গ্যালারি

রেসিপিঃ টমেটো চিংড়ি চাটনী (কিছু মনের দুঃখের কথা সহ)


টমেটো চিংড়ি  চাটনি রান্না করতে টমেটো দরকার। এখন বাংলাদেশে পুরাই টমেটো সিজন। কিন্তু আপনারা বিশ্বাস করবেন কি না বলতে পারছি না। বাজারে যেয়ে টমেটো কিনতে সাহস হয় না। কারন শুনেছি বাংলাদেশে তথা ঢাকায় সব চেয়ে বেশি ভেজাল বা কেমিক্যাল মিশানো হয় টমেটোতে। ক্ষেত থেকে কাঁচা টমেটো নিয়ে তাতে নাকি কি কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হয়। টমেটোর এই লাল রং আমাদের ছোট বেলায় দেখে আসা রং এর সাথে মিলে না। কি দুঃখজনক ব্যাপার যে, ভেজারকারীরা এই সাধারণ টমেটোতেও ভেজাল মিশিয়ে মানুষের জীবনে মৃত্যুর ঝুকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় দেশে সরকার নাই! সরকার থাকলে (বিচার থাকলে) এমন কি করে হতে পারে! আমরা বাজার থেকে বিষ কিনে এনে কি আমাদের শিশুদের খাওয়াচ্ছি, নিজেরা খাচ্ছি, এ কি করে হয়! দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যদি এই বিষয়ে একটা কঠোর হুশিয়ারিও দিয়ে দেয় তা হলে এই সব ভেজাল মানুষেরা ভয় পেত। এখন তাদের মনে ভয় নেই, মিশা যত পারিস এবং টাকা কামা! কি কষ্টের কথা। আমাদের সাধারন মানুষের আর কোন আশ্রয় থাকে না।

শুনেছি আমাদের প্রধানমন্ত্রী নাকি তার পানি টুকুও দেশের বাইরে থেকে আনিয়ে খান। তিনি শাক সবজি দুনিয়ার কোন দেশ থেকে আনিয়ে খান তা আমি জানি না। তবে যদি তিনি একবার সাধারন মানুষের দিকে নজর দিতেন! দুঃখ লাগে তার জন্য, আফসোস হয়, তিনি মানুষের ভালবাসা পেলেন না। প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি গনমানুষের ভালবাসা থেকে আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। এই সকল ছোট ছোট কাজ করলেও তিনি আগামী পাঁচ বছরের জন্য টিকে যেতেন, আমি নিশ্চিত। পদ্মা সেতু হয় নাই তো কি! হা হা হা…

সে যাই হোক, আমাদের সাধারন মানুষের মনে অনেক কষ্ট। আমাদের জন্য কেহ কিছু করল না। আমরা তো তাদের কাছে টাকা চাই না, আমরা চাই একটা সুষ্টু সুন্দর ভালবাসার দেশ। যেখানে আমরা মুক্ত পাখির মত বিচরন করব। যেখানে কেহ আমাদের খাবারে ভেজাল মিশাবে না, খাবার খেয়ে আমাদের ক্যান্সারে মরতে হবে না। আমাদের বলতে হবে না, খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

কেন আমরা বিশুদ্ধ খাবার খেতে পারব না, কেন বিশুদ্ধ টেমেটো দেখতে পারব না।

এই সব চিন্তা করলে মাথায় রক্ত উঠে আসে। মনে হয় কিছু মানুষকে (যাদের সামান্য ভাল চিন্তায় একটা জাতি হয়ে উঠতে পারে সুন্দর, কিন্তু তারা তা করছে না) পিটিয়ে তক্ততা করে ফেলি। আর কথা না বলে  চলুন রান্না দেখি।

উপকরনঃ
– কয়েকটা মাঝারি পাকা টমেটো (তিনি জনের জন্য রান্না)
– হাফ কাপ ছোট চিংড়ি মাছ
– পেঁয়াজ কুঁচিঃ হাফ কাপের চেয়ে কম
– হলুদ গুড়াঃ হাফ চা চামচ
– রসুন বাটা বা পেষ্টঃ ১ চা চামচ
– মরিচ গুড়াঃ এক চা চামচ (ঝাল বুঝে)
– কাঁচা মরিচঃ ৩/৪ টা (ঝাল বুঝে)
– চিনিঃ এক চিমটির বেশী
– ধনিয়া পাতাঃ পরিমান মত
– লবনঃ পরিমান মত
– তেলঃ পরিমান মত
– পানিঃ হাফ কাপ

প্রনালীঃ

ইচ্ছা মত টমেটো কেটে জমিয়ে রাখুন।


কড়াইতে তেল গরম করে তাতে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ এবং রসুন ভাজুন। সামান্য একটু পানি দিয়ে নিতে পারেন।


এবার হলুদ ও মরিচ গুড়া দিন।


ঝোল হয়ে তেল উঠে গেলে গুড়া চিংড়ি গুলো দিয়ে দিন।


ভাল করে মিশিয়ে নিন। কাঁচা মরিচ একটা দিয়ে দিতে পারেন।


এবার টেমেটো দিয়ে দিন।


হাফ কাপ পানি দিয়ে মিনিট ১৫ জন্য ঢেকে রাখুন। টেমেটো গলে নরম হয়ে যাবে।


ঠিক এমন হয়ে গেলে দুই চিমটি চিনি দিয়ে দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন।


ঠিক এমন একটা চমৎকার অবস্থায় এসে যাবে। ফাইন্যাল লবন দেখুন।


ধনিয়া পাতা বাসায় থাকলে দিয়ে দিন, না থাকলে নাই। তবে এখন বাজারে ধনিয়া পাতা খুব পাওয়া যাচ্ছে!


ব্যস টমেটো চিংড়ি চাটনী প্রস্তুত। পরিবেশন করতে পারেন। খাবার শুরুটা যদি এই চাটনী দিয়ে হয় তবে মজাই মজা।


গরম ভাত, মাছ ভাজি, পালিং শাক ভাজি এবং টেমেটো চাটনী! একজন বাংলাদেশী বাঙ্গালীর আর কি চাই! এত কম কিছুতেই আমাদের দেশের প্রায় সব মানুষই যেখানে সুখী, সেখানে কেন আমরা একটা ভেজাল মুক্ত দেশ পাব না! কেন আমাদের সরকার আমাদের একটা সাধারন জীবন দিতে পারবে না! কেন অন্যায়ের বিচার হবে না? কেন আমরা সাধারন সুখে মরতে পারব না! কেন আমাদের ক্যান্সার, আলসার, কিডনি ফেল, হার্ট ফেল, ষ্টোক সহ পাইলস হবে!

ভেজাল খাদ্য আমাদের দিনের পর দিন শেষ করে দিচ্ছে কেন?

11 responses to “রেসিপিঃ টমেটো চিংড়ি চাটনী (কিছু মনের দুঃখের কথা সহ)

  1. বছর দুয়েক ট্যোমাটো খাওয়া বাদ দিয়ে এ বছর মনের সাধ মিটিয়ে খেতে পারছি।
    কারন স্থানীয় কৃষকেরা কাচা ট্যোমেটো ফেরী করে বিক্রি করছে। আর সেই ট্যোমেটো কিনে রান্না ঘরে রেখে দিলেই ২/৩ দিনে পেঁকে যায়। আর আমি মনের আনন্দে সালাদ খাই। তরকারীতে ট্যোমেটো দেই, কিন্তু আমার কেনো যেনো ভালো লাগেনা। তাই সালাদই ভরসা।

    ভাই কি আলু দেখাইলেন! আমারে কুরিয়ারে ২কেজি হলেও পাঠান। অপারেশন টেবিলে উঠবার আগে যদি খেতে পারি। :p

    Like

    • ধন্যবাদ বোন, ইস যদি এমন ক্ষেতের টমেটো খেতে পারতাম। আমার কাছেও সালাদ ভাল লাগে। আমিও টমেটো কিনতে চাই না, আমার ব্যাটারী মাঝে মাঝে কিনে ফেলেন, এটা তার ফেবারেট বলে!

      দাঁড়ান আজ বাজারে যাব, যদি পেয়ে যাই তবে কুরিয়ার হয়ে যাবই।

      আশা ও দোয়া করছি, আপনি ভাল হয়ে যাবেন।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  2. Not only ur cooking …ur writing is great too….what’s going on in Bangladesh…we watch news every day…….is our leaders r Alien from other world ? if our leaders think like u !!!!!!!!

    Like

  3. আপনার রেসিপিটা ভালো লেগেছে তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে উপরের লেখাগুলো।

    Like

    • ধন্যবাদ বোন।
      আসলে আমি পৃথিবীর অনেক দেশেই গিয়েছি। আমি দেখেছি কি করে একটা লোক সারা দেশের মানুষকে ভাল করে ফেলেছে। আমার সরকার প্রধানদের কথা শুনলে শরীর পুড়ে যায়। কি কথা বলার ডং! যেন আমরা তাদের নির্বাচিত করে অন্যায় করে ফেলেছি। তারা আমাদের দয়া করছেন! আসলে ক্ষমতায় গিয়ে ওরা এটা ভুলে যাচ্ছে যে, আমরাই তাদের দয়া করেছি।

      কত সুন্দর আমাদের এই দেশ, শুধু চাইলেই সব কিছু নিয়মতান্ত্রিক হয়ে উঠত। আমাদের কিছুর অভাব নেই, আমাদের মানুষ কমেই তুষ্ট কিন্তু কাজে ভাল। কিন্তু কাজের সেই জায়গা নেই। যাদের এই জায়গা করে দেয়ার কথা তারাই নিজেরা চুরি নিয়ে ব্যস্ত!

      পাকা টমেটো আজকাল বাজারে দেখলে অনেকেই আঁতকে উঠেন! কারন আমরা সবাই জানি, কিন্ত্য আমাদের উপায় নেই। কে ভাল হবে, পিতা না সন্তান!

      ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

      Like

  4. Ischha korchhe chair tene boshe pori.

    Like

  5. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]