গ্যালারি

রেসিপিঃ পুঁইশাক ও শিমের বিচি


দুনিয়াতে মানুষ কত কি খায়। এক দেশের খাবার অন্য দেশের মানুষের হাসাহাসির কারন। কিন্তু তাতে কি? খাবারের কিছু যায় আসে না।  খাবার খাবারই। খাবার সুস্বাদু হলেই হল। যারা খাবার নিয়ে হাসাহাসি করেন আমি মনে করি তাদের জ্ঞানের সমস্যা আছে, তিনি শুধু নিজকে নিয়ে নিজে আছেন! দুনিয়া নিয়ে নাই। আসলে সত্য কথা হচ্ছে, কম্বিনেশন। কোনটার সাথে কোনটা মিশালে দেখতে এবং খেতে ভাল লাগবে তা বুঝতে হবে। হা হা হা… আবার কনফিউশন!

আমার যতদূর মনে পড়ে আমাদের ছোট বেলায় আমার আম্মা এমন ধরনের একটা রান্না করতেন (তিনি কাছে নেই বলে জানতে পারছি না), আমার হালকা হালকা মনে পড়ছে। কম্বিনেশন একটু ভিন্ন ধরনের কিন্তু স্বাদের কথা এখনো মনে আছে। গত কয়েকদিন আগে আমি আমার ব্যাটারিকে বললাম ঘরে সিম বিচি, চিংড়ী আছে, আমি পুঁইশাক নিয়ে আসি, একটা রান্না করব।

বলেই আমার মনে হল, তিনি বিষয়টা ভালভাবে নিতে পারেন নাই। তবে আমার চিন্তা করা কম্বিনেশন যে বেশী খারাপ হয় না তা তিনি জানেন এবং আমাকে হেল্প করার জন্য লেগে পড়লেন। আমি একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি, তিনি আমাকে রান্নাঘরে দেখতে বেশ পছন্দ করেন। এদিকে এটা সত্য যে, পুরুষের স্ত্রীর সাথে রান্নাঘরে টিকে থাকা বেশ কঠিন কাজ। আমি সেই কাজটাই করে যাচ্ছি!

তবে রান্না শেষে তিনি খেয়ে বললেন বেশ চমৎকার। চলুন আর গল্প না বলে রান্না দেখে নেই।

প্রস্তুত প্রণালীঃ

গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি ও রসুন বাটা সামান্য লব দিয়ে ভাল করে ভেজে নিতে হবে।


হাফ কাপ পানি দিয়ে তাতে সামান্য গুড়া মরিচ এবং সামান্য হলুদ দিয়ে এমন একটা ঝোল বানিয়ে নিতে হবে।


সিদ্ব করা সিমের বিচি (বেশ নরম করে ফেলতে হবে) দিয়ে দিন।


এবার কয়েকটা চিংড়ী মাছ…


ভেজে দুই কাপ পানি (গরম হলে ভাল) দিয়ে তাতে কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। সিমের বিচি যেন বেশ নরম হয়ে যায়, কিছু গলে গেলেও ভাল।


এবার পুঁই শাক দেবার পালা।


ভাল করে উল্ট পালট


সবজি থেকে পানি বের হবে। (লাগলে সামান্য গরম পানি দিতে পারেন)


মিনিট বিশেকের মধ্যে এমন একটা অবস্থা দাঁড়িয়ে যাবে। ফাইন্যাল লবণ দেখুন, লাগলে দিন। শাকে লবণ পরিমাণ মত হওয়া দরকার। ঝোল কেমন রাখবেন এটা আপনি নিজে সিদ্বান্ত নিন। ঝোল কমাতে আগুনের আঁচ বাড়িয়ে দিতে পারেন।


ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


রেসিপি প্রিয় বন্ধুরা, আপনারাই বলেন, কেমন দেখাচ্ছে। পুঁইশাক ও শিমের বিচি’র কম্বিনেশন চলবে কি চলবে না!

