আজ বিশ্ব নারী দিবস। অনেকে মনে করেন কেন ঘটা করে বছরের একটা দিন পালন করা হবে। আমি মনে করি এই দিনটা পালন করা ঠিকই হচ্ছে। আমরা পুরুষেরা মুখে যত কথাই বলি না কেন, আমরা কি এখনো নারীদের তাদের পাওনা মর্যদা দিতে পারছি? আমার মনে হয় না। সত্য বললে হয়ত অনেকেই কষ্ট পাবেন, কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, এখনো আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলিত এবং নির্যাতিত, কি ধনী কি দরিদ্র পরিবারে। আমরা অনেক পুরুষ এখনো মুখোশ পরে আছি। কারনে অকারনে আমরা নারীদের সুযোগ দেই না, আত্যচার করে থাকি এবং এটাই বাস্তবতা। নারীদের মানুষ ভেবে চিন্তা করলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়।
নারীদের নিয়ে আজ এই দিনে অনেক কথা মনে পড়ছে। আমাদের সবার প্রথমত একটা ব্যাপার ভেবে দেখা দরকার, আমরা সবাই নারীর গর্ভ থেকে জন্মেছি। প্রতিটা মা/নারী মৃত্যু ঝুকি নিয়েই সন্তান জন্ম দেন, বছরের পর বছর সন্তান পেটে/বাইরে নিয়ে কষ্ট করে যান, বছরের পর বছর একজন সন্তানের দিকে খেয়াল রাখেন, খাইয়ে দিন, বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন। তবেই না আমরা বেড়ে উঠি এবং এক একজন বাহাদুর হিসাবে দুনিয়াতে আমাদের বাহাদুরি দেখাই! মা/নারী না থাকলে বিষয়টা ভেবেই কুল পাওয়া যেত না!
নারী তথা মা/স্ত্রী/বোনদের কয়েক হাজার কারনে আমাদের পুরুষদের সন্মান করতে হয়। নারী তথা মা/স্ত্রী/বোনরা আমাদের জন্য রান্না করেন নিজেরা কষ্ট করে, নিজের মাথার ঘাম পায়ে ফেলেন। এবং রান্নায় কি কষ্ট তা জানতে হলে একদিন রান্নাঘরে যেয়ে দেখতে পারেন। শুধু রান্নাঘরে যেয়ে তারা যে তরকারী কাটেন, কাটাকুটি করেন তা একটু করে দেখেন! কেমন লাগে এবং কতটুকু কষ্ট তা আশাকরি বুঝতে পারবেন। আমরা খেতে বসে স্বাদ না হলে কিংবা শাকসবজিতে সামান্য লবন কম হলে তাদের সাথে কি ব্যবহার করি তা আশা করি আর করবেন না।
আসুন আমরা নারীদের আরো আরো সন্মান করি, আরো আরো সুযোগ দেই, আরো আরো নারীদের কাজে সাহায্য করি। নেপোলিয়নের সেই কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, “আমায় একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি দেব।” কথা বললে অনেক বলা যায়, সেই দিকে আর না যাই, আমাদের সবার আরো ভাল হতে হবেই।
চলুন, আজ একটা সহজ রান্না আপনাদের দেখিয়ে দেই। যারা এখনো রান্নাঘরে যাচ্ছেন না এটা তাদের জন্যই। অন্তত আজ এই দিনে আপনি নিজে রান্না ঘরে যান এবং প্রিয়জনের জন্য রান্না করে নিয়ে নিজের ভালবাসা প্রমান করুন। সোনাদানাতো অনেক দিয়েছেন, এবার নিজে রান্না করে পরিজনদের খাইয়ে দেখুন না।
আর দেরী কি, চলুন দেখে ফেলি। রেডিমেট মাশরুম সুপ! হা হা হা, এটা শুধু আপনাদের রান্নায় আগ্রহী করার জন্যই।
উপকরণঃ
– এক প্যাকেট সুপ পাউডার (এক প্যাকেটে অনায়েশে তিন বাটি হবেই)
– কাঁচা মরিচ কুঁচি (সামান্য, ঝাল বুঝে)
– একটা লেবু পাতা (না থাকলে নাই, আমাদের উঠানে আছে বলে আমরা চাইলেই দিতে পারি)
– এক চামচ টমেটো সস
– একটা ডিম
– পরিমান মত লবন
– পরিমান মত পানি
(আপনারা চাইলে আরো অনেক আইটেম দিয়ে এই সুপের স্বাদ ও মূল্য বাড়িয়ে নিতে পারেন)
প্রনালীঃ
এক সময় বাংলাদেশীরা চা খেত না, আস্তে আস্তে ফ্রী চা পান করাতে করাতে এখন প্রায় সব বাংলাদেশীরাই চা পান করে। এক সময় বাংলাদেশীরা নুডুলস খেত না, এখন যে কোন দোকানেই নুডুলস পাওয়া যায়, এমন পরিবার নেই যারা এখন নুডুলস খান না, সকালের নাস্তা কিংবা বিকালের নাস্তায় চলছেই, শিশুদের টিফিনে। প্যাকেট সুপের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়, তবে আমার মনে হয় এখনো বাংলাদেশীরা ঘরে সুপ খাওয়া শিখে নাই, শিখছে মাত্র! অভস্থ হতে আর কিছুদিন লাগবে! হা হা হা… সুপ শুধু চাইনিজরা খায় এটা হয়ত একদিন দুনিয়া থেকে মুছে যাবে!
একটা পাত্রে সুপের পাউডার নিন। (এটা আমাদের চা বানাবার পাত্র, হাতের কাছে যা পাওয়া গেছে!)
বাটি মেপে পানি দিন। হাল্কা আছে গরম করতে থাকুন। চুলা ছেড়ে যাবেন না, নাড়াতেই থাকুন।
এবার এক চা চামচ টমেটো সস দিন এবং নাড়ুন।
এবং নাড়ুন। কাঁচা মরিচ কুঁচি এবং লেবু পাতা দিন।
ডিমটা ফেটে নিয়ে এভাবে ঢালুন এবং নাড়ুন।
এবার ফাইন্যাল চেক করুন, সামান্য লবন লাগতে পারে, দিন!
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। মাশরুম সুপ।
মুরুব্বীরা যদি একটু বেশি ঝাল চান তবে টবাস্কো আছে!
উপরের এই সুপ রান্নার কাজটা খুব ছোট এবং সাধারন, আপনাকে আমি সচিত্র দেখিয়ে দিলাম। একবার নিজে করেই দেখুন না! তার পড় দেখুন! প্রতিদিন এই রকম হাজারো কাজ আমাদের নারীরা (মা/স্ত্রী/বোন/মেয়ে) আমাদের জন্য করে দেন, কোন কিছুর বিনিময় আশা না করেই।
প্রতিদিন তাদের আমাদের সন্মান জানানো উচিত, সেটা আমরা পারছি না, একদিন ঘটা করে জানালে দোষ কি।
প্রিয় নারীরা, আমরা জানি আপনারা আপনাদের সারা জীবন আমাদের জন্যই দান করে যান, বিনিময়ে কিছু না চেয়েই। আপনাদের এই আত্মত্যাগের জন্য কোন কিছু বিনিময় হয় না, হতে পারে না। শুধু আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের ক্ষমা করুন। এ ছাড়া আর কি বলার আছে!
হুম ।বানাবো ।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন,
মাঝে আঝে পরিবারের বিকালের নাস্তায় এমন সুপ রান্না করা যেতেই পারে। আশা করি সবাই পছন্দ করবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Great description. Amader sobar baparta bujte hobe. Thanks for remembering.
LikeLike
ধন্যবাদ জাভেদ ভাই। শুভেচ্ছা।
LikeLike
সাহাদাত ভাই, এখন কিন্তু প্রায় ঘরেই এই ধরনের সুপ রান্না হচ্ছে, আমরা এই ধরনের সুপ খেতে অভ্যস্থ হয়ে পড়ছি। আপনাকে ধন্যবাদ, আপনি বিষয়টা সামনে এনেছেন। ভাল লাগল।
LikeLike
ধন্যবাদ তালুকদার ভাই। শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
মাশরুম স্যুপ’এ মাশরুমের ব্যাবহার না দেখে অবাক হলাম।
LikeLike
ধন্যবাদ শাখাওয়াত ভাই, মাশরুম প্যাকেটেই ছিল। প্রথম ছবিটা দেখলে ব্যাপারটা বুঝা যায়। আমি লেখাতে এটা উল্লেখ করি নাই, এই ভেবে যে, মাশরুম সুপ পাউডারেই উল্লেখ আছে বলে। উল্লেখ করলে ভাল হত। তবে কিছু মাশরুম কেটে দিলে ভাল হত।
এখন দোকানে এই ধরনের সুপ নানান ফ্লেবারে পাওয়া যায়, মাশরুম বা চিকেন যাই বলেন না কেন তা প্রসেস করে দেয়া থাকে।
আগামীতে সব কিছু ঘরে বানিয়ে দেখিয়ে দেব। এই রেসিপির উদ্দেশ্য ছিল, কিছু একটা করা মাত্র।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
shawkat vi k bolchi mushroom ache soup powder er sathe packet valo kore dekhun.ami age pri banatam ekhon r hoyna,tobe kabar somy ektu blackpepper dile aro tasty hoi,
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। হা, আমি প্যাকেটের গায়ের কথাটা লিখে দিলে ভাল করতাম। আমারি ভুল হয়েছে। আপনাকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, আপনি আমার আগে উত্তর দিয়েছেন। হা, এখন প্যাকেটে নানা স্বাদের, নানান ঘ্রানের এমন অনেক সুপ পাউডার পাওয়া যাচ্ছে।
