শিখে কিছু একটা করছি। আমাকে দিয়ে আর কিছু না হউক, রান্নাতো হচ্ছে! এটাই বা কম কিসে!
সবাইকে শুভেচ্ছা।
Viya, shobai gorur gosto ranna korte pare na, shobar hate valo ranna hoy na. Amader eak von ache tar hater ranna
LikeLike
besh valo. Apner rannar chobi besh valo dekhache. thanks. from iPhone.
LikeLike
ধন্যবাদ জাভেদ ভাই।
LikeLike
হা জাভেদ ভাই। সবাই গরুর মাংস রান্না করতে জানেন না। হয়ত শক্ত, নয়ত ঝাল এমন কিছু কারবার অনেকের সময়েই ঘটে। আমি সাক্ষী আছি… হা হা হা…
LikeLike
Execllent.
LikeLike
ধন্যবাদ সাদ ভাই। আসলে ব্যাপারটা আমরা কয়জনে চিন্তা করি। রান্না সবার জন্য, সবাই যেন খেতে বসে প্রান ভরে খেতে পারে, সেই দিকে আমাদের সবার লক্ষ রাখা প্রয়োজন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আপনি বেশির ভাগ সময় ৭০০ বা ৭৫০ গ্রাম মাংস ই কেন রান্না করেন ভাইয়া?
LikeLike
হা হ হা হা,
টু দি পয়েন্টে কথা তুলে ফেলেছেন। আমি আসলে চার/পাঁচ জনের অনুপাতিক রান্না করি এবং সেটা এক বেলাতে পার করতে পারলেই ভাল। ধরে নেই ছোট সংসারে চারজন/পাঁচ জন খানেওয়ালা। যেমন টা আমরা!
সাশ্রয়ী চিন্তা ভাবনা আর কি! বাজার থেকে মাঝে মাঝে আমি দেড় কেজি মাংস কিনি! এক পিসে যা হয়! হা হা হা।
ছোট পরিবার, মধ্যবিত্ত বা প্রবাসী বা মেসে থাকা ভাই বোনদের জন্য এভাবেই চিন্তা করতে হয়।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
Balo laglo
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike