যে কোন মাছ দিয়ে যে কোন তরকারী বা শাক সবজি রান্না করা যায়। তবে কোন মাছের সাথে কোন তরকারী ভাল মানায় কিংবা স্বাদ বেশী হয় তা বুঝতে হবে! ছোট বেলা থেকে পরিবারে দেখে দেখে আমাদের চোখ ও মুখ এই ব্যাপারটা মেনে নিয়ে থাকে! আমরা মাছ ও তরকারীর যে কম্বিনেশন দেখে বড় হই তা ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারি না! কিন্তু আপনি চাইলে এমন কম্বিনেশনের এক্স পেরিমেন্ট চালিয়ে দেখতে পারেন! আমি মাঝে মাঝেই এমন এক্সপেরিমেন্ট চালাই! এটার সাথে ওটা!
আমার বেশ ভাল লাগে, এতে গতানুগতিক রান্না হয় না, রান্নাতে বৈচিত্র্য আসে, পরিবারের সবাই ভালবাসে! গত কাল আমার প্রিয় সবজি চিচিংগা ও শুঁটকীর একটা কম্বিনেশন করে রান্না করেছিলাম! প্রথম প্রথম আমার ব্যাটারী হাসাহাসি করলেও পরে খেতে বসে আমাকে বললেন, তোমার জন্য আজ একটু বেশি ভাল খেলাম এবং তা প্রান ভরে! না, আজ আপনাদের সেই রান্নাটা দেখাবো না! আজকের রান্না রামচোষ মাছ এবং বেন্ডী রান্না। রান্নাটা কিছুদিন আগে করেছিলাম। বেশ মজার হয়েছিল! ফ্রিজে বেঁচে থাকা কিছু রামচোষ মাছ এবং কিছু বেন্ডী! দুটো মিশিয়ে একটা কুল করার চেষ্টা! তবে বেশ, ছোট ছোট পরিবার গুলোর এটা ছাড়া আর কি করার আছে? চলুন দেখে ফেলি, পানি খাবার মত সহজ ও সুন্দর!
রামচোষ মাছ গুলোতে হালকা লবণ ও হলুদ গুড়া মাখিয়ে গা তেলে ভেজে তুলে রাখুন ফেলুন।
বেন্ডী গুলোকেও একই কায়দায় হালকা ভেজে নিন। এটা শুধু নরম করে ফেলার জন্য।
এবার কড়াইতে তেল গরম করে পরিমাণ মত পেঁয়াজ কুচি, রসুন বাটা, মরিচ গুড়া, হলুদ গুড়া ও লবণ দিয়ে ভাল করে কষিয়ে তেল উঠিয়ে নিন। যত বেশী ভাজা হবে তত মজা বাড়বে! কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন। প্রয়োজনে এক কাপ পানি দিয়ে নিতে পারেন।
এবার রং ও ঘ্রাণ মনের মত হয়ে গেলে তাতে ভাজা রামচোষ ও বেন্ডী দিয়ে দিতে পারেন।
মাছ ও তরকারী এমন গড়াগড়ি খাবে! কেমন ঝোল রাখবেন তা আপনি নিজে ঠিক করুন। ঝোল কমাতে চাইলে আঁচ বাড়িয়ে দিন। এই অবস্থায় রেখে কোথায়ও যাবেন না… মিনিট ১০ লাগতে পারে।
ফাইন্যাল লবণ দেখুন! মাছ উল্টাতে সাবধান। মাছ ভেঙ্গে ফেললে চলবে না। খুন্তি দিয়ে নীচ থেকে উপরে, আলতোভাবে!
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
গরমাগরম……
(আগামীতে আমার প্রিয় চিচিঙ্গা এবং শুঁটকী মাছের এমন একটা কম্বিনেশনের রান্না দেখাবো। আমি নিশ্চিত ছবি গুলো দেখেই আপনারা বলবেন, ওয়াও!)
রামচোষ মাছের নাম এই প্রথম শুনলাম সাহাদাত ভাই…আর ভেন্ডিও আমার প্রিয় সবজির তালিকায় নেই। কিন্তু শেষ ছবিটা দেখে ক্যামন যেন খেতে ইচ্ছে হলো…খাবার দাবারে আগ্রহ থাকার এই এক বিপদ…রাত জেগে অষ্ট্রেলিয়ান মাস্টারশেফ দেখি…আর দিনে বাংলার শেফ সাহাদাত উদরাজী’র ব্লগ….:)
LikeLike
হা হা হা…। মাষ্টার সেফ অনুষ্ঠান আমিও অনেক দেখেছি… এখন আর সময় পাই না। তবে কিছু দিন আগে বাচ্চাদের রান্না দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম…। অস্ট্রেলিয়া তে শিশুরাও রান্না জানে… আমাদের শিশুদের রান্নাঘরে যেতে দিতে চাই না…।
আমার ছেলে আমাকে নেট শেফ বলে! আর আপনি বললেন, বাংলার শেফ!
হা হা হা…
আশাকরি ভাল ভাল খেয়ে দিন পার করছেন? রান্না নিজে করেন না হোটেল!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
😉 হুমম…জুনিয়র মাস্টারশেফ দেখে তো পুরা তাজ্জব হয়ে গেছিলাম। বাচ্চা বাচ্চা পোলাপানগুলো কি দারুণ রান্না করে!!! আমার রান্না মাঝে মাঝে নিজে…বেশিরভাগ সময় বুয়া..;) তবে মাঝে মাঝে এক্সপেরিমেন্টটা চলে ঠিকই…:)
LikeLike
শুধু বলি, সাবাস! এই মাঝে মাঝে কথাটা শুনেই মন ভাল হয়ে গেল। রান্না জানাটা গর্বের ব্যাপার।
LikeLike
আমি তো স্থির করেছি আগামী ৬ তারিখ বাসায় যাচ্ছি, সেখানে গিয়ে মা-বাবাকে আমার ধনিয়া পাতা আর কাঁচামরিচ দিযে মুরগী রান্না করে খাওয়াবো…:) নিয়ত পাক্কা…দেখা যাক..কি হয়..:)
LikeLike
আমি আপনার সাফল্য কামনা করি। একটা রেসিপি প্রিন্ট নিয়ে যাবেন। আর একটা কথা মুরগীর গোস্তকে মাঝে মাঝে কেটে দিতে ভুলবেন না, এতে মশলা ধনিয়া গোশতের ভিতর প্রবেশ করবে।
হা হা হা… খালাম্মা খালুকে আমাদের সালাম দিবেন। আপনি তাদের রান্না করে খাওয়াবেন বলে যে নিয়ত করলেন তা আমার চোখে পানি এসে গেল! আপনার মত সন্তান যাদের আছে তাদের আবার চিন্তা কি!
আমার হাতের রান্না আমার পিতা মাতাকে খাওয়াতে পারি নাই। বাবাকে আর কোনদিন পারব না, মা পড়ে আছেন প্রবাসে। তবে আমার ছেলে আমার রান্না খেয়ে যে তারিফ করে এবং হাসে তাই আমার মন ভরে যায়।
আপনার সাফল্য কামনা করি…
LikeLike
ধন্যবাদ সকল পরামর্শ ও উৎসাহ প্রদানের জন্য। রেসিপি’র জন্য ধন্যবাদ দিলাম না। 🙂
LikeLike
এটাই কি মাছটার আসল নাম? অন্য কোন নাম কি আছে এর?
LikeLike
জামি ভায়া, এই মাছটা বরিশালের মাছ। বেশ মজার আর সুস্বাদু। আমি এই নিয়ে চার /পাঁচ বার খেলাম। আমার পাশের বাসার বরিশালের বাসিন্দাদের থেকে আমি এই মাছ কিনতে শিখেছি… খেয়ে মজা পেয়ে এখন পেলেই কিনি।
তবে আমার রান্নাতো বোন বলেছেন এই মাছকে তাপসী মাছও বলা হয়। তিনি এই মাছ রান্না করেছেন এবং খেয়েছেন।
আপনি এই মাছের চেহারা এবং আরো দেখতে চাইলে আমার এই পোষ্ট দেখতে পারেন।
LikeLike
এটা তপসে মাছ।
ফেলুদার এক চরিত্র তপসে, এই মাছের নামে নাম।
এক বিখ্যাত কবির (নাম মনে করতে পারছি না) কবিতা আছে এই মাছ নিয়ে।
LikeLike
দারুন পোস্ট। ঢেঁড়শের কিছু রান্না দেখলেই তো জিভে জল আসে।
তৈরি করতে হবে একদিন।
ধন্যবাদ রইল প্রিয় সাহাদাত ভাই।
LikeLike
অনেকে আবার ঢেঁড়শ দেখলেই পালিয়ে যায়! আমিও একসময় পালাতাম, এখন ঢেঁড়শ দিয়েই একবেলা পার করে দিতে পারি…।
LikeLike
চেখে দেখতে পারলে মন্তব্য করা সহজ হত। মাছ খুব ভাল লাগে, তা যে কোন মাছই হোক না কেন।
LikeLike
হা, আমিও মাছ বেশী পছন্দ করি। যে মাছই হোক না কেন।
সাগর পাড়ে বসবাস করে মাছ না খেলে কি হয়!
LikeLike
উদারজী ভাই, সাগরের লইট্টা মাছ খেয়েছেন কখনো? লইট্টার একটা রেসিপি দেখতে চাই 🙂
LikeLike
আরে কি যে বলেন! আমি এবং লইট্টা! আমি এত বেশী লইট্টা মাছ খেয়েছি যে, আমার আম্মা আগে আমার জন্যই রান্না করতেন এখন আমার ব্যাটারী পেলেই আমার জন্য কিনে নেন, কোন কিছু চিন্তা না করেই!
হা, একদিন দেখিয়ে দেব। আর লইট্টা শূটকীতো আমার ফেবারেট! এবার চট্রগ্রাম থেকে দুই কেজি লইট্টা শুঁটকী কিনেছি! বুঝেন…।
শুভেচ্ছা।।
LikeLike
ঢেঁড়স বা ভেণ্ডি (বেণ্ডী লিখলেন কেন?) যে কোন ভাবেই সুস্বাদু! তবে তপসে মাছ খেয়ে তেমন মজা পাই না। দাম বেশি, কিন্তু সে অনু্যায়ী স্বাদের নয়।
ছবি দেখে অবশ্য বেশ লাগছে।
LikeLike
বানান ভুল আমার একটা মধ্যে একটা দুঃখজনক ব্যাপার। আমি সঠিক লিখতে চেষ্টা করি কিন্তু পারি না। আমার সাইটে আপনি যে কোন ভুল দেখলেই আমাকে মনে করিয়ে দেবেন, আমি খুশি হব। আগামীর জন্য শিখে নিব, সতর্ক থাকব।
তপসে মাছ আমার কাছে ভাল লাগে। হা, দাম একটু বেশী।
আপনাদের এলাকায় এই মাছ বেশী পাওয়া যায় বলে হয়ত এর কদর বুঝতে চাইছেন না! হা হা হা…
LikeLike
আবারও? না ভাই, এখন বলছেন খুশি হবেন। শেষে আমাকে দেবেন ব্যান করে! আর না হলে এমন মিষ্টি কথা শুনাবেন যে, …………………………..।
[আমার ব্লগের ‘প্রথম পাতা’ কোথায় গেল?]
LikeLike
হা হা হা……। ব্যানের ভয় আছে?
LikeLike
রান্নাতো ভাই তপসে মাছকে আবার রামচোষ লিখছেন? ( রাগের ইমো) চাপিলা মাছকে ভারতে বলে খয়রা। সিলেটে চাপিলা মাছকে বলে হুগা মাছ। আমি কি তাই বলে চাপিলাকে হুগা বলে লিখবো? তপসে লিখলে এই মাছটি যারা বাজারে দেখেও না চেনার দরুন কিনেন না, তারাও কিনবেন।
তবে এ মাছ ভাজলে এটার স্বাদ অনেক কমে যায়।
হুদা ভাই, রবীন্দ্রনাথ এই তপসে মাছ নিয়েই কবিতা লিখেছিলেন।
LikeLike
হা হা হা…। আপনার কমেন্ট পড়ে হাসতে হাসতে শেষ। হা, আগামীতে তপসে মাছ নামেই লিখব। যদিও এই মাছ আবার কবে কিনি কে জানে!
আমার ব্যাটারী না ভেজে খেতে রাজি নয় বলে এমন করতে হয়েছে।।
আমরা মাছ ভেজে রান্না করি না, কিন্তু আখাউড়ার সবাই যে কোন মাছ ভেজেই রান্না করেন…। ভাজলে মাছের ঘ্রাণ শেষ হয়ে যায়…।। হা হা হা…
শুভেচ্ছা।
LikeLike