আজকে আমরা বুক ফুলিয়ে কথা বলি, হেঁটে বেড়াই, বাংলায় গান গাই, আরো কত কি করি। পৃথিবীর বুকে আমাদের ছোট মানচিত্র জ্বলজ্বল করে, আমরা গর্ব করে বলি, আমরা স্বাধীন। বলি বাংলাদেশ আমার প্রিয় দেশ, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি। হাঁ, এই সব কিছুই সম্ভব হয়েছে আমাদের স্বাধীনতাকামী দামাল মুক্তিসেনাদের জন্য। ১৯৭১ সালে তারা প্রানের বিনিময়ে যুদ্ব করে আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তারাই আমাদের জাতির সেরা শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের এই অসীম সাহসিকতা/আত্মত্যাগের জন্য আজ আমরা স্বাধীন। স্বাধীনভাবে লিখে যেতে পারি বাংলায়…।
স্বাধীনতার আজ এত বছর পরো এই বীর সেনানীদের জন্য আমরা কিছুই করতে পারলাম না। এমন কি ন্যায সন্মানটুকুও আমরা তাদের দিতে পারলাম না। আমি যখন দেখি একজন বীর মুক্তিযোদ্বা এখনো দারিদ্রতার মধ্যে জীবনযাপন করেন, আমি তখন চরম দুঃখ পাই। দেশকে ভালবেসে যিনি চরম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, যদি মৃত্যুকে ভালবেসে যুদ্বে যাপিয়ে পড়েছিলেন তিনি যদি সারা জীবনে আর কিছু নাও করে থাকেন তবুও আমি মনে করি তিনি যাই হোক দারিদ্র থাকতে পারেন না। সরকারের কত টাকা চুরি হয়ে যায়, কত টাকা অপচয় হয়, কত হীন কাজে, কত বেহিসাবি বিদেশ ভ্রমনে কত কি অপচয়! শুধু এই সোনালী সন্তানদের বেলায়ই যেন আমাদের হাত উঠে না।
এটা কিছুতেই হতে পারে না। একজন মুক্তিযোদ্বাও না খেয়ে কিংবা অভাবে থাকতে পারে না। দেশ তাকে আপন করে নিতেই হবে। দেশ তাকে বুকে টেনে নিতেই হবে। জীবনের একটা সময়ে যিনি নিজকে প্রমান করে ফেলেছেন, তাকে ভাল না বেসে কি পারা যায়।
আমার খুব ইচ্ছা হয় যদি একদিন এই সোনালী সন্তানদের সাথে বসে একবেলা খেতে পারতাম, নিজ হাতে রান্না করে তাদের একবেলা খাওয়াতে পারতাম। এমন বেলায় যদি তাদের জন্য বোয়াল মাছের ঝোল রান্না করতে পারতাম।
(আজকের এই শিশুর হাতে এই বোয়াল মাছ, আমি মনে করি তাদের জন্যই।)
তাদের জন্য আমাদের ভালবাসা চিরদিন, চিরঅম্লান।
উপকরনঃ
– কয়েক টুকরা বোয়াল মাছ এবং লেজ (আমরা চারটে টুকরা রান্না করেছিলাম)
– হাফ চা চামচের বেশী গুড়া হলুদ
– হাফ চামচ লাল গুড়া মরিচ (ঝাল বুঝে)
– এক চিমটি জিরা গুড়া
– কয়েকটা পেঁয়াজ কুঁচি
– এক চামচ রসুন পেষ্ট/ বাটা
– পরিমান মত তেল
– পরিমান মত লবন/ পানি
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– সামান্য কাঁচা ধনিয়া পাতা
(সব উপকরণই হাতের কাছে রান্নাঘরে আছে। প্রায় প্রতিটা রান্নাঘরেই এই সকল মশলাপাতি আছে। কোথায়ও যেতে হবে না। হা হা হা… অফিস ফেরার পথে শুধু বোয়াল মাছ কিনে বাসায় ফিরুন)
প্রনালীঃ
সামান্য লবন যোগে বোয়াল মাছ হালকা তেলে সামান্য ভেজে নিন। (এই ভাজি মাছকে একটু শক্ত করে দেয়। তবে এই ধরনের নরম মাছ ভাজিতে সাবধান থাকতে হবে। কড়াইয়ে যেন লেগে না যায়)
তেল গরম করে সামান্য লবন যোগে পেয়াক কুঁচি ভেজে নিন।
উল্লেখিত মশলাপাতি দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন।
এবার দুইকাপ পানি দিয়ে ঝোল বানিয়ে নিন। এই ঝোল যত স্বাদ তরকারীর স্বাদ ততই বেড়ে যাবে। এই ঝোল রান্নায় তাড়াহুড়া না করাই ভাল।
এবার ঝোলে ভেজে রাখা মাছ গুলো দিয়ে দিন।
ঢাকনা দিয়ে মিনিট বিশেষ হালকা আঁচে জ্বাল দিন।
কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন। ঝোল অনেকটা এমন দাঁড়িয়ে যাবে।
ফাইন্যাল লবন দেখুন এবং কাঁচা ধনিয়া পাতার কুঁচি ছিটিয়ে দিন।
ব্যস হয়ে গেল বোয়াল মাছের ঝোল, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
গরম ভাতের সাথে একবার এই বোয়াল মাছের ঝোল খেয়েই দেখুন। আশা করি ভাল লাগবেই।
বিজয়ের এই দিনে ক্ষমতাসীনদের চোখ খুলে যাক, দেশ এগিয়ে চলুক, দারিদ্রতা মুক্ত এক সুন্দর দেশ গড়ে উঠুক। মুক্তিসেনারা দেশ নিয়ে গর্ব করুক।
আর কত দিন আমার ভাস্তেকে মডেল বানাবেন? এখন নিজেই মডেল হবেন। :p
বোয়াল মাছ সিলেটের মানুষের হেব্বী প্রিয়। তারা বলেন গুয়াল। 😀
আমার বাসায় চলেনা।
LikeLike
হা হা হা… গুয়াল মাছ!
