গ্যালারি

রেসিপিঃ কাঁচা কলা ইলিশ


কাঁচা কলা তরকারী রান্না করতে যে মাছের কথা সবার আগে পড়ে যায় তা হচ্ছে ইলিশ মাছ। সামান্য কয়েক টুকরা ইলিশ দিয়ে কেজি খানেক কাঁচা কলা রান্না করলে সারা ঘরের সবাই বেশ মজা করে খেতে পারে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস কাঁচা কলা ইলিশ রান্না আপনারা সবাই খেয়েছেনই! ইলিশ মাছ অনেক সব্জির সাথে বেশ ভাল মানায়। কাঁচা কলা এক সময় আমরা খেতাম না, এখন দেখি প্রায় সারা বছরেই বাজারে কাঁচা কলা পাওয়া যায়।

ইলিশ মাছের সাথে আরো অনেক তরকারী বেশ ভাল মানিয়ে যায়। যেদিন বাজার থেকে ছোট একটা ইলিশ কিনে এমনি দুটো তরকারী রান্না করেছিলাম, বেশ মজার হয়েছিল। একটা হচ্ছে কাঁচা কলা ইলিশ এবং অন্যটা হচ্ছে কচুর চড়া ইলিশ।

আজকাল রান্না করার সময় পেলেও রেসিপি দেয়ার তেমন সময় পাচ্ছি না। তবে যে দিন রান্না করি সে দিন কয়েক পদের রান্নাই করে ফেলি! হা হা হা… চলুন দেখে ফেলি, কাঁচা কলায় ইলিশ। এর পরবর্তী পোষ্টই হবে ‘কচুর চড়ায় ইলিশ’! এক ইলিশে দুই তরকারী!

উপকরনঃ
– চারটে কাঁচা কলা
– কয়েক টুকরা ইলিশ মাছ
– হাফ চা চামচ গুড়া হলুদ
– এক চিমটি বা তার বেশী লাল গুড়া মরিচ (ঝাল বুঝে)
– কয়েকটা পেঁয়াজ কুঁচি
– এক চামচ রসুন পেষ্ট/ বাটা
– পরিমান মত তেল
– পরিমান মত লবন
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– সামান্য কাঁচা ধনিয়া পাতা

(সব উপকরণই হাতের কাছে রান্নাঘরে আছে। প্রায় প্রতিটা রান্নাঘরেই এই সকল মশলাপাতি আছে।  কোথায়ও যেতে হবে না। হা হা হা… অফিস ফেরার পথে শুধু ইলিশ আর কাঁচা কলা কিনে বাসায় ফিরুন)

প্রনালীঃ

ইলিশ কেটে কাঁচা কলা নিয়ে বসে পড়ুন।


সামান্য লবন মিশিয়ে ইলিশ মাছ হালকা ভেজে ফেলুন (গা গা তেলে, বেশী ভাজা নয়)। এতে মাছ ভেঙ্গে যাবে না।


কলা কেটে (কলা আপনার ইচ্ছানুশারে কাটতে পারেন, আমরা চাটগাইয়্যা স্টাইলে কেটেছি!) সামান্য লবন এবং হলুদ গুড়া দিয়ে কলা গুলো সিদ্ব করে নিন (সিদ্ব না করলেও চলে, তবে সিদ্ব করলে তাড়াতাড়ি রান্না হয়)


কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি ভাজুন এবং পরে হাফ চা চামচ গুড়া হলুদ, এক চিমটি বা তার বেশী লাল গুড়া মরিচ (ঝাল বুঝে), এক চামচ রসুন পেষ্ট/ বাটা, সামান্য লবন (লবন মাছে এবং কলায় আগেও দেয়া হয়েছিল সুতারাং সামান্য) ও কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে কষিয়ে তেল উঠিয়ে নিন। এক কাপ পানি দিয়ে দিন, পানি শুকিয়ে উপরের ছবির মত দাঁড়িয়ে যাবে। খুন্তি দিয়ে নাড়ুন, যাতে মশলা পুড়ে না যায়।


