আমাদের একজন সেরা ব্লগার আলী মাহমেদ শুভ। (আমার অনুভূতি লেখক উপহাধি কেন জানি আমাদের আলী মাহমেদ ভাইতের সাথে মানায় না!) আলী মাহমেদ ভাইকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দুঃসাহস আমার নেই। তবে মজার কথা বলে রাখি, আমি তাকে চিনতে পারলেও (তার লেখালেখি পড়ে) তিনি আমাকে চিনতেন না। কি কি করে তিনি একদিন আমার ব্লগে এসে পড়লেন (আখাউড়ার ছিটাপিঠায়) এবং একটা কমেন্ট করেছিলেন। তাতেই আমি যারপর নাই খুশি হয়ে এই প্রিয় ব্লগারকে মনে রেখে একটা রেসিপি লিখি। কিন্তু উনার সাড়া না পেয়ে চুপ হয়ে যাই, যাক অবশেষে তিনি সেই ব্লগে কমেন্ট করেছিলেন (চুপ করে থাকা এত সহজ নয় মাহমেদ ভাই! হা হা হা)।
যাক এর মধ্যে থাবাফোনে (আমার ফোনটা একটু বড় বলে মাহমেদ ভাই এই নাম দিয়েছেন) কথা হয়ে যায়। আমি বলি, ঈদের পরদিন আপনার সাথে আড্ডা দিতে চাই। আপনারা জানেন যে, আমার শশুর বাড়ী আবার আখাউড়ায়! এদিকে আবার আমাদের আলী মাহমেদ ভাইয়ের বাড়ী/বাসাও আখাউড়ায়। এক ঢিলে দুই পাখি! আমার এবারের ঈদ আখাউড়ায় ছিল।
কিন্তু ঈদের পরদিন নয়, ঈদের দিন বিকালেই আমাদের আড্ডা হয়ে যায়! বিকালের দিকে আমার আর সময় কাটছিল না, শশুরবাড়ীর শ্যালক সোনামানিকে নিয়ে আলী ভাইয়ের বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়ি। আখাউড়া ছোট শহর (আমার কাছে ভালই লাগে, শশুরবাড়ী নয় বলে!)।
কথা বেশী না বলাই ভাল, বেশী কথা বললে বিপদের সম্ভাবনাও বেশী বেড়ে যায়। চলুন ছবিতে আড্ডা দেখে ফেলি। ঘন্টা তিনের আড্ডাকে এক পর্বে শেষ করা যাবে না বিধায়, এটি প্রথম পর্ব।
ঈদের দিন বিকালে পুরা আখাউড়া শহর এমনই ছিল! গরু কেটে সবাই ভীষন টায়ার্ড হয়ে পড়ছিল।
আমাদের দেখাটা এমন যে, এর পূর্বেও কয়েক হাজারবার দেখা হওয়া বন্ধুর মত। মাহমেদ ভাইয়ের আগেই একটা প্রশংসা করে ফেলি, তিনি বন্ধু প্রিয়।
বাসার সামনের গাছ গাছালির বর্ননা ২য় পর্বে থাকবে। ঘরে প্রবেশ করেই মনে হয়েছিল, এটা কি যাদুঘর নাকি বাসাবাড়ী! আলী ভাইয়ের সংগ্রহে কি নেই! হুক্কা-কল্কি-মই-লাঙ্গল! কয়েক হাজার আইটেম হবেই।
গাছ গাছালির প্রতি মাহমেদ ভাইয়ের ভালবাসা তিনি স্বীকার না করলেও বুঝা যায়! (২য় পর্ব দেখার আগেই আমন্ত্রন জানিয়ে গেলাম)
কি কি আলী মাহমেদ ভাইয়ের সংগ্রহে আছে তা কয়েক ঘন্টায় দেখে শেষ করার মত নয়, কয়েকদিন লাগবে।
অনুবীক্ষন যন্ত্রটা দেখছেন! এই শতকের প্রথম দিকের ক্যামেরাও আছে! গ্রামোফোনের ২য় ভার্সানও দেখেছি বলে মনে হচ্ছে।
বই ছাড়া আর কি! জ্ঞানের ভান্ডার বই থাকবে না তা কি করে হয়!
মহিশের শিং শিঙ্গা, বিচিত্র নারিকেল, খড়ম এবং সাধু বাবার হাত রাখার স্ট্যান্ড, রুদ্রাক্ষ্য! (এখন মাথা ছাপড়াচ্ছি কেন খড়ম পরে দেখলাম না, খড়ম পরে হাঁটতে কেমন লাগে এই অভিজ্ঞতা আগামীতে নিবই, আখাউড়া আমার শশুরবাড়ী! আমাকে যেতেই হবে বারবার, একশত বার)
ঘন্টা, বেল, পমপম (সঠিক নাম জানি না বলে এটা লিখে দিলাম) এবং আরো কত কি!
রানী ও রাজা! (রানীর স্থান উপরে কিন্তু! একেই বলে ত্যাগী ভালবাসা!)
বিশ্ব বন্ধুদের মাঝে আমাদের আলী মাহমেদ ভাই, যাকে নিয়ে আমি অনেক অনেক গর্ব করতে চাই, আরো আরো। (ছবি থেকে ছবি)
পুরুস্কার আমার হাতে!
দুনিয়ার সেরা বাসা বুনন। বাবুই পাখির বাসা। কি করে এই বাসা আলী মাহমেদ ভাইয়ের বাসায় আসল তা জানা হল না, এত কিছু এত সামান্য সময়ে কি দেখা যায়!
আড্ডার এক ফাঁকে ভাবী (হালকা পাতলা প্রশংসা করে ফেলতে পারলে ভাল হত, কিন্তু আলী ভাইয়ের জন্য সেটা তুলে রাখলাম) এলেন। খাবার দাবার, আর আমি যেখানে খাবার দাবার সেখানে। খাবার মুখে দিয়েই বুঝতে পারছিলাম – ভাবী ভাল রান্না করেন , মনের ভুলে এই মিষ্টি সেমাইয়ের রেসিপিটা জেনে নিতে পারি নাই।
২য় পর্বে আরো কথা আছে!
(ঈদের পরদিনের জন্য আড্ডাটা তুলে রাখলে আলী মাহমেদ ভাইয়ের সাথে আর আড্ডা হত কি না কে জানে। ঈদের পরদিন ভোরে আমার শশুরজানকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে হয়। তিনি বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ্য হয়ে ছিলেন। আর দুঃখজনক সংবাদ হচ্ছে, চিকিৎসার জন্য উনাকে ঢাকা নিয়ে আসলে ঈদের দুইদিন পর তিনি ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে এই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে যান। দুইদিনের দুনিয়া, আমরা সবাই মেহমান বটে!)
সফল আড্ডা। আলী মাহমেদ ভাইয়ের সাথে আড্ডা দেবার ইচ্ছা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। তার জাদুঘর না দেখলে জীবনই বৃথা। একজন মানুষের ব্যক্তিগত সংগ্রহে এত কিছু থাকতে পারে, তা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয়। আলী মাহমেদ ভাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন।
এমন চমৎকার পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
LikeLike
ধন্যবাদ হুদা ভাই, তিনি ভাল লিখেন, ভাল চিন্তা করেন এবং আমার কাছে তাকে ভাল লাগত এটাই আমার ধারনা ছিল। কিন্তু এই আড্ডাতে আমার সকল ধারনা ভেঙ্গে যায়! বিশ্বাস করুন, তিনি যদি নাও লিখতেন এই সব সংগ্রহের জন্য তিনি এমনিতেই বিখ্যাত হয়ে উঠতেন।
আড্ডার কথা আগামীতে লিখবো।
LikeLike
আফসোস লাগছে… এমন আড্ডায় যদি আমিও থাকতে পারতাম…
বেশ অবাক হলাম পোস্ট পড়ে। মানুষ সৌখিন হয় কিন্তু কারো সংগ্রহে যে এতো জিনিস থাকতে পারে জানা ছিলোনা। কোন দিন যদি আখাউড়া যাওয়া হয় তবে আলী মাহমেদ ভাইকে খোঁজে বের করতেই হবে। 🙂
অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের। আর আপনার শ্বশুরমশায় যেন শান্তিতে থাকেন সেই দোয়া করি।
LikeLike
ধন্যবাদ জামি। আলী ভাইয়ের সাথে আড্ডা না দিলে আমারও এটা জানা হত না। আমিও ভাবতাম, তিনি আমাদের মতই ছন্নছাড়া! হা হা হা… কিন্তু বাস্তবে তা না।
তিনি কেন আখাউড়া ছেড়ে দুনিয়ার কোথায়ও যাবেন না, এটাও সেখানে গিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম।
আলী মাহমেদ ভাই বাস্তবে চরম আড্ডাবাজ বলেই আমার মনে হল।
হা, আখাউড়া গেলে আবশ্যি তাকে খুঁজে নেবেন। ভাল লাগবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আপনার শ্বশুরের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
আপনি তো ভালোই আড্ডা দিলেন। আর আমি?
১ মাসের উপরে ঢাকায় ছিলাম, কিন্তু বেশীর ভাগ সময়টাই কেটেছে অসুস্থতায়। আপনার মিস কল দেখেছি।
হুদা ভাই ছাড়া কেউ খবরও নেয় নি। এই হলো দুনিয়া!
LikeLike
ধন্যবাদ আপা,
আমার জীবন বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে আপা। এর চেয়ে বেশী আর কি বলব। আমি কিন্তু মিস কল দেই নাই! হা হা হা…
রাগ করবেন না আপা, এই হচ্ছে দুনিয়া।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমি ধরতে না পারায় কলটা মিস হয়েছিলো। ২৪ তারিখ দুপুর ৩টা ৪২ মিনিটে।
এই যে জীবনের ওঠা নামা… সবই আল্লাহ পাকের ইচ্ছা!
LikeLike
আপা, সব কথা সব সময় বলাও যায় না। নানান লিমিটেশন এই জীবন ভরে উঠছে।
আপনি সুস্থ্য আছেন জেনে ভাল লাগল।
LikeLike
মাথার চুল হারিয়ে ফেলছেন দেখছি! হে হে।।
LikeLike
ধন্যবাদ খালিদ ভাই।
আসলে বয়স হয়ে যাচ্ছে!
LikeLike
২য় পর্ব প্রকাশ হয়েছে।
LikeLike
এই দুনিয়ায় আমরা মেহমান বটে নির্মম সত্য কথা।
অনেক অনেক ভাল লাগল বিশেষ করে ছবি গুলো।
LikeLike
ধন্যবাদ মানুষ ভাই। জসীম ভাই, আপনাকে এখানে দেখে খুব খুশি হলাম। চারিদিক ব্লগেই আপনাকে সব সময় পেতে চাই।
শুভেচ্ছা জানবেন।
LikeLike
পিংব্যাকঃ তিমি মাছের ঝোল এবং… | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
আলী আহমেদ ভাইয়ের জন্য অনেক শুভেচ্ছা ।
LikeLiked by 1 person
নবী ভাই, উনার আখাউড়ার বাড়িটা অনেক প্রাচীন এবং সুন্দর, অনেক কিছু সংগ্রহ আছে যা হয়ত সারা দেশেও আর নেই। খুবই প্রতিভাবান মানুষ।
LikeLike