গরুর গোশতের নানান পদের রান্না আছে। আমার মনে হয় কয়েক হাজার ধরনের রান্না করা যায় গরুর গোশতের। শুধু আগুন থাকলে এবং মশলা পাতি না থাকলেও ঝলসিয়ে কাবাব টাইপ কিছু করে ক্ষুধা মিটানো যেতে পারে। মানব জীবনে গরুর মত এত উপকারী প্রাণী আর একটাও পাওয়া যায় না। গরুর কি না কাজে লাগে! বলতে গেলে সবকিছুই। তবু আমরা মানুষরা এই গরুকে চিন্তে পারলাম না। এখনো আমরা গরু বলে একে অন্যকে গালি দেই! চলুন বেশি কথা না বলে, গরু গোশতের আলু ঝোল রান্না দেখি। বাঙ্গালী মুসলিম মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোতে এই রান্না মাসে এক দুইবার তো হবেই হবে, আমি নিশ্চিত। গৃহমাতা একটু বেশি ঝোল রাখেন এই ভেবে যে, আগামী কাল সকালেও কাউকে তিনি নাস্তায় সামাল দিতে পারবেন! কত চিন্তা আমাদের মধ্যবিত্ত মানুষ গুলোর!
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ (উপকরণের অনুমান আপনি নিজেও করে নিতে পারেন)
– কেজি খানেক গরুর গোশত হাড় সহ (ইচ্ছা হলে ছোট করে কেটে নিতে পারেন)
– বড় সাইজের দুইটা আলু (বড় গোল কাট)
– এক টেবিল চামচ রসুন বাটা (বেশি দিলেও ক্ষতি নেই)
– এক টেবিল চামচ আদা বাটা
– কিছু গরম মশলা (এলাচ, দারুচিনি)
– এক চা চামচ মরিচ গুড়া (মরিচের ঝাল দেখে শুনে)
– এক চা চামচ হলুদ
– হাফ কাপ পেঁয়াজ কুচি বা বাটা
– এক চিমটি জিরা গুড়া
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– লবণ (স্বাদ মত)
– পরিমাণ মত তেল/পানি
প্রণালীঃ (ছবির ধারাবাহিকতা দেখেই আশা করি আপনারা বুঝে যাবেন)
হাড় সহ গোশত
হলুদ মরিচ ছাড়া বাকী সব মশলা দিয়ে কড়াইতে তেল গরম করে ভাল করে ভেজে নিন। প্রয়োজনীয় লবণ দিন। তেল উঠে গেলে হাফ কাপ পানি দিয়ে নিন।
হলুদ ও মরিচ গুড়া দিয়ে দিন।
ভাল করে ঝোল বানিয়ে নিন।
গরু গোশত দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। প্রয়োজনে হালকা আঁচে ঢাকনা দিয়ে রেখে দিন।
কষানো এবং গোশত নরম হয়ে গেলে আলু দিয়ে মাখিয়ে নিন।
গরম পানি দিয়ে ঝোল দিন। আপনার ইচ্ছা মত, কতটুকু ঝোল হবে তা আপনি নিধারন করবেন!
ঝোল কমে আসলে অন্য একটা কড়াইতে কিছু পেঁয়াজ কুচি ভেজে (বেরেস্তা) গরুর গোশতে দিয়ে দিন এবং ফাইন্যাল লবণ দেখুন। লাগলে দিন, না লাগলে নাই!
এই পর্যায়ে কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিতে পারেন।
এমন একটা চমৎকার রং এসে যাবে। ঝোল পাতলা হবে।
ব্যস পরিবেশনের জন্য তৈরী।
গরম ভাত নিয়ে বসে পড়ুন। দেখুন কেমন লাগে…।
দ্বিতীয় প্লেট/দফা ভাত নিয়ে শুধু ঝোল এবং পাতলা ডাল, আহ…… কি চমৎকার মিশ্রণ!
ব্লগার দাইফ ভাইকে মাথায় রেখে এই রান্না হয়েছিল। হা হা হা…। পোষ্ট দিতে গিয়ে দাইফ ভাইকে আর মনে রাখতে পারি নাই…! কিন্তু পোষ্ট শেষ হবার পরে আবার দাইফ ভাইয়ের কথা মনে হল…। কমেন্টে তা লিখে দিলাম।
দাইফ ভাইয়ের জন্য আরো ভাল একটা রেসিপি খুঁজে বের করতে হবে…… দাইফ ভাই এখনো আমার রেসিপি পোষ্টের বেশী কমেন্ট দাতা। তার উদারতা ভুলে গেলে চলে না।
শুভেচ্ছা নিন দাইফ ভাই। সাথে থাকার জন্য শুভেচ্ছা ও ভালবাসা।
LikeLike
শিরোনাম দেখে আমি তো ভেবেছিলাম, আজ আস্ত গরু আলু দিয়ে ঝোল হবে বুঝি। পড়ে দেখি, সেই চিরাচরিত গরুর গোশত! তবে হয়েছে বড্ড মজাদার!!
