গ্যালারি

জন্মদিনের খাবার দাবার ও আড্ডা


ঘটা করে জন্মদিন পালন করার পক্ষে আমি নই। কিন্তু এটা আমাদের সমাজে মোটামুটি দাঁড়িয়ে গেছে, শিশুদের জন্মদিন পালন করা। আমি সমাজের অংশীদার, সমাজে আছি। তবে আমি আবার মনে করি শিশুদের এই ধরনের জন্মদিন পালন এক দৃষ্টিতে ভাল, এতে আশে পাশের শিশুদের মধ্যে একটা ভাল বন্ধুত্ব হয় এবং পাড়া প্রতিবেশিদের মধ্যে একটা ভালবাসা জন্মে। হা হা হা… এখন অফিসেও কলিগদের মধ্যে জন্মদিন পালন করা হয়, পরিবারের বড়দেরও। তবে আমি আমার জন্মদিন পালনে এখন লজ্জিত হই কারনে আমার এখন মাঝামাঝি পালাতক বয়স! জন্মদিন পালন করতে বেশী আনন্দ ছোটবেলায় এবং বুড়াবেলায়!

যাই হোক, গত ৮ তারিখে খুব ছোট পরিসরে (এখন আর বড় পরিসর ভাবতে পারি না) আমার ছেলে বুলেটের জন্মদিন পালন করা হয়েছে (যা আপনাদের আগেই অবগত করেছি)। মোটামুটি ১০টি পরিবারের অংশগ্রহন। আমার বাড়ীওয়ালা (তিনি বিখ্যাত লোক, এক নামে সারা বাংলাদেশের সবাই চিনেন), ছোটভাই/পরিবার (সবাই কি করে যেন আলাদা হয়ে গেলাম), কয়েকজন প্রতিবেশী ও তাদের শিশুসন্তান (যাদের সাথে আমার ছেলে বেড়ে উঠছে)। চলুন দেখে ফেলি কি কি ছিল! ছেলে বুড়ো মিলিয়ে প্রায় ৪৬ জনের আয়োজন। যারা আসছেন তারা বসে খেয়েছেন, আর যারা আসেন নাই, তাদের খাবার প্যাকেট করে দেয়া হয়েছে (সাধারণত কয়েকজন পুরুষ প্রতিবেশী আসতে পারেন নাই, তারা তাদের স্ত্রী এবং সন্তান পাঠিয়েছেন, আমার কথা হচ্ছে তিনি আসেন নাই বলে বাদ যাবেন কেন?)।


কেক ছাড়া জন্মদিন হয় না! দোকানে (হটকেক) এটাই ছিল শেষ কেক। আর একটু পরে গেলে, না পেলে আমার হত! কি হত, বলে বুঝাতে পারছি না! অফিস থেকে ফিরতেই ৯টা পার হয়ে গিয়েছিল।


কেক কাটার মধ্যেই আনন্দ। এরা সবাই অনেকদিন ধরেই একসাথে বেড়ে উঠছে। আসলে সন্ধ্যা থেকে ওরা আড্ডা দিয়েই যাচ্ছিলো। আমি অফিসে বসে খবর পাচ্ছিলাম!

খাবারের আয়োজন তেমন কিছু না! এবার জন্মদিনে রান্নাবান্নায় আমি কোন হেল্প করতে পারি নাই, আমার ‘বুলেটের মা ব্যাটারী’কে! তিনি টাকা নিয়েছেন, একা নিজে বাজার করেছেন (সাথে হেল্পিং হ্যান্ড আমাদের সুফিয়া!) রান্নাবান্নায় তিনি একাই একশত, তার সাথে থেকে থেকে আমিও রান্না শিখে ফেলেছি (সেই ইতিহাসতো আপনারা জানেন)! তবে আমার মতামত ছিল তেহারী ও চিকেন দিয়ে একটা তরকারী, কিন্তু তিনি বললেন খিচুড়ি ভাল হবে, আমি রাজী কারন আমিতো ‘উদরাজী’ই (যে সব কিছুতেই উদ্দোগ্যের সাথে রাজী থাকে!)।

খুচুড়ি, বেশ ঝর ঝরে, সবাই খেয়ে প্রশংসা করছিল।


মাংশের রেজালা, কচি গরু! (হা হা হা।। স্বপ্ন থেকে আনা!) বেশ, সাইজমত ওরাই কেটে দিয়েছিল। (পরিবেশনের বাটিতে তোলার ছবি মিসিং!)


মাত্র ১৩ পিস মুরগীর থানের কঠিন রোষ্ট! আমার ভাগে পড়ে নাই, তবে এক চামচ ঝোল টেষ্ট করেছিলাম, ফাটাফাটি স্বাদ ও ঘ্রান (রেসিপি মিস করাটা ঠিক হয় নাই)! এটা ছিল শধু মাত্র যারা গরু খাবে না বা খায় না! (পরিবেশনের বাটিতে তোলার ছবি মিসিং! তোলা হয় নাই!)


খাটি দেশী সালাদ। সামান্য ইতালিয়ান হোয়াইট ভিনেগার ছিল, স্বাদ মুখে লাগার জন্য।


লেবু ও বোম্বাই মরিচের আচার ছিল, ছোট ভাইয়ের আনা ঠান্ডা কোক ও সেভেনআপও ছিল।

আমি শিশুদের উচ্ছাস দেখেছি, এটাই আমাদের আনন্দ। শিশুদের মুখে হাসি ফুটানোই আমাদের সবার চেষ্টা।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন।

বিঃদ্রঃ বুলেট পরদিন স্কুল মিস করেছে, সময় মত ঘুম থেকে উঠতে পারে নাই (অবস্থা দেখে আমরাও চাপ দেই নাই)! তবে এটা আমাকে পীড়া দিয়েছে, কিন্তু কিছু বলি নাই কাউকে!

20 responses to “জন্মদিনের খাবার দাবার ও আড্ডা

  1. ‘আমি শিশুদের উচ্ছাস দেখেছি, এটাই আমাদের আনন্দ। শিশুদের মুখে হাসি ফুটানোই আমাদের সবার চেষ্টা।’

    ভালো লাগল।

    Like

  2. Rhyme k onek onek jonmoodiner shuvecha..he is very lucky to have such caring parents like you and bhabi…

    Like

  3. আপনার বুলেটকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা!আপনার মতই যেনো ভালো মানুষ হতে পারে, এই দোয়া থাকলো।

    Like

  4. এত দিনে জানা গেল, বুলেটের নাম রাইম!
    এর মাঝে অনেকগুলো জন্মদিন, গায়ে হলুদ, বিয়ের উৎসবে যোগ দিতে হয়েছে। বলতে পারেন ব্যাস্ততা আর ব্যয়ের চরম ভাবে উপভোগ করছি। তবে আপনার মত রসালো পরিবেশনা হয় না বলে সে সব নিয়ে ব্লগে লেখা হয়ে ওঠে না।
    রাইমের জন্য অনেক আদর, স্নেহাশীষ আর ভালবাসা। রাইমের বাবা-মায়ের জন্য প্রাণ ভরে শুভ কামনা জানাচ্ছি।

    Like

    • ধন্যবাদ হুদা ভাই, আমি জন্মদিন মার্কা অনুষ্ঠানে যেতে ইচ্ছুক হলেঈ বিবাহ মার্কা অনুষ্ঠানে যেতে চাই না। কয়েকদিন আগে এক হুজুরের/পীরের বিবাহের কথাতো বলেছি, মনে আছে নিশ্চয়! বিবাহ আর ভাল লাগে না! হা হা হা।।

      আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

      Like

  5. ফেইসবুকের বদৌলতে গত ৩ বছর ধরে জন্মদিনটা পালন করা হচ্ছে। আসলে প্রিয় বন্ধুরা ছোট্ট পরিসরে এটা আয়োজন করে থাকে। এর আগে জন্মদিনের খবরই বা রাখতো কে?

    আর হ্যাঁ, বুলেটের জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইলো। যদিও দেরী হয়ে গেছে।

    Like

  6. বুলেটকে আমার ও আমার পরিবারের তরফ থেকে অনেক অনেক আদর, ভালোবাসা ও আশীর্বাদ জানাবেন দাদা। খুব সুন্দর মানুষ হয়ে সে বড় হয়ে উঠুক। অনেক অনেক ভালো থাকুন আপনারা সকলে

    Like

  7. অসাধারন আইডিয়া !
    আমার ঘরণী এই ব্লগ দেখলে আমাকে আরেকটা মডেম কিনতে হবে !
    নিয়মিত আমরা দুজন মিলে আসবো সাহাদাত ভাই।
    ভাল থাকুন।

    Like

    • ওয়েল কাম।
      ধন্যবাদ যাদব ভাই।
      কাজে লাগলে খুশি হব। আমার চেষ্টা কিন্তু ছেলেদের রান্নায় আগ্রহী করে তোলা। আপনি রান্না করতে পারেন? হা হা হা…

      রান্না জানা একটা গুন, সেই গুন থেকে কেন পিছিয়ে থাকবেন।

      শুভেচ্ছা আপনাদেরও।

      Like

  8. দাওয়াত পাই নাই! ছবিগুলো দেখে জিভে জল এসে গেছে। এখন রাত ১ টা বাজে, সিলেটে আছি। এতো রাতে খাবার কই পাই?
    বুলেটকে অনেক দেরীতে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

    Like

  9. বাহ ! রাইম সোনামনি অনেক মজা করেছিল দেখছি। রাইমের বিয়েতে নিশ্চয় আপনি নিজেই কিছু ভাল ভাল ডিস রাধবেন।

    এই পোস্ট দেখে খুব ভাল লাগল। সন্তানের জন্য বাবার ভালবাসার মতন আর সুন্দর উপহার আর কিছুই হয় না।

    Like

  10. শিশুদের আনন্দ আর হাসিতেই যেন প্রকৃত সুখ!
    সব সময়ই যেন আমাদের রাইম হাসিখুশিতে ভরপুর থাকে এই কামনাই রইল।

    অনেক সুন্দর একটি পোস্ট দিয়েছেন সাহাদাত ভাই।
    শুভকামনা থাকবে সব সময়।

    Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]