গ্যালারি

রেসিপিঃ কচুর ছড়া/মুখি ইলিশ (না খেলে আর খেলেন কি!)


ইলিশ মাছের সাথে যে কোন তরকারী চলে। একটা ছোট ইলিশ কিনে গত পরশু দুটো তরকারী রান্না করেছিলাম। দুটোই বেশ মজার হয়েছিল। গতকাল কাঁচা কলার রেসিপিটা দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম আজ এই রেসিপিটা দিয়ে দিব। হা, এটা সেই রেসিপি – কচুর চড়া/মুখি ইলিশ। খুব সহজ এবং সাধারন, আশা করি রান্না করে দেখবেন।

চলুন, কথা না বলে রেসিপি দেখে ফেলি। আমি এই কচুর চড়া পোলাউ দিয়ে খেয়েছিলাম! হা হা হা, ভাবছেন… না ভাবাভাবির সময় নেই। যে যা খেয়ে মজা পায় তাকে তাই খেতে দিন! দুনিয়ার কোন খাবারই মন্দ নয়।

উপকরনঃ
– হাফ কেজি কচুর ছড়া (আঞ্চলিক ভাবে কি বলে জানি না!)
– কয়েক টুকরা ইলিশ মাছ ও ইলিশ মাছের কানশা (ইলিশ মাছের মাথাও হেভী চলে)
– হাফ চা চামচ গুড়া হলুদ
– এক চিমটি লাল গুড়া মরিচ (ঝাল বুঝে)
– কয়েকটা পেঁয়াজ কুঁচি
– এক চামচ রসুন পেষ্ট/ বাটা
– এক চামচ আদা পেষ্ট/ বাটা
– পরিমান মত তেল
– পরিমান মত লবন
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– সামান্য কাঁচা ধনিয়া পাতা

(সব উপকরণই হাতের কাছে রান্নাঘরে আছে। প্রায় প্রতিটা রান্নাঘরেই এই সকল মশলাপাতি আছে। কোথায়ও যেতে হবে না। হা হা হা… অফিস ফেরার পথে শুধু ইলিশ মাছ এবং কচুর চড়া কিনে বাসায় ফিরুন এবং ফ্রেস হয়ে রান্না করতে লেগে যান।)

প্রনালীঃ

কচুর চড়া লবন পানিতে ভাপিয়ে নিন (হালকা সিদ্ব করে নিন)


তেলে ইলিশ মাছ ভেজে নিন। হালকা ভাজি, এটা করা হয় শুধু মাত্র মাছ যেন ভেঙ্গে না যায় এবং স্বাদও বেড়ে যায়।  (এখানে কয়েক টুকরা ব্যবহার হয়েছে, অন্য গুলো দিয়ে কাঁচা কলা ইলিশ রান্না করা হয়েছিল)


তেলে লবন যোগে পেঁয়াজ কুঁচি ভাজুন, কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন।


এবার মশলা গুলো দিয়ে দিন। ভাল করে মিশিয়ে কষিয়ে নিন এবং দেড় কাপ পানি দিয়ে ঝোল বানিয়ে নিন। এই ঝোল ভাল হলেই রান্না চমৎকার এবং সুদ্বাদু হবে।


এবার ভাপিয়ে নিয়ে চড়া গুলো ঝোলে দিয়ে দিন।


ইলিশ মাছ গুলো দিয়ে দিন।


মিনিট বিশেক হালকা আঁচে ঢাকনা দিয়ে টিভি দেখে আসতে পারেন।


মাঝে এসে দেখে যেতে পারেন। ঝোল কেমন রাখবেন তা আপনার ইচ্ছা।


এবার ফাইন্যাল লবন দেখুন। লাগলে দিন, না হলে ওকে বলুন।


ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


কে খাবে না বলুন। চড়াতে নাকি প্রচুর ক্যালশিয়াম এবং আয়রন! আর বয়স বাড়লে দেহে চাই আরো ক্যালশিয়াম এবং আয়রন! হা হা হা… আসুন, বসে পড়ি।


আমি পোলাউয়ের সাথে এই চড়া তরকারী খেয়েছিলাম! আমার কাছে অসাধারণ ভাল লেগেছিল। আর এই দিনের পোলাউ রান্নাটাও ছিল আমার রান্না। আমার টেষ্টার বুলেটের জন্য এক্সট্রা আরো রান্না করতে হয়েছিল “মোরগের শাহী রোষ্ট”! কিন্তু খেতে বসে সেও এই ইলিশ চড়া রান্না খেয়ে তারিফ করেছিল।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন।

23 responses to “রেসিপিঃ কচুর ছড়া/মুখি ইলিশ (না খেলে আর খেলেন কি!)

  1. কচুর চড়া নয়, ছড়া! উফ! বানান ভুল করাতে আমাকেও হারিয়ে দিলেন। :p
    এটা সিলেটে খুব জনপ্রিয়। শুধু ইলিশ দিয়ে নয়, সব মাছেই খায়। মুর্গীর মাংস দিয়ে আস্ত আস্ত মুখি দিয়েও খেয়েছি। ভালোই লাগে কিন্তু।

    Like

    • আমার বানান ভুল নুতন নয়। হুদা ভাই নাই, এখন আর কাকে জিজ্ঞেস করব… হুদা ভাই চোখে অপারেশন শেষে এখনো ফিরছেন না।।

      আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। বানানটা ঠিক করে দিচ্ছি। কিন্তু কথা হচ্ছে ‘ছড়া’ মানে তো কবিতার ছোট ভাই!

      ঠিক হবে তো? সিলেটের মানুষ কি পেল! ভাল ভাল সব খাবার আগে আগে খায়!

      শুভেচ্ছা। আপনি কমেন্ট না করলে ভাল লাগে না। কিন্তু আপনি এখন আর লিখছেন না কেন? আমি মোবাইল থেকে মাঝে মাঝে ফেইসবুকে প্রবেশ করলে আপনাকে দেখি…। খাদ্য রসিক গ্রুপে তো আছেনই।

      ব্লগ লিখুন। শুভেচ্ছা।

      Like

  2. কচুর মুখি নামেই তো জানি। এটা চড়া না ছড়া বলে এসব তো জানতামই না। আর জানাজানির কথা না হয় বাদই দিলাম, কচুর মুখি রান্না যে আমার কেমন প্রিয় সেটা আমার আম্মুই জানে। হুবহু রান্নাটা খেয়েছি, খুব ভাল লাগে।
    ওহহো, কেমন আছেন উদরাজি ভাই? ভুলেই গেলেন শেষমেষ?

    Like

    • হা হা হা…। ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।

      না, আমি ভুলি নাই। তবে অফিসের কাজের চাপে বেশ সময় কম নিয়ে চলছি মাত্র। সময় পেলেই রেসিপি দিয়ে কেটে পড়ি। তবে সময় পেলেই নানা ব্লগে ঘুরে বেড়াই।

      আমাদের দেশের প্রায় সবাই (যারা নেটে থাকেন) তারা বেশীর ভাগই ফেইসবুকে ঘুরে বেড়ান। আজকাল বাংলা ব্লগ সহ ওয়ার্ড প্রেস ব্লগে তাই সবাই কম আসেন। ব্যাপারটা আমার কাছে দুঃখ লাগে।

      দুনিয়ার বেশির ভাগ মানুষই সাথে সাথেই মজা লুটতে চান! হা হা হা।।

      ভাল থাকুন। মাঝে মাঝে আপনিও এসে দেখে যাবেন। আমি আছি।

      Like

  3. কি ব্যাপার? আপনার ব্লগে আসলে শিশির পড়ছে কেন?

    Like

    • হা হা হা, বেশী ঠান্ডা পড়লে আমার ব্লগ শীতে কাঁপে! আর তা বুঝাতে বরফ পড়ে এই ব্লগে।

      আসলে ওয়ার্ডপ্রেস এ এমন একটা অফশন আছে (আমি যেটা একটিভ করেছি মাত্র) যা চালু করলেই ব্লগে বরফ পড়ে! তবে সেটা সাধারণত ডিসেম্বর মাসেই হয়।

      ধন্যবাদ বাঁধন ভাই। আপনার আগমনে বেশ ভাল লাগল।

      Like

  4. এখানে বসে রান্নার ঘ্রাণ পাচ্ছি। 😀

    Like

  5. উদরাজি ভাই, আপনার সব রেসিপি আমি মন দিয়ে পড়ি কিন্তু সময়ের কারণে সবসময় মন্তব্য দেওয়া হয় না। শীত-শীত এই দুপুরে গরম ভাত দিয়ে আপনার এই রান্না খেতে পারলে বেশ লাগতো।
    ছড়া কচু আমার খুব প্রিয়। মাঝে মাঝে পাঙ্গাস মাছের পেটের অংশ দিয়ে ছড়াকচু রান্না করি। বেশ ভালো লাগে খেতে।

    Like

  6. কচুর ছড়া আমার একটা প্রিয় তরকারি হলেও এটা খাওয়া আমার জন্যে বারণ! ঠাণ্ডা লেগে যায় 😦

    Like

  7. Udraji vai, ami ekhon Bangladesh Protidin’a achhi. 12-12-12’r jonne special ekta recipe den.

    Like

  8. কচুর মুখীকে কচুর ছড়া বা চড়া বলে তা আজই জানলাম। প্রথম যখন খুলনায় যাই, ওখানে শুনেছিলাম এটাকে বলে ‘গাটি’! মুখীর নাম গাটি শুনে হেসেছিলাম খুব।
    মুখী কিন্তু ছিলবার আগে সিদ্ধ করে তারপর হাত দিয়ে খোসা ছিলে রান্না করলে অন্য রকম স্বাদ পাওয়া যায়। ছোট আকারের মুখীগুলোকে আস্ত রাখলে দেখতে চমৎকার লাগে। ঘরে তরি-তরকারীর টানাটানি থাকলে মাকে দেখতাম এমন করে ডিম দিয়ে রান্না করতে। মুখী আর ডিম মিলে সবটাকেই ডিম মনে হতো। ঘন ঝোল দিয়ে ভাত মেখে সপাৎ সপাৎ করে খাওয়া – সে এক দিন ছিল রে ভাই। কোথায় হারিয়ে গেল!!!
    বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

    Like

    • আপনাকেও বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
      (আমরা অনেক আজ অফিস করছি, প্রকৃত স্বাধীনতা কোথায় পাই!)

      আপনি ডিম এবং মুখীর যে রান্নার কথা লিখেছেন তা এই প্রথম শুনলাম। রান্নাটা বুঝতে পেয়েছি, একদিন রান্না করে ফেলতে পারি।

      ঝোল গাঢ় রাখবো।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  9. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]