গ্যালারি

রেসিপিঃ সালাদ (প্রবাসী ভাই বোনদের জন্য)


সালাদ একটি জনপ্রিয় মিশ্র খাবার যা প্রধানত ফল এবং কাঁচা সবজি দিয়ে তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে প্রধানত শসা, গাজর, টমেটো ইত্যাদি দিয়ে সালাদ তৈরি করা হলেও পৃথিবীজুড়ে সালাদের জন্য বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হয়। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুসারে সালাদ বলতে সবুজ সালাদ, সবজি সালাদ, পাস্তা বা ডালের সালাদ, মাংস ও সামুদ্রিক খাদ্যের মিশ্র সালাদসহ বিভিন্ন প্রকারের খাদ্য বোঝায়। সালাদ মুলত বিভিন্ন ঠান্ডা অথবা গরম খাদ্যের এবং কাঁচা সবজি ও ফলের মিশ্রণ। [উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে]

প্রবাসী ভাই বোনদের জন্য আমার আজকের এই সালাদ। প্রবাসী ভাই বোনদের এই সব কিছু হাতের নাগালে আছে বলে আমি মনে করি। চাইলেই বানিয়ে খেয়ে মজা লুটতে পারবেন! আর সালাদ বানিয়ে রান্নার প্রতি একটু আগ্রহ হলে তো কোন কথাই নেই! আমি যেটা সব সময় চাই! হা হা হা…

দেশি ভাইবোনদের জন্য আমার নিষেধ নেই! আমি কিন্তু দেশেই আছি! তবে ভেজালের ভয়ে টমেটো এবং গাজর কিনি নাই। দোকানে দেখি কিন্তু কিনতে ইচ্ছা হয় না। সারা বছর যে টমেটো ও গাঁজর পাওয়া যায়, তাতে নাকি ফরমালিন বা অন্য কেমিক্যাল মিশানো থাকে।

আল্লাহ, খাদ্যে ভেজালকারীদের তুমি দুনিয়া থেকে উঠিয়ে তোমার আসমানে নিয়ে নাও! এরা দেশ ও জাতির শত্রু, মানবতার শত্রু,  এরা তোমার কাছে সাত আসমানেই থাকুক! বেহেশত, দেযগ যা দেবার তুমি তাদের দাও। কিন্তু দুনিয়াতে এদের আমরা চাই না, চাই না।

প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
(পরিমান আপনি আপনার মত করে নিতে পারেন, আমি একজনের জন্য মানে শুধু আমার জন্যই বানিয়েছিলাম)
– কচি শসা (ভাল কিনতে পারি নাই)
– কয়েকটা পেঁয়াজ (গোল করে কাটতে হবে)
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– অলিভ (একজনের জন্য ৫টা দিয়েছি, শুধু খেলে চলবে না)
– রাইতা (বোতলে পাওয়া যায়, ঘরেও বানানো যেতে পারে)
– লবন (পরিমান মত)

* গাঁজর ও টমেটো দিলে আরো ভাল হত, কিন্তু বাজার থেকে কিনতে সাহসে কুলায় নাই। প্রবাসীরা এই দুই আইটেম দিতে ভুলবেন না, আরো খেতে মজা পাবেন।

প্রণালীঃ

কেটে বাটিতে সাজিয়ে নিন।


পরিমান মত লবন দিন, বোতলজাত রাইতা দিন প্রয়োজন মত।


এবার ভাল করে মিশিয়ে নিন।


সামান্য মুখে দিয়ে আবারো লবন এবং স্বাদ দেখুন। কিছু কম মনে হলে দিন।


ব্যস হয়ে গেল সালাদ। যদি একটা টমেটো এবং কিছু গাঁজর দেয়া যেত তবে আরো দেখতে এবং খেতে ভাল হত।

সামান্য সময়ে এমন একটা সালাদ বানিয়ে খেতে বসলে অনেক আনন্দ পাওয়া যায়। আর, সালাদ শরীরের জন্য বেশ উপকারী। চেষ্টা করবেন তো?

19 responses to “রেসিপিঃ সালাদ (প্রবাসী ভাই বোনদের জন্য)

  1. সালাদ খুবই পছন্দ করি, বিশেষত গরমের দিনে সালাদ যেন শান্তির পরশ এনে দেয়। বিদেশে এরা এতরকম সালাদ খায় যে বলে শেষ করা যাবেনা। আমি দুপুরের খাওয়ার জন্য মাঝে মধ্যেই সালাদ তৈরী করে নিয়ে যাই, সালাদে আমার খুব প্রিয় ২ টা উপকরণ হল এক্স্ট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, আর আরেকটা হল সেসিমি ওয়েল বা ভাজা তিলের তেল। এক বাটি লেটুসে এক চামচ অলিভ তেল বা বা ১ চামচ তিলের তেল আর একটু লবণ, তাতেই বাটি সাবাড় করে দেই 🙂

    Like

    • ধন্যবাদ রনি ভাই। সে সব আইটেমের কথা লিখলেন তাতে জিবে জল আসলো, আবার প্রবাসী হতে ইচ্ছা হল! হা হা হা… (আমি আর প্রবাসী হব না!)

      একটা মজার ঘটনা না বলে পারছি না, আমি ১৯৯৫ সালের দিকে মিশরে ২২ দিন ভ্রমনে গিয়েছিলাম। একটা দোকানীর (সেলস) সাথে আমার বেশ খাতির হয়ে পড়ছিল (অনেক জিনিষ কেনা এবং আড্ডা দেয়ার কারনে)। হোটেল থেকে নেমে প্রায় অবসর সময়ে ওদের দোকানে যেতাম, সময় অসময়ে। শেষে এমন বন্ধু হয়ে পড়ছিলাম যে, আমি ও বাসা থেকে দুপুরে কি খাবার নিয়ে আসত তাও দেখতাম (হা হা হা)।

      দুপুরে সে প্রায় প্রতিদিন এক বড় বাটি সালাদ আনত। এক একদিন এক এক রকমের সালাদ। সালাদ ছাড়া কিছুই খেত না!

      পুরানো ঘটনা মনে করিয়ে দিলেন।

      দেশে সালাদের প্রায় উপকরন পাওয়া যায় না, কিছু দোকানে পাওয়া গেলে দাম বেশী তবে আমি বেশী কষ্ট পাই ভেজালে। আপনাকে বলে বুঝাতে পারব না, কত সুন্দর টমেটো, কত সুন্দর গাঁজর, ভেবেই অবাক হই, এসবে নাকি কেমিক্যাল দেয়া (সেজন্য সহজে পচে না, খেলে ক্যান্সার ছাড়া গতি নাই)।

      সরকার ভেজালের বিরুদ্বে কোন কথাই বলে না, আশ্চর্য্য লাগে। শুনেছি (কর্নফাম) শেখ হাসিনা নাকি পানি পর্যন্ত বিদেশ থেকে আনিয়ে খান, আমাদের জন্য ভাবার লোক কোথায়? ক্যান্সার এখন প্রায় পরিবারেই আছেই।

      শুভেচ্ছা আপনাকে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

      Like

  2. দারুন হবে… আমিতো আবার পেয়াজ খুব কম খাই 🙂

    Like

  3. সালাদ যে কত উপকারী একটি জিনিস! নিজের কাহিনী না বললে বোঝানো যাবেনা সালাদ কি জিনিস।

    আমি অনেক বছর ধরেই নিয়মিত ব্যায়াম করে আসছিলাম তবে শেষ দু’বছর ব্যাথাজনিত কারণে সাঁতার ছাড়া তেমন হেভীওয়েট ব্যায়াম করা হয়নি। আর বংশগতভাবে খাদ্যাভাসের!() কারণে মোটা হতে সময় লাগেনি। কারণ ব্যায়ামও তেমন হচ্ছেনা, আর হচ্ছে শুধু খাওয়া। শরীরের তুলনায় অতিরিক্ত মেদের কারণে আবারও সেই ব্যাথা জেগে উঠে। ব্যায়ামও নিষেধ, কিন্তু ওজন কমাতে হবে ৩ মাসে ১০ কেজির মতো। তাহলে উপায়?

    টানা ৩ মাস এই সালাদ, হ্যাঁ শুধু এই সালাদ তিন বেলা খেয়েছিলাম আমি। কোনো ভাত নয় রুটি নয়, মাঝে মাঝে শুধু সকালে একটি ডিম, আর বাকি বেলাতে শুধু সালাদ। এর ফলে আবারও সেই আগের দাইফে ফিরে আসি। আমার মতে রাতে ভারী কোনো খাবার না খেয়ে শুধু সালাদ খাওয়া উচিত সবার।

    এমন চমৎকার একটি পোস্টের জন্য ধন্যবাদ রইল প্রিয় সাহাদাত ভাই।

    Like

  4. কোন বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া সালাদ খাওয়া হয় কোথায়? তাও মূল খাবারের সাথে সামান্য কিছু। পেট ভরে সালাদ আর কেই বা খায়, আমি তো খাইনি কোন দিন! আমার ধারণা, অন্যান্য খাবার আরো বেশি খাওয়ার জন্য সালাদ একটু মুখে দিয়ে মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনা হয়।

    Like

  5. ভাইয়া, সবগুলোই চিনি। কিন্তু, অলিভ বলতে কি জলপাই বুঝিয়েছেন? এগুলো কি ধরনের জলপাই? আমাদের আশেপাশের তুলনায় অনেক ছোট মনে হচ্ছে?

    বিঃদ্রঃ আমিও নিজে রেধে খাই। আর এজন্য বন্ধু মহলে আমাকে বিভিন্ন নামে খেপানো হয়। তবে দুবার টাইফয়েড আর একবার জন্ডিস হলে ওরাও আমার মত রান্না শুরু করত। 🙂

    Like

    • ধন্যবাদ শুভ ভাই। পালং শাকের রান্নায় আপনাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।

      * আপনি নিজে রান্না করেন জেনে খুব খুশি হলাম। বন্ধুরা এখন আপনাকে খেপাচ্ছে বটে! একদিন ওরা মাথায় হাত দিয়ে কাঁদবে আর আপনি তা দেখবেন। হয়ত এই রান্নার জন্যই আপনি সেরা হয়ে যাবেন, ওরা আপনাকে দেখতেই থাকবে! ওদের কথায় কান না দিয়ে আরো এক্সপেরিম্যান্ট করুন এবং চালিয়ে যান। মাঝে মাঝে রান্না করে ওদের খাওয়াবেন।

      * জীবন একদিনের নয়! আমি রান্না না জানার জন্য কত বেলা না খেয়ে কিংবা আবোল তাবোল খেয়ে ছিলাম, এখন মনে পড়লে হাসি আসে! অথচ হাতের কাছে সবই ছিল। প্রবাসে টানা প্রায় সাড়ে নয় বছর ছিলাম। এমন দিন গেছে শুধু বিস্কুট খেয়ে দিন পার করেছি, অথচ বাসায় চুলা, হাড়িপাতিল ও সামগ্রী ছিল। না জানার কারনে, চুলার ধারেও যাই নাই। যাই হোক, রান্না জানলে হয়ত আরো ভাল থাকতাম, টাকা বাঁচত, বন্ধুদের আরো ভালবাসা পেতাম।

      * অলিভ হচ্ছে একটা ছোট ফল যা আমাদের দেশে হয় না। তবে এখন নানান গ্রোসারীতে প্যাকেটে বা কোটায় পাওয়া যায়। অলিভ থেকে তেল বানানো হয় যা অত্যান্ত স্বাস্থ্য উপযোগী। ইউরোপে বেশি হয়, সারা বিশ্বে তা পাওয়া যায়। অনেজ দেশে অলিভ ছাড়া রান্না কল্পনাও করতে পারে না। আশা করি গ্রোসারীতে খুঁজে দেখবেন এবং পাবেন।

      আপনাকে বিশেষ বিশেষ অভিনন্ধন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং আশা করছি সাথে থাকবেন।

      Like

      • সাথে আছি। আমি ছোট থেকেই রান্নার অ, আ গুল জানি। আম্মা সরকারি চাকুরে ছিলেন। খুব তাড়াহুড়ার রান্না সেরে অফিস যেতে হত। আমিও রান্না মনমত না হলে খেতাম না। পরে নিজেই কিছু একটা বানিয়ে খেয়ে নিতাম। এভাবেই শুরু। বন্ধুমহল আমার খিচুড়ি ও Chow Mein এর ফ্যান। সবচে মজা লাগে ছুটির দিনগুলোতে। সবাই ক্যান্টিন ডাইনিং এর জন্যে হা হুতাশ করে। আর আমি দিব্যি আমার মত আইটেম রাধি। আর রান্না করা একটা আর্ট এর মত লাগে। রেসিপি দেখে ট্রাই করি। নতুন কিছু করার মজা পাই।

        Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]