এবার সিদ্ব কলা গুলো দিয়ে দিন। এবং ভাল করে মিশিয়ে হাফ লিটার পানি দিন (পানিতে যেন কলা ভেসে উঠে, এটা আপনাকে বুঝে দিতে হবে)


এবার হালকা ভাজা ইলিশ মাছ দিয়ে দিন।


ব্যস মিনিট বিশেকের জন্য আপনি টিভিতে কোন অনুষ্ঠান দেখে আসতে পারেন। ঢাকনা দিয়ে যাবেন এবং আগুনের আঁচ হালকা হতে হবে। আস্তে আস্তে কলা ইলিশ মিশতে থাকবে! হা হা হা।।


এবার কাঁচা ধনিয়া পাতা দিয়ে দিন এবং ফাইন্যাল লবন দেখুন। লাগলে দিন না লাগলে ওকে! এই ধরনের রান্নায় এই পর্যায়ে খুন্তি বা চামচ ব্যবহারের দরকার নাই। হাড়ি বা কড়াই ধরে উঠিয়ে নাড়িয়ে দিতে হবে। খুন্তি বা চামচ দিয়ে নাড়ালে মাছ বা তরকারী ভেঙ্গে যায়। ঝোল কেমন রাখবেন তা আপনি নির্ধারন করুন।


ব্যস হয়ে গেল, কলা ইলিশ। কত সোজা রান্না রে! কিন্তু কত মজার খাবার। এমন পেলে এক বাটি সাফ করে দেয়া কতই না সহজ!


আহ, কি মজা!

বিঃদ্রঃ শিশুদের ও বৃদ্বদের পেটে সমস্যা দেখা দিলে এই রান্না অবশ্যই করবেন এবং বিশেষ করে মাছ বাদ দিয়ে এই রান্না কলা খাওয়াবেন। গরম ভাতের সাথে মেখে খেলে উপকার পাবেনই। হা হা হা, আমি নিজেও শিখছি।

সবাইকে ধন্যবাদ।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

13 responses to “রেসিপিঃ কাঁচা কলা ইলিশ

  1. আসছে কচুর চড়া দিয়ে ইলিশ রান্না। না দেখলে মিস। আগামী কাল সকালে! এক ইলিশে দুই রান্না! দুটোই মজাদার এবং স্বাদের হয়েছিল! আগেই দেখার আমন্ত্রন জানিয়ে গেলাম।

    প্রবাসী ব্যচেলরদের অনুরোধ থাকবে এই রান্না করে দেখার। খুবই সহজ রান্না।

    Like

  2. গতরাতে কমেন্ট লিখে পোস্ট করতে পারিনি। ভিষন নেট প্রবলেম ছিলো। কাঁচকলা দিয়ে ইলিশের ঝোল আম্মা দারুন রাঁধতেন। এখনো মুখে সে স্বাদ লেগে রয়েছে।

    Like

  3. কাঁচকলা (এ নামেই আমরা সম্বোধন করে থাকি) ইলিশের সাথেই সব চেয়ে ভালো চলে। খেতেই হয় চমৎকার!

    Like

  4. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

  5. কাচা কলার খোসা ছাড়ানোর উপায় বোলে দেন দোয়া কোরে ।

    Like

  6. কাঁচা কলা কিনেছিলাম ভর্তা বানাবার জন্য. পাকা কলার মতো করে খোসা ছাড়ানো গেলোনা, ছুরি দিয়ে কেটে কেটে খোসা বাদ দিতে হলো, এতে করা বেশ কিছুটা কোলা খোসার সাথে লেগে থাকলো ও খোসার সাথে ফেলে দিতে হলো. আমার মতো যারা জিবনে প্রথম রান্না করছে, তাদের জন্য দোয়া করে বলে দেন – কাঁচা কলার খোসা ছাড়াবো কি করে? খুব উপকার হবে.

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]