সবাইকে শুভেচ্ছা।

8 responses to “রেসিপিঃ পুঁইশাক ও শিমের বিচি

  1. দারুন!!!

    আমি কাঠালের বিচি আর অল্প পুইশাক দিয়ে শুটকি রান্না খেয়েছিলাম কুমিল্লার মানুষের কাছে। খুব মজা লাগে। এখন আমিও মাঝে মধ্যে করি।

    সিমের বিচি সিলেটে খুবই জনপ্রিয়।
    আমি পাঙ্গাস, রুইএর মাথা দিয়ে সিমের বিচি রান্না করি।
    আবার শুধু পুইশাক দিয়েই এই মাথাগুলো রান্না করি।
    খেতে খুব ভালো লাগে।

    আপনার রান্নার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আছে বলেই বোন মনসুরা আপনাকে তার রাজত্ব অর্ধেক দান করেছেন। বেশীরভাগ পুরুষই তো রান্নাঘরে যান শুধু হুল ফোটাতে। :p

    Like

    • যাক, আপনার কমেন্ট পড়ে ভাল লাগল। হা বোন, এটা সত্য বেশীর ভাগ ছেলেরা (আমার বন্ধুদের দেখেছি) রান্না ঘরে সঠিক ভাবে নিজকে উপস্থাপন করে না। এমন ভাব মারে, যেন সে সব জানে। আমি কখনো এমন করি না, যা জানি তা বলি। না জানা থাকলে শিখতে চেষ্টা করি। হা হা হা…

      কুমিল্লায় নাকি শুঁটকী মাছ বেশী রান্না হয়। এটাও জেনে বললাম। কুমিল্লায় পড়াশুনার হার এজন্য বেশী… শুঁটকী খেলে (ঝাল খেলে) ব্রেন খুলে যায়…

      কাঠালের বিচি আর অল্প পুইশাক দিয়ে শুটকি রান্না! আহ…।

      Like

  2. পুষ্টিকর এক খাবার।
    প্রতি বেলায় (দুপুর বা রাতে) এ ধরনের অন্তত একটি ডিশ থাকা উচিত। আমাদের তো আবার পুষ্টিকর খাবারে ব্যাপক অনীহা, হা হা হা।

    ধন্যবাদ রইল সাহাদাত ভাই।

    Like

    • ধন্যবাদ দাইফ ভাই। শাক সবজিতেও ভেজাল যে হারে দেখছি তাতে সামনে আর কিছুই খেতে হবে না!

      ট্যাবলেট আমাদের পুষ্টি যোগাবে…

      ভেজালে দেশটা ডুবে গেল। গতকাল ইনডিপেন্ডন্ট টিভিতে তালাশ অনুষ্ঠানে দেখলাম… ভেজাল ছাড়া আর কিছুই নাই…।

      Like

  3. এটা সত্য যে, পুরুষের স্ত্রীর সাথে রান্নাঘরে টিকে থাকা বেশ কঠিন কাজ। আমি সেই কাজটাই করে যাচ্ছি! > দারুন!!!

    ঝোল কমাতে আগুনের আঁচ বাড়িয়ে দিতে পারেন। > বিজ্ঞান সম্মত পরামর্শ!!

    পুঁইশাক ও শিমের বিচি’র কম্বিনেশন চলবে কি চলবে না! > চলবে না আবার? শুধু কী চলবে, একেবারে দৌড়াবে।

    Like

  4. পুঁইশাক চচ্চরি বা চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাক অথবা মাছের মাথা দিয়ে পুঁইশাক রান্না মা অএক করেছেন, কিন্তু শিমের বিচি দিয়ে হয়নি একবারও। মার কাছে রেসিপিটি পৌঁছে দিয়েছি, এবার তাঁর হাতযশ। ধন্যবাদ জানিয়েছেন মা আপনাকে।

    Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]