আমার যা চেহারা, তাতে আবার মডেল। আসলে আপা, আমি ওকে ছবিতে ধরে রাখতে চাই। মাছ ছাড়া ছবি উঠাতে বললে যেভাবে ভেংচি দেয় তা না দেখলে বুঝবেন না। এক্মাত্র মাছের সাথে ছবি উঠাতে বললে রাজী। ফাঁকে সে মন দিয়ে মাছ ঘেঁটে নেয়!
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
LikeLike
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই পোস্ট দেওয়াতে আপনাকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাঁদের কথা কেউ তেমন করে ভাবেনি কোনদিন। অবহেলিতই রয়ে গেছেন তাঁরা। মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া রাষ্ট্রীয় সুবিধা অনেক ক্ষেত্রেই ভুঁয়া মুক্তিযোদ্ধারা নিয়ে গেছে, আসলেরা রয়ে গেছেন বঞ্চিত।
বোয়াল মাছ সঠিক ভাবে রান্না না হলে কেমন যেন গন্ধ লাগে। তাই আমি সাধারণত এ মাছ এড়িয়ে চলি। তবে কাঁটা বাছার ঝামেলা না থাকায় অনেকেই এ মাছের দারুন ভক্ত।
আজকের রান্না যে কোন মাছের জন্যই বেশ চলে বলে মনে হয়।
LikeLike
ধন্যবাদ হুদা ভাই।
হা, নকলের ভীড়ে আসল মুক্তিযোদ্বারা হারিয়ে যেতে বসেছে। এটা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় দেখছি না। একজন দেশ প্রেমিক নেতার খুব প্রয়োজন।
আমার দুই চাচা সরাসরি যুদ্ব করেছেন তাদের একজন মারা গেছেন অন্যজন আছেন, তিনি সরকারী কোন হেল্প নেন না, অভাবেই দিন কাটাচ্ছেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
অধিকাংশ রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে এখন মুক্তিযোদ্ধার সকল সুবিধা ভোগ করছে। আসল হারিয়ে গেছে ভুয়ার আড়ালে।
LikeLike
এই বিষয় নিয়ে আমার লিখতে ইচ্ছা হয়। নকল মুক্তিযোদ্বাদের বিচারের মুখামুখি করতেই হবে এবং যারা এই সুযোগ নিয়েছে তাদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিতে হবেই।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
তারাই তো সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং সব সময় ক্ষমতার কাছাকাছি থাকে। তাদের উপরেই ন্যাস্ত বিচারের ভার। বিচার কে করবে কার!!
LikeLike
হা হুদা ভাই, আমাদের এখানে বেড়াই সব খেয়ে শেষ করে ফেলে! ছাগল গরুর দরকার নেই…।
LikeLike
বেড়াই যদি খেত খায়, তা হলে ফসল হবে কেমনে?
LikeLike
একজন মন্ত্রী যেখানে মিথ্যা বলেন সেখানে আর কি বলার থাকে! বেড়ায় খেত খাবে না তো কি করবে!
LikeLike
ha ha ha. brother vatijake dakhe balo lagoon.
apner idea chomotkar.
LikeLike
ধন্যবাদ সিষ্টার। আসলে ওকে ছবিতে ধরে রাখার একটা চেষ্টাও বটে।
LikeLike
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চিরস্মরণীয় যোদ্ধাদের জন্য আপনার এ রান্না প্রশংসনীয়। এজন্য স্বাগতম।
সত্যি বলতে কি, আমি এর আগে কখনো বোয়াল মাছ দেখিনি(!)। দেখে যে আনন্দ লেগেছে তাতে বলব, ‘দেখেনু অর্ধভোজনং’।
LikeLike
ধন্যবাদ বাঁধন ভায়া, আপনার চমৎকার কমেন্ট ভাল লাগল। কিন্তু বোয়াল মাছ দেখেন নাই বলে যা লিখেছেন তাতে মনে হচ্ছে আপনি কখনো বাজারে যান নাই! কথা হচ্ছে, এখন থেকে বাজার করা শুরু করুন, বাজারে না গেলে পরে কষ্ট পাবেন।
বোয়াল মাছ খেতে বেশ ভাল যদি রান্না ভাল হয়।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
বাজারে গিয়েছি তবে খুব কম। আর এদিককার বাজারে বোয়াল মাছ আসেনা খুব একটা। আপনাকেও ধন্যবাদ।
LikeLike
ধন্যবাদ বাঁধন ভায়া। বাজারে যাবেন, এতে ভাল লাগবে।
LikeLike
আপনাকেও ধন্যবাদ।
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ বোয়াল মাছ ভাজা (আখাউড়া বিলের বোয়াল) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
ধন্যবাদ আপনাকে আমার রান্না কর টা আনেক সহজ হয়ে গেল ধন্যবাদ ভাই
LikeLike