তবুও যদি আলাদা করে মাশরুম কেটে দিতে পারতাম তবে আরো ভাল হত।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমার কাছে দারুণ লাগে মাশরুম স্যুপ। ইদানীং বাইরে কোথাও খেতে গেলে প্রথম পছন্দ থাকে এটাই। 🙂
আজ এর প্রস্তুত প্রণালীটাও জানা হলো। সবমিলে দারুণ…
LikeLike
হা হা হা…। হোটেলে কিন্তু এইভাবে তৈরী করে না। তারা নিজেরা নানান ইনগ্রেডিয়ান্স দিয়ে এই ধরনের সুপ রান্না করে থাকে।
বাসায় সর্টকাট আমরা এভাবে কাজ চালিয়ে দিতে পারি। খরচও কম। এই ধরনের এক প্যাকেট দিয়ে মোটামুটি চার জনের জন্য চার বাটি রান্না করা যেতে পারে। ৩৫ টাকা করে পার প্যাকেট, সাথে একটা ডিম এবং অন্যান্য।
ধন্যবাদ জামি ভায়া। আশা করি, আপনি রান্না করবেন।
LikeLike
নারীরা নিজেরাই সম্মান দিতে জানে না নিজেদের প্রচুর ক্ষেত্রে,কি আর বলব।কিন্তু অন্য যারা সম্মান দিবে তা যে মানুষকেই হোক না কেন,অবশ্যই সম্মানীয়।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
LikeLike
দেখা যাচ্ছে আমি আপনার প্রিয় নারীদের মধ্যে গণ্য হব না।কারণ আমি স্বভাবতই যথেষ্ট স্বার্থপর এবং ভাল ব্যবহার ইত্যাদির প্রত্যাশী।
তাহলে অ-বিনিময় প্রত্যাশী নারীরা আমার সম্মান প্রাপ্য তাই না?আমি নারীদেরই বেশি দেখেছি এবং এখনো এরকম নারী চোখে পড়েনি ।কিন্তু সামনে পেলে অবশ্যই শ্রদ্ধা মুগ্ধ হব আশা রাখি।
মাশরুম কখনো খাইনি,ছবিগুলি ভাল্লাগছে।খাব আশা করি।
LikeLike
ধন্যবাদ সিষ্টার।
LikeLike
হা হা হা, নিজকে চিনলে এই দুনিয়াতে আর কিছুর দরকার নাই। আমি আমাকে এখনো চিনতে পারি নাই।
ধন্যবাদ প্রিয় ছোট বোন।
LikeLike
আমি আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী। খাবার-দাবারের ক্ষেত্রে আমার এই মনোভাবে আমি আরও বেশি কড়াকড়ি। আপনার তৈরি করা স্যুপ দেখতে অসাধারণ হয়েছে। খেতে নিশ্চয় আরও অসাধারণ হবে।
LikeLike
ধন্যবাদ সৈকত ভায়া।
হা, বটেই। রান্না দেখতে ভাল লাগাও একটা ব্যাপার। মশলা ব্যবহারে তাই সর্তক হতে হয়।
শুভেচ্ছা নিন। আশা করি মাঝে মাঝে আমাদের দেখে যাবেন।
LikeLike
ধন্যবাদ রান্নাতো ভাই। আপনার মত করে সব পুরুষেরাই যদি নারীদের এসব কাজের মূল্যায়ন করতো!
মাশরুমে অনেকের এলার্জী হয়। তাই যাদের খাদ্যে এলার্জী আছে তারা বুঝে খাবেন।
LikeLike
ধন্যবাদ রান্নাতো বোন। অনেক দিন পর দেখলাম। ছেলে ও নুতন ল্যাবটব নিয়ে বুঝতে পারছি! হা হা হা…।
ভাগিনা কেমন আছে?
আমার চেষ্টা আমি চালিয়ে যাব, আশা করি সমাজ একদিন পরিবর্তন হবেই। কিছু পুরুষতো আমরা পেয়েই যাচ্ছি, যারা এখন এই বিষয় নিয়ে পজেটিভ ভাবছেন। হবে একদিন হবেই।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
গত দু’দিন নিজে নিজেই মাশরুম দিয়ে আলুর চপ করেছি। পেয়াজের বেরেস্তা করার সময় মাশরুম কুচি কি যে মজা লাগে !!!
আপনার এ পোস্ট দেখে আগামীকালই মাশরুমের স্যুপ খেতে ইচ্ছে করছে।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
মাশরুম সব দোকানে/বাজারে পাওয়া যায় না বলে ইচ্ছা থাকলেও কিনতে পারি না।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
Sujir juri nimki to lal holo na.viya ki
Krle lal hobe. Baking powder aktu vase diache.ans ta Dile kub kusi hobo.
LikeLike
ধন্যবাদ বোন,
দোকানে মনে হয় রঙ দেয়। আসলে এটা সোনালী রঙ্গেই ভাল দেখায়।
আগুন একটু বাড়িয়ে দিবেন, সোডা যত টুকু করবে তাই ভাল।
শুভেচ্ছা।
LikeLike