ভাত দিয়েই শুধু নয়, ঝোল-গোশ রুটির সাথেও চলে ভালো, সে রুটি পাতলা হোক বা তন্দুরি। পরোটা, যদি হয় মচমচে আর গরম, তবে তো কথায় নেই আর।
ভাইরে, রেসিপি পড়ি, আর মুখে আসে জল। এ কথা বলি বারবার।
LikeLike
ধন্যবাদ হুদা ভাই। আপনার মজার কমেন্ট পড়ে হাসছিলাম…।। দেখেন আমার এক কলিগ আমার দিকে চেয়ে আছে!
মুখের জল থামান…।। পরে কিন্তু লোকে বলবে…।। বাবু!!!
LikeLike
আমার ছেলের প্রিয় রেসিপি আলু দিয়ে গরুর গোস্তের ঝোল।
আর ঠিক বলেছেন, ঝোল দিয়ে সকালের নাস্তাও সারা যায়।
LikeLike
রান্নাতো বোন, জেনে খুশি হলাম। আমাদের ভাগিনার প্রিয় খাবারের রেসিপি দিতে পেরে মনে একটা আলাদা আনন্দ পেলাম।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
মাঝে মধ্যে আপনার রেসিপি দেখে রান্নার চেষ্টা করি
এই রেসিপিটা কিন্ত আসলেই দারুন
LikeLike
ধন্যবাদ সবুজ ভাই। আপনি রান্না করেন জেনে খুশি হলাম। ছেলেদের রান্না আরো বেশী স্বাদ হয়! হা হা হা…
LikeLike
আহ! দারুণ! 🙂
LikeLike
হা হা হা…।।
LikeLike
আমার সব থেকে প্রিয় রান্নার রেসিপি পড়বার পর প্রথম মন্তব্যটি পড়েই তো বেশ লজ্জায় পড়ে গেলাম।
প্রথমেই পোস্ট নিয়ে বলি। এই গরু আলু ঝোল রান্নাটি আমার মতে মনে হয় ভাত, মাছ, ডালের পরই আমাদের খুব প্রিয় একটি খাবার। ধন্যবাদ এর জন্য।
আর আপনার এমন লোভনীয় একটি ব্লগ যে শুধু ভাল লাগবে সবার সেটিই নয়, সবাইকে প্রতিটি পোস্ট পড়তে বাধ্য করবে বলেই আমার বিশ্বাস প্রিয় সাহাদাত ভাই। তাই তো প্রিয় সব সাইটের তালিকাতে আপনার ব্লগটি আপনা আপনিই স্থান নিয়ে নিয়েছে। শুভকামনা থাকবে সব সময়ের জন্য সাহাদাত ভাই।
LikeLike
ধন্যবাদ দাইফ ভাই।
আপনার কমেন্ট পড়ে আমি কাঁদছি…। খুশিতে……
LikeLike
ধনিয়া গুড়া কই?
LikeLike
ধন্যবাদ জিয়া ভাই,
যতদুর মনে পড়ে এই রান্নায় ধনিয়া গুড়া দেই নাই, জিরা গুড়া দিয়েছিলাম। ধনিয়া গুড়া দিলেও স্বাদ বাড়ে।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLiked by 1 person
অসাধারন হয়েছে।।
LikeLike
আমার সবচেয়ে প্রিয় সাইট। ছবির মাধ্যমে এমন সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে । আইডিয়াটা বিদেশী সাইটগুলোর জন্য অনুকরনযোগ্য ।
তবে আমার মত নতুন পাচকদের জন্য আপনি প্রাথমিক যে মসলা মিশ্রন তেলে ভাজতে বলেন সেখানে কি কি থাকবে এবং কি অনুপাতে থাকবে তার একটা লিংক থাকা উচিৎ । উপরোন্ত কোন মসলা স্বাদের উপর কি ধরনের কাজ করে তার একটা তত্বীয় অধ্যায় থাকা উচিৎ ।( যেমন কেক এ ডিম দুধকে জমাটবদ্ধভাবে ধরে রেখে পুডিংকে থলথলে জমাটভাব এনে দেয়। ডিমের এই বৈশিষ্ট আমরা অন্য খাবার উদ্ভাবনে কাজে লাগাবো। ) সম্ভব হলে nutrition fact আরেকটা অধ্যায় রাখতে পারেন ।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রহমান ভাই।
আমি চেষ্টা করছি। তবে এর পিছনে যে সময় দিতে হয়, তা এখন আর পাচ্ছি না। পেশা হিসাবে রান্না নিতে পারলে আমি আরো গবেষনা করতে পারতাম, সেই সময় কোথায়?
জীবন এমনিতেই জটিল করে ফেলেছি। হা হা হা
ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা নিন। (সরি ফর লেট রিপ্লাই)
LikeLike
দুঃখিত আমি পুরো না পড়ে মন্তব্য করার জন্য। আপনারাতো মিশ্রনের অনুপাত দিয়েছেনই উপরে ।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রহমান ভাই।
আমি সব সময়েই চেষ্টা করি, পরিমান ও অনুপাত সঠিক করে লিখে দেয়ার জন্য।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
অসাধারন রেসিপি
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike