অনেকদিন রান্নাঘরে যেতে পারছি না। আজ এটা কাল ওটা, তার পর সময়ও পাচ্ছিলাম না। সারাদিনের অফিস এবং রাতে বাসায় ফিরা, ছেলের পরিক্ষা সামনে। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে গেলে কাছে এসে গল্পে লেগে যায়! কত কি পরিবারের জন্য চিন্তা করতে হয়।
গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভাবলাম কিছু একটা রান্না করি। রেসিপির সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। কিন্তু আমার ব্যাটারী রাজি নন। রাতে আমাদের পাশের বাসার দিনি’র জন্মদিন। গানাবাজানার সাথে ভাল খাবার দাবারও হবে। আবার এই খাবার রান্নায় আমার ব্যাটারীও সাহায্য করবেন। কিছুতেই তিনি আমাকে রান্না ঘরে যেতে দিতে রাজি নন। কিন্তু দুপুরের খাবারতো নিজদের রান্না করতে হবেই। বাসায় কয়েকটা চিকেন পিস আছে, আমি তাড়াহুড়া করে বাজারে গিয়ে একটা কেপসিকাম, কয়েকটা টমেটো ও গাঁজর কিনে আনলাম। শুক্রবারের নামাজ পড়ার একটা চাপও মাথায় আছে। নামাজের আগে পরে খুব কম সময়ে এমন একটা চিকেন কাবাব বানিয়ে ফেললাম।
আমার চিকেন কাবাব উইথ ভেজিটেবল আমি খেলাম রুটি দিয়ে আর ব্যাটারী ও বুলেট খেলেন সাদা গরম ভাত দিয়ে! চলুন দেখি ফেলি। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে এবং আপনারা বাসায় বানিয়ে খেয়ে দেখবেন।
ক্যাপসিকাম, টমেটো, গাঁজর ও কয়েকটা পেঁয়াজ কিউব করে কেটে নিন। ধুয়ে ঝুলিয়ে নিন। সামান্য সময়ের জন্য সিদ্ব করে (রং নষ্ট না করে) সবজি গুলো নরম করে নিন।
চিকেন কেটে তাতে এক চামচ আদা, এক চামচ রসুন, হাফ চামচ গুড়া মরিচ, দেড় চামচ টমেটো সস, লবন, সামান্য ভিনেগার, সামান্য রেড সয়াসস, একচিমটি পাপড়িকা (এটা না হলে নাই) এবং সামান্য তুলসিপাতা গুড়া (ঘ্রানটা ভাল লাগবে, না হলে নাই, আমাদের ছিল বলে দিয়েছি) দিন।
ভাল করে মাখিয়ে এক ঘন্টার জন্য ম্যারিউনেটেড করে রাখুন।
প্যানে তেল গরম করে এবার চিকেন গুলো ভেজে নিন। তেল কম হবে। গোসত থেকে পানি বের হয়ে আসবে তাই চুলার কাছে দাঁড়িয়ে থেকে ভাজুন।
ঢাকনা দিতে ভুলবেন না। এতে মাংস নরম হয়ে ভিতরটাও সিদ্ব হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে এপিট ওপিট করে দিন।
ঠিক এমন একটা পর্যায়ে এসে যাবে। ছুরির মাথা দিয়ে খুঁচিয়ে ভিতরটা দেখে নিতে পারেন, নরম হল কিনা। এবার চিকেন কাবাব হয়ে গেল এবং তুলে ঢাকনা দিয়ে রাখুন।
চিকেন ম্যারিউনেটেড করার বেঁচে থাকা বাকী রস (এটাকে কি বলব বুঝতে পারছি না) এর সাথে কয়েকটা কাঁচা মরিচ ও আরো এক চামচ টমেটো সস মিশিয়ে নিন।
এবার অন্য একটা কড়াইতে সামান্য তেল গরম করে সবজি গুলো ভাঁজতে থাকুন। সামান্য লবন দিতে ভুলবেন না।
ভাজি হয়ে গেলে এবার সেই রস/ঝোল গুলো দিয়ে দিন।
এবার ভাল করে নাড়িয়ে ভাজুন। অনেকটা স্টার ফ্রাইয়ের মত। সামান্য ধনিয়া কুঁচি দিন, ভাল লাগবে। চাইলে ঝোল রাখতে পারেন, নতুবা মাখামাখা, নতুবা একদম ভাজাভাজা। আপনার ইচ্ছা যেমন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। চিকেন কাবাব সাথে নিয়ে পাশাপাশি ভেজিটেবল গুলো দিয়ে দিন।
এই ছিল আমার দুপুরের খাবার। আমার ছেলে বুলেট এই চিকেন কাবাব খেয়ে আমাকে জানাল, বাবা তোমার জুড়ি মেলা ভার! তুমি না থাকলে এমন মজাদার খাবার খাওয়া হত না।
এখন কথা হচ্ছে এই তিনপিস কাবাব ও ভেজিটেবল রান্না করতে আমাদের কত টাকা খরচ হয়েছে। আমি হিসাব করে দেখলাম প্রায় একশত পচাত্তর টাকা মাত্র। তবে এই খরচ আরো কমিয়ে ফেলা যেত যদি ক্যাপসিকাম অর্ধেক ব্যবহার করা হত। এক পিস ক্যাপসিকামের দাম হয়েছিল পঞ্চাশ টাকা, এখানে পঁচিশ টাকা বেঁচে যেত।
কিন্তু ভেবে দেখুন সাধারন হোটেলে এমন এক প্লেট কত টাকা হবে। কাজে কাজেই আমাদের সবাইকে বাসায় রান্না করতে হবে। কম টাকায় ভাল এবং বিশুদ্ব খাবার বাসা ছাড়া আর কোথায় পাওয়া যাবে!
সবাইকে আমাদের শুভেচ্ছা।
(আজ বিকেলে ব্লগারদের একটা আড্ডা আছে। আড্ডায় এমন চিকেন কাবাব হলে বলেন কেমন জম্বে! আপনারা দেখুন, আমি আড্ডায় যাচ্ছি! আড্ডা ছাড়া আর কি আছে এই জীবনে!)
darun recipe.thanks
LikeLike
Thank you Brother.
Thanks again for being with us.
LikeLike
আড্ডার খাবার খেতে ভালোই লেগেছে। তবে এই চিকেন কাবাব উইথ ভেজিটেবল হলে আসলেও কিন্তু বেশ জমতো।
LikeLike
হা হা হা…। আড্ডাতে আসলে সব কিছুই ভাল লাগে!
LikeLike
আড্ডাতে আসলে সব কিছুই ভাল লাগে। দারুন বলেছেন।
LikeLike
আড্ডা না দিলে মনে জোর পাওয়া যায় না।
LikeLike
nice……..
LikeLike
Thank you Sister…
LikeLike
khub e valo laglo.ami blog e ekdom e notun.but apnar receipe pori onek din thekei.im very much inspired by ur receipes.
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। আপনার কথা জেনে খুশি হলাম। আশা করি সাথে থাকবেন।
আপনার কমেন্ট পড়ে মনে হচ্ছে আমরা আমাদের উদ্দেশে সফল হতে চলছি।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
চমতকার একটা রেসিপি দিয়েছেন উদরাজী ভাই আর ভাবী!
আমরা এটা করবো শিওর। আর করে আপনাদের লিঙ্ক দেবো… 😀
LikeLike
ধন্যবাদ ব্রাদার।
আশা করছি আমাদের থেকে আপনাদের রান্না আরো ভাল ও সুস্বাদু হবে। আপনাদের একটা ব্যাপার আমাদের খুব ভাল লেগেছে, তা হচ্ছে আপনারাও রান্নাঘরে শেয়ার করে কাজ করেন। এটা ভাল দিক। ভালবাসা বেড়ে যায়। মিল মোহাব্বত বড় কথা। হা হা হা।।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
হা হা হা… শেয়ার তেমন একটা হয় না উদরাজী ভাই। আমি তো ক্যামেরা, লাইটস এগুলা নিয়েই একটু বেশী ব্যাস্ত থাকি। তবে পুরো কাজটাতে দু’জনের কন্ট্রিবিউশন থাকে।
LikeLike
এভাবে চলুক, দুই দিনের দুনিয়া! হা হা হা…।
LikeLike
উদরাজী ভাই, আপনাদের রেসিপি আমরা করেছি! কিছুটা নিজেদের মতো অবশ্য… তবে মেইন রেসিপি আপনাদেরটাই আছে। আশা করি ভালো লাগবে… 🙂
http://dhakaimenu.blogspot.com/2013/06/blog-post_6.html
LikeLike
চমৎকার লাগছে। রান্না যে একটা শিল্প তা এখানে আবার প্রমান হয়ে গেল। আপনাদের জন্য শুভেচ্ছা। দেখে প্রান ভরে গেল। আসলে ইচ্ছা থাকলে, রান্না কত সুন্দর করা যায় তা আপনারা দেখিয়ে দিলেন।
আশা করি সামনে আরো মজাদার খাবার দেখতে পাব।
আমাদের নাম স্মরন করার জন্য আমরা ভীষন খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ।
(ব্লগ পোষ্টে কমেন্ট করা কঠিন, প্রতিবার ভিজুয়াল ভেরিফিকেশন দেয়া কঠিন কাজ এবং ভিজুয়াল লেটার গুলো ঠিক দেখে লেখা যায় না।)
LikeLike
আসলে ধন্যবাদ আপনাদের প্রাপ্য! কারণ অরিজিনাল রেসিপি তো আপনাদের। 🙂
আর কমেন্টের সমস্যাটার কথা বলে ভালো করেছেন। ফিডব্যাক দরকার ছিল। এর আগে কেউ অবশ্য বলেনি, তাই এটা নিয়ে চিন্তা ছিল না। তবে স্প্যামিং ঠেকাতেই এই ব্যাবস্থা। এটা না দিলে অনেক স্প্যাম আসে। ওয়ার্ডপ্রেসে তো আরও বেশী। তবে দেখি, কি করা যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ! 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ শরীফ ভাই, আপনাকে আবারো শুভেচ্ছা।
(কমেন্টের ব্যাপারে আমার কিছু মতামত)
প্রিয় পাঠক/পাঠিকাদের যত বেশি এক্সেস দেয়া যায় আমি মনে করি তত বেশী পোষ্ট পঠিত হয়ে থাকে। প্রিয় পাঠক/পাঠিকা তাদের মুল্যবান সময়/টাকা নষ্ট করে আমাদের পোষ্ট গুলো পড়ে থাকেন এবং কমেন্ট করার ইচ্ছা থাকলে করেন (তারা কষ্ট করে আমাদের পোষ্ট পড়েন এটার জন্যই আমি সব সময় তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকি)। সেজন্য কমেন্টের সময় তাদের যত বেশী ফ্রী করে দেয়া যায় তত ভাল। ভেরিফিকেশন এবং এপ্রুভালের মধ্য তাদের আটকে রাখার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। কিছু স্প্রাম ঠেকাতে আমি মনে করি তাদের সামান্য সময় নষ্ট করার কি দরকার। কিছু বাজে কমেন্ট আসতেই পারে (আমার কাছে আগে আসত), নেটের সবাই ভাল, এমন ধারনা করা ভূল। ছেলেরা রান্না করবে এটা এখনো অনেক প্রগতিশীল ব্লগার বিশ্বাস করে না, সেখানে আর কি বলার থাকে। যাই হোক, কমেন্ট সহজ করলে কিছু কমেন্ট হবে, আর লেখক হিসাবে নিশ্চয় ভাল লাগবে।
LikeLike
it’s very helpful and informative. thanks a lot……………………………………
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
akhoni banabo.
LikeLike
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই।
রান্নার প্রতি আপনার ভালবাসা দেখে খুশি হলাম।
আশা করছি, ভাল হয়েছিল।
শুভেচ্ছা।
(দেরীতে উত্তর দেয়ার জন্য সরি, দুঃখিত)
LikeLike
BHAIYA ami pic gulo dekte pachchi na kno? 😦
LikeLike
bhai ami apner recipe kono ter e pic dekte passi na 😦
LikeLike
আমার তো এখনই রান্না করতে ইচ্ছা করছে …।কিন্তু ফ্রিজে মুরগি নাই…
LikeLike
ধন্যবাদ বোন, এমন হতেই পারে। ব্যাপার না, আগামীতে চিকেন পেলেই এমন রান্না করে ফেলুন এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে খেতে বসুন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD