অনেক ভেবে দেখেছি, আসলে আমরা যা বলি না কেন, আমরা কিন্তু আর মাছে ভাতে বাঙ্গালী নেই! আমরা যদিও মাছ পছন্দ করি কিন্তু দূষণ, দাম ও ভেজালের কারনে আর মাছ চলছে না! জ্যান্ত মাছ রান্না করে খাওয়া এখন অনেক কঠিন এবং দুরহ ব্যাপার। কাজে কাজেই আমার মনে হয় মুরগীই ভরসা! মেহমান দারী থেকে প্রায় সব কিছুতেই এখন মুরগী না হলে চলে না। ফার্মের মুরগী এসে এই ব্যবস্থা আরো জোরদার করে দিয়েছে।
রেসিপি ব্লগে মুরগীর অনেক ধরনের রান্না দেখিয়েছি। তবুও কত কি মুরগী রান্না! আর একটা ব্যাপার আসলে প্রতিটা রান্নাই ইউনিক রান্না। যদিও আমরা বলি এটার নাম এটা, কিন্তু রান্না যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি করেন, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাই আমার কাছে প্রতিটা রান্নাই ইউনিক এবং সিগেল! চলুন আজ আর একবার মুরগীর গোশত রান্না দেখি।
রেসিপি পরিমাণঃ (পরিমাণ অনুমান করে দেয়া হয়েছে, সামান্য এদিক ওদিকে কি আসে যায়)
– চার টুকরা মুরগী মাংস (দুই জনের জন্য)
– এক কাপ পেঁয়াজ কুচি (বেরেস্তা বানিয়ে রাখতে হবে)
– এক চামচ আদা বাটা
– দুই চামচ রসুন বাটা
– পরিমাণ মত কাঁচা মরিচ (ঝাল দেখে, শুকনা মরিচ গুড়া ব্যবহার করা হয় নাই, কাজেই একটু বেশী)
– এক চামচ জিরা
– এক চামচ হলুদ গুড়া
– গরম মশলা; তিন চারটে এলাচি, কয়েক টুকরা দারুচিনি
– হাফ চামচ চিনি
– পরিমাণ মত লবণ
– পরিমাণ মত তেল/ পানি
প্রণালীঃ
কুড়াইতে তেল গরম করে বেরেস্তা উঠিয়ে নিন। (ছবিটা আগের একটা পোষ্ট থেকে নেয়া হয়েছে) সেই কড়াইতেই রান্না শুরু করুন।
আদা বাটা, রসুন বাটা, কাঁচা মরিচ (ঝাল দেখে, শুকনা মরিচ গুড়া ব্যবহার করা হয় নাই, কাজেই একটু বেশী), জিরা, হলুদ গুড়া, চিনি, লবণ মিশিয়ে গ্রাইণ্ড করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে গরম মশলা (তিন চারটে এলাচি, কয়েক টুকরা দারুচিনি) এবং গ্রাইণ্ড করা মশলা দিয়ে দিয়ে ভাল করে কষাতে থাকুন।
কষানো হয়ে গেলে তাতে মুরগীর গোশতে দিয়ে দিন।
এক কাপ গরম পানি দিয়ে ঝোল দিন। এবং মিনিট বিশেকের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঘুরে আসুন। তবে ঘুরতে গিয়ে ভুলে যাবেন না! রান্না ভালবাসা চায়, ভালবাসা না থাকলে রান্না স্বাদের হয় না। রান্না আপনার ত্যাগ পছন্দ করে, শুরু রান্না করে ফেললেই চলে না, সময় দিতে হয়। হা হা হা… (চান্স পেলেই কথা, নিজকে টকশোর অলোচক মনে হয় আজকাল!)
আসলে এটাই আমার রান্না এবং গল্প! রান্নাঘরে আমি শুধু টিকে থাকতে পেরেছি এই গল্প করেই! অনেকটা রান্নাকে ছেপে ধরেই! স্ত্রীর সাথে রান্নাঘরে টিকে থাকা সহজ নয়, ড্রয়িং রুমে টিকা যায় না আর আপনি বলছেন রান্নাঘর! হা হা হা…। আসলে সব জায়গাতেই আমাদের মতের অমিল! দেশের ২০ কোটি মানুষের ২০ কোটি মত! সবাই ইউনিক! তবে আমি মনে করি সব জায়গাতে নিজের মতামত না প্রকাশ করে অন্য কেহ মতের কাছাকাছি হলে তাকে সমর্থন করাই উচিত। আমি সেই চেষ্টা করি বলে আমার বন্ধুর সংখ্যা বেশি, মনমালিন্য কম। স্ত্রীর সাথে অন্ডারস্ট্যান্ডিং বেশ! হা হা হা…।
চলেন আবার রান্নায় যাই! রান্না ছেড়ে টিভি কিংবা খোশগল্প করলে রান্না নষ্ট বা পুড়ে যাবেই। আগুনের কাছে সব কিছুই শেষ হয়ে পড়ে! সুতারাং খেয়াল কইর্যা আপা, ভাইজান!
মুরগীর গোশত নরম হলে বেরেস্তা গুলো ছিটিয়ে দিন।
ভাল করে মিশিয়ে ফাইন্যাল লবণ দেখুন। লাগলে দিন, না লাগলে ওকে বলুন। চুলা থেকে নামানোর আগে থাকলে সামান্য বিলাতি ধনিয়া ছিটিয়ে দিতে পারেন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। আমরা গা গা ঝোল রেখেছি। আপনি চাইলে আরো রাখতে পারেন।
আমি নিশ্চিত খেয়ে বলতেই হবে, ডিলিশিয়াস।
এই রান্নাটা আমি ব্যচেলার্স (দেশে বিদেশের) জন্য করেছি। সামনে ঈদ আসছে, হাতে অফুরন্ত সময়। যে কোন ডিপার্ট্মেন্টাল স্টোর থেকে কাটা মুরগীর গোশত কিনে খুব সহজে বাসায় এই রান্না করতে পারেন।
আমি জানি ঈদের দিনে বা তার আগে পরে কয়েকদিনে ব্যচেলারগন কি কি কষ্ট করেন! কত ঈদের দিনে আমি না খেয়ে কিংবা হাবিজাবি খেয়ে কাটিয়েছি। এখন ভাবি, হাতের কাছে তো সবই ছিল তবু কেন এমন হল? আসলে রান্না না জানা এবং আলস্য! আশা করি আপনারা এমন আলস্য দেখাবেন না।
রান্না জানাটা একটা বিশেষ গুন। এই গুনের কারনেও আপনি জীবনে অনেক ভাল কিছু করে ফেলতে পারেন।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
এই যা! আমি তো ব্যাচেলর নই!! এই পোস্ট পড়ে কোন অন্যায় করে ফেললাম না তো?
কি করবো রে ভাই? সাহাদাত উদরাজীর পোস্ট, না পড়ে তো থাকতে পারি না!!
LikeLike
হা হা হা…। কোন ব্যচেলরতো পড়ছে না! আপনি পড়ে এই পোষ্টের পরিপূর্নতা দিয়েছেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
দারুন পোস্ট।
রান্না জিনিসটা একটু চেষ্টা করলে তেমন কোনো কঠিনই নয়।
হুদা ভাইয়ের মন্তব্য পড়ে হাসছি এখনও।
ধন্যবাদ রইল প্রিয় সাহাদাত ভাই। আর ঈদে আপনার ডিশগুলোর লিস্ট জানতে চাই।
LikeLike
দাইফ ভাই, এবারে আমাদের ঈদ তেমন ভাল হবে বলে মনে হচ্ছে না। ছোট ভাইয়ের স্ত্রী এই কিছুক্ষণ আগে এনজিওগ্রাম করে বাসায় ফিরে গেল। মরা যাবার অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল।
আম্মা নেই দেশে, সব মিলিয়ে হিবিজিবি চলছে। আমিও চুপচাপ আছি।
ফ্রিজে একটা কোরাল মাছ আছে আমি তা দিয়ে একটা কিছু করব ভাবছি, যদি সময় পাই।
এদিকে এন্রয়েডের নুতন একটা মোবাইল কিনে সেটা সারাক্ষণ দেখেই চলছি, কতক্ষণ আমি কতক্ষণ আমার ছেলে!
ঈদের দিনও এমন চলবে বলে মনে হচ্ছে।
LikeLike
আহা, জেনে বেশ খারাপ লাগলো সাহাদাত ভাই। দোয়া করি যেন সবাইকে নিয়ে ভাল ভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারেন। আর নতুন কিছু কিনলে প্রথম ক’দিন সেটা নিয়ে একটু নাড়াচাড়া হবেই।
শুভকামনা রইল ভাই।
LikeLike
ইদ মুবারক সাহাদাত ভাই! অনেক শুভকামনা আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য।
LikeLike
আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা।
আশাকরি ঈদ ভাল করে মজা নিয়ে কাটিয়েছেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
I’m just confused….4 pieces chicken and the amount of spice….is it ok?
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। বেশি না কম মনে হচ্ছে! আমি কিন্তু সব বলে দিয়েছি! আবার দেখে নিন। টুকরা গুলো কিন্তু বড় ছিল! হা হা হা…
রেসিপি পরিমাণঃ (পরিমাণ অনুমান করে দেয়া হয়েছে, সামান্য এদিক ওদিকে কি আসে যায়)
– চার টুকরা মুরগী মাংস (দুই জনের জন্য)
– এক কাপ পেঁয়াজ কুচি (বেরেস্তা বানিয়ে রাখতে হবে)
– এক চামচ আদা বাটা
– দুই চামচ রসুন বাটা
– পরিমাণ মত কাঁচা মরিচ (ঝাল দেখে, শুকনা মরিচ গুড়া ব্যবহার করা হয় নাই, কাজেই একটু বেশী)
– এক চামচ জিরা
– এক চামচ হলুদ গুড়া
– গরম মশলা; তিন চারটে এলাচি, কয়েক টুকরা দারুচিনি
– হাফ চামচ চিনি
– পরিমাণ মত লবণ
– পরিমাণ মত তেল/ পানি
আশা করি নিয়মিত সাথে থাকবেন। কোথায়ও ভুল হলে সাথে সাথেই জানাবেন। আমিও শিখছি। আপনার কোন প্রিয় রেসিপি থাকলে দিন, রান্না করে খাই এবং রেসিপি হিসাবে প্রকাশ করি।
শুভেচ্ছা নিন প্রিয় বোন।
LikeLike
thanks …..I don’t cook often but love to see your cooking picturs. really good , could you give me a recipe of sauce chicken/ sweet and sour chicken ? highly motivated by your site.
cheers….
LikeLike
Thank you very much Dear Sister Saima. Will try your request. Please keep watching.
Best wishes always.
LikeLike
আজকে এই রেসিপিতে মুরগী রান্না করলাম, ভালই হইছে আল্লাহর রহমতে 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ MSU ভাই,
আমরা যে উদ্দেশে এই রান্না গুলো নেটে দিচ্ছি, আপনাদের আগ্রহে সেটার সফলতা দেখছি। আপনারা রান্না করেন বলে আমরা নিজদের সন্মানিত বোধ করছি। রান্না হচ্ছে একটা ভালবাসার নাম। রান্না করে প্রিয়জনদের খাওয়াতে কার না ভাল লাগে।
আপনি রান্না করেন যেনে খুব ভাল লাগল। রান্নায় কিছু জানার থাকলে এবং কোন রেসিপি জানা থাকলে আমাদের জানাতে ভুলবেন না। আমরাও আপনার রান্না খেয়ে দেখবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
vai ami kicchu parina, tobe majjhe majhe apnar blog dekhe ranna kori erki
LikeLike
চেষ্টা চলুক ব্রাদার।
রান্না হচ্ছে একটা অভিজ্ঞতা লব্ধ ব্যাপার, যার অভিজ্ঞতা বেশি সে ভাল রান্না করবেই (তবে রান্নার প্রতি ভালবাসা না থাকলে রান্না কখনো ভাল হয় না)।
মাঝে মাঝে রান্না করুন, জীবন ভাল কাটবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আজ এই রেসেপি করেছি তবে এখনও খাইনি। আশাকরি দারুন হবে।
LikeLike