গরমে ঘেমে নেয়ে ঘরে প্রবেশ করলেই যেমন আমাদের এক গ্লাস ঠাণ্ডা শরবত হলে ভাল লাগে তেমনি আমাদের কিছু উৎসব আছে তাতে হালুয়া রুটি হলে জমে ভাল! হালুয়া হচ্ছে মিষ্টির ছোট বোন! যারা মিষ্টি পছন্দ করেন না তারা কম মিষ্টি হালুয়াতেই থাকতে চান। তা ছাড়া হালুয়া রুটির ভাগ বলে একটা কথা আমাদের সমাজে চালু আছে! নিজের হালুয়া রুটির ভাগ যারা বেশী নিতে পারে তারাই দুনিয়াতে কামিয়াব হয়! দুই দিনের দুনিয়া। বলতে অসুবিধা নাই, আমি নিজেও হালুয়া রুটি পছন্দ করি! সকালের নাস্তায় আমার বেশ ভাল লাগে।তা ছাড়া খাবার শেষে যদি একটু হালুয়া হয় তবে আর কথা নেই! মুখ মিষ্ট করে পেটের ষোল কলা পূর্ন হয়ে যায়!
আজ আপনাদের খুব সহজ পানি পানের মত একটা হালুয়া বানানো দেখাবো, সেটা আমি মনে করি হালুয়া জগতের বেসিক একটা রান্না/রেসিপি। এটা জানা থাকলেই যে কোন মানব নিজেই হালুয়া বানিয়ে মন ভরে খেতে পারবে বলে আমি মনে করি! চলুন সময় না নিয়ে এবার দেখে ফেলি! বুটের ডালের হালুয়া।
পরিমাণঃ (পরিমাণ অনুমান করে দেয়া হয়েছে, সামান্য এদিক ওদিকে কি আসে যায়)
– হাফ কেজি বুটের ডাল
– এক কাপ দুধ (ঘন), ভাল করে জ্বাল দিয়ে দুই কাপকে এক কাপ করে নেয়া
– দুই কাপ চিনি
– কয়েকটা এলাচি
– কয়েক টুকরা দারুচিনি
– কয়েকটা তেজপাতা (না থাকলে নাই)
– দুই চামচ ঘি
– হাফ কাপ তেল
– কয়েকটা কিসমিস (পরিবেশনে সৌন্দর্য আনার জন্য)
প্রস্তুত প্রণালীঃ
বুটের ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
বুটের ডাল সিদ্ব করে নিন।
সিদ্ব বুটের ডাল বেটে বা গ্রাইন্ড করে পেষ্ট/কাই বানিয়ে ফেলুন এবং এক কাপ গরম ঘন দুধ দিয়ে মাখিয়ে নিন (অনেকে পরেও এই দুধ দিয়ে থাকেন)
এবার হাড়িতে দুই চামচ ঘি (ঘি বেশি দিলে ভাল কিন্তু শরীরের জন্য ঘি পরিত্যাজ্য!) এবং হাফ কাপ তেল গরম করে তাতে কয়েকটা এলাচি, কয়েক টুকরা দারুচিনি এবং কয়েকটা তেজপাতা দিয়ে দিন।
তেল ভাল গরম হলে বুটের ডালের কাই দিয়ে দিন এবং নাড়িয়ে ভাল করে মিশিয়ে দিন।
এবার চিনি দিন এবং নাড়াতেই থাকুন।
হালুয়া রান্নায় এই অংশটা অত্যান্ত গুরুত্ব পূর্ন এবং বিপদজনক। যত গাঢ় হবে ততই বিপদ! আবার কাছে থেকে না নাড়ালে হাড়ির তলায় লেগে যাবে বা পুড়ে পুরা চেষ্টাই বৃথা যাবে! অগ্নেয়গিরির মত বুদবুদ উঠে চিটকে আপনার শরীরে লেগে পুড়ে যেতে পারে। বিষয়টা আমি কাছ থেকে দেখে ভয় পেয়েছি! সাবধানে একটু দূরে থেকে কিংবা হাতে গ্লাভস, শরীর মোটা কাপড়ে ঢেকে এবং চোখে সানগ্লাস দিয়ে কাছে থাকতে পারেন।
হালুয়ায় পানি শুকিয়ে এমন একটা পর্যায় এসে যাবে। ব্যস হালুয়া হয়ে গেল।
এবার টেবিলে চওড়া প্লেটে হালুয়া বিছিয়ে দিন এবং ঠাণ্ডা করে ফেলুন। চাইলে, মনে যা আসে তা লিখুন! এই সময় কিছুক্ষণের জন্য ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।
হাতে তেল লাগিয়ে চাপ দিয়ে লিখা মুছে ফেলুন! এবং ছুরিতে তেল লাগিয়ে নানা স্টাইলে কাটুন।
পরিবেশনের সৌন্দর্য বর্ধনে প্রতি পিসে একটা করে কিসমিস দিয়ে দিন। যার সেটা ইচ্ছা নিয়ে খাবে…।
হালুয়া আসলেই একটা শিল্প! নিজের হালুয়ার ভাগ নিজেই বুঝে নিন।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
(PhotoBucket to Google)
এটা আমারও খুব প্রিয়। আমার মরহুম শ্বশুর আব্বারও আমার হাতের এই হালুয়া খুব পছন্দ ছিলো।
কিন্তু যখন টগবগ করে ফুটে উঠে, তখন সামাল দেয়াই মুশকিল। 😀
LikeLike
ধন্যবাদ আপা,
টগবগ করে ফুটে উঠা দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। আসলেই এটা যে কোন পুরুষকে দেখানো দরকার, তাতে বুঝবে মায়েরা, বোনেরা, স্ত্রী, মেয়েরা কি কষ্ট করে এক একটা খাবার বানিয়ে আমাদের সামনে হাজির করে।
– কুম্ভভাই, হালুয়া পছন্দ করেন কি না!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পছন্দ হয়েছে। এই জিনিষ খেতে ভালো, যদি সহ্য হয়!
LikeLike
হা হা হা… আপনার জন্য কিন্তু ঘি বেশী দেয়া হয় নাই! কিন্তু আগের দিনে নাকি পুরাই ঘি দিয়ে রান্না হত!
সহ্য হয়ে যাবে… একদিন…
LikeLike
অল্প খাই তো! বেশি খেলেই না বিপদ!!
[আমার ব্লগে যাচ্ছেন না কেন? একটু গোছগাছ করে দিয়ে আসুন। প্রথম পাতা, দ্বিতীয় পাতা বের করে দেবেন। আর দেবেন পোস্টগুলোর অংশবিশেষ দেখার ব্যবস্থা, যার শেষে লেখা থাকবে ‘বিস্তারিত’ … যেখানে ক্লিক করলে পুরো পোষ্ট পড়া যাবে। তিনটি কলামের বাম দিকের কলামে এনে দেবেন ডান দিকের কলামের কিছু লেখা। ….. বাকীটা আপনার ইচ্ছা মত।]
LikeLike
হা হা হা…।
(আমিও শিখছি!)
LikeLike
খাইতে খাইতে জীবন পার। তবুও উদারজি ভাই লেখা চখামই পাইলাম।
LikeLike
ধন্যবাদ অর্নব ভায়া।
LikeLike
স্বাদ কেমন? 🙂
LikeLike
হা হা হা…।।
স্বাদ না হলে আমি কোন রেসিপি দেই না!
আমার ভাল লেগেছিল। চিনি আমি নিজে দিয়েছি বলে মিষ্টি কম হয়েছে! এতে আমি খুশি হয়েছি…
শুভেচ্ছা।
LikeLike
হা হা হা… আপনার মজা করার বিষয় দেখে অবাক হই!
আরো কিছু হালুয়ার রেসিপি দিতে পারেন। সামনে আমাদের কাজে লাগবে।
LikeLike
ধন্যবাদ ফারুক ভাই। আপনার কমেন্ট পড়ে হাসছি…
হা, সামনে রোজা, ঈদ আসছে! কিছু হালুয়ার রেসিপি মন্দ লাগবে না…
আশা করি সাথে থাকবেন। শুভেচ্ছা।
LikeLike
One of my favorite food…….. 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ জানাই! হ্যালো জামি!
LikeLike
হালুয়াতো আমার প্রিয় কিন্তু কম মিষ্টি হতে হবে! মোবাইলে পোস্ট দেখে আম্মুকে দেখিয়েছিলাম। আমি অবশ্য ছোলা ডালের হালুয়া খেয়েছি। আম্মু রান্না করার আশ্বাস দিয়েছে! ( একটা গোপন কথা বলছি> আমার হালুয়াটা নিজে বানিয়ে খেতে ইচ্ছা করছে!! 🙂 )
LikeLike
হা হা হা…।।
আমিও মিষ্টি কম চাই।
এটা বানাতে রান্নায় একটু অভিজ্ঞ হতে হবে…
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমি ভয়াবহ মিষ্টির পাগল। আমার পুরো পরিবারই এমন। তবে এখন যা বলবো তা শুনে হয়তো ব্লগ থেকেই বের করে দেবেন!! আমি বুটের হালুয়া কেন যেন একদম পছন্দ করিনা। হা হা হা!
তবে রেসিপির জন্য ধন্যবাদ অবশ্যই রইল সাহাদাত ভাই।
LikeLike
দাইফ ভাই, আজ কাল আর হালুয়ার দিন কোথায়? দাইবেটিক্সের কারনে অনেকেই এখন আর মিষ্টিজাত কিছু খেতে চান না!
তবে বছরে একদিন না খেলে কি হয়!
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ ক্ষীর (রেডিমেট) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
কিসমিস নিয়ে কিছু কথা আছে আমার। ক্ষীরে বা হালুয়াতে যে কিসমিস দেওয়া হয়, সেগুলোকে ভিজিয়ে রেখে হালকা ভেজে নিলে বেশ স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে। এই স্বাস্থ্যবান কিসমিস দিলে হালুয়া বা ক্ষীর দেখতে অনেক সুশ্রী হয়।
LikeLike
হুদা ভাই, আপনার সাথে একমত। আসলে সময়! রান্নায় যে সময়ের প্রয়োজন তা এখন পাচ্ছি কোথায়।
আগামীতে এটা মনে রাখবো। আপনি দেখছি……… হা হা হা…। স্বাস্থ্যবান কিসমিস!
LikeLike
এটা আমার খুব প্রিয় একটা মিষ্টি, ছোট্টবেলায় মা বানিয়ে দিতেন, এখানে বলে ছোলার ডালের বরফি। উফফফফ ভেবেই জিভে জল আসছে। কদ্দিন হয়ে গেল খাইনি। 😦
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। ছোলার ডালের বরফি নাম জেনে নিলাম।
তবে এটা বানাতে চুলার ধারে সাবধান থাকতে হবে।
LikeLike
বাই দ্য ওয়ে, হালুয়ার উপর অমন সুন্দর করে “হালুয়া” টা লিখলো কে? আপনার ছেলে নাকি?? তার নামটা জানার ইচ্ছে রইল?
LikeLike
হা বোন, আপনি সঠিক ধরেছেন।
আমাদের ছেলের নাম ‘মাহাতাব উদরাজী’ আর ডাক নাম ‘রাঈম’ তবে ভারচুয়্যালি আমি ওকে ‘বুলেট’ ডাকি!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
বুলেট, বাহ! দুর্ধষ্য নাম।
LikeLike
ওর কারবার বুলেটের মতই! কিছু চাইলে বুলেটের গতিতে সে সেটা আশা করে…।
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ ক্ষীর (রেডিমেট) | OntoreBangladesh
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ সুজির হালুয়া (সোনামনি স্পেশাল) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ সুজির হালুয়া (সোনামনি স্পেশাল) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
ভাইয়া দেখেন তো ছবি আসছে না কেন ?
আমি নিচের ছবির মত পাচ্ছি
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। আমি ফ্রীতে ফটোবাকেটে আমার ছবি গুলো রাখি, মাঝে মাঝে ফটো বাকেট আমাকে মনে করিয়ে দেয় তাদের জায়গা টাকা দিয়ে কিনে ব্যবহার করার জন্য। তবে সেটা সাময়িক।
এখন আবার ঠিক দেখা যাচ্ছে। তবে এখন থেকে সব ছবি ভাবছি গুগলে রাখবো। আপনি এখন দেখতে পারেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
LikeLike
ধন্যবাদ বোন,
এখন দেখুন, ঠিক দেখাচ্ছে, এটা ফটোবাকেটের সমস্যা।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
মানসুরা হোসেন: আপনার রান্নার প্রশংসা করতেই হয় ৷ বিশেষ করে আলাদা আলাদা ছবিতে হাতেকলমে দেখিয়ে দেয়ার জন্য ৷ ধন্যবাদ ৷
LikeLike
yes, I like it
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
বুটের ডালের হালুয়া বেশ মজাদার। বছরে আমরাও এক দুইবার খেয়ে থাকি!
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
onk easy n nice recipe… liked it…
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ সুজির হালুয়া (সোনামনি স্পেশাল) - Daily 5 Minute