পোলাউ রান্নার বেশ কয়েকটি তরিকা আছে। হাতে সময় কম কিন্তু মেহমান চলে যাবে যাবে করছে এমন সময় আবার তাকে পোলাউ দিয়ে আপ্যায়ন করতে হবে? হা, হালকা বুদ্দি থাকলেই মিনিট ৩০শেকের মধ্যে পোলাউ রান্না করে ফেলা যেতে পারে! এটা একটা ঝটপট পোলাউ রান্নার তরিকা, যাকে বলে বাবুর্চী স্টাইল! আসলে এইভাবে বড় বড় খাওয়া দাওয়াতে বাবুর্চীরা রান্না করে থাকেন, সময় লাগে কম আর রান্নাও বেশ মজাদার হয়। চলুন বাসায় এমন পোলাউ রান্না দেখে ফেলি… আমার কাছে এটা মনে হয় রান্নার ব্যাচেলর স্টাইল!
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ (উপকরণের অনুমান আপনি নিজেও করে নিতে পারেন)
– এক কেজি পোলাউ চাল
– পেঁয়াজ কুচি (হাফ কাপ)
– এক টেবিল চামচ আদা বাটা
– কয়েকটা এলাচি
– কয়েক পিস দারুচিনি
– অফশনাল* কয়েকটা তেজপাতা (যারা পছন্দ করেন)
– পরিমাণ মত লবণ
– হাফ কাপ তেল
– পরিমাণ মত পানি (যে পটে চাল মাপা হয় সেই পটের দিগুন পানি মানে এক পটের জন্য দুই পট পানি)
প্রণালীঃ
ভাল করে চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। পুরাতন চাল আর নূতন চাল বুঝতে পারলে ভাল হয়… না বুঝলে নাই… (পানির পরিমাণের জন্য)
* এখানে একটা মজার ব্যাপার না বলে পারছি না। বাজার থেকে আমি খোলা পোলাউ চাল কিনেছিলাম। সাথে ছিল মুশরী ডাল, কি করে যে কিছু বা কয়েকটা মুশরী ডাল চালে মিশে গেল বুঝে উঠতে পারি নাই! পরে আর বেছে আলাদা করার সময় ছিল না! হা হা হা… খাবার সময় আমরা পরিবারের সবাই বেশ হাসাহাসি করেছিলাম! মুশরী ডালের বদলে কিছু গাজর পাতলা করে কেটে দিলেও চলত! অবশ্য গাজর দিয়ে পোলাউ আর একদিন দেখিয়ে দিব। বেশ চমৎকার দেখতে ও খেতে…।
চাল ছাড়া উপকরণের বাকী সব কিছু দিয়ে পরিমাণ মত পানি দিয়ে ভাল করে জাল দিন। পরিমাণ মত পানি না দিতে পারলেও ক্ষতি নাই। অন্য একটা হাড়িতে পানি গরম করে রাখুন, প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে। তবে কয়েকবার এই প্রদ্বতিতে রান্না করলে পানির অনুমান হয়ে যাবে! চাল দেখা যায় এমন বা চাল থেকে এক ইঞ্চি বেশী পানি! চাল পুরানো কিন্তু পানি শেষ এমন হলে গরম করা পানি যে কোন সময়ে দেয়া যেতে পারে।
পানি ভাল করে নাড়িয়ে দিন।
ধোয়া উঠতে থাকলে পোলাউএর চাল দিয়ে দিন।
ঠিক পানির পরিমাণ এমন দেখাবে।
ঢাকনা দিয়ে দিন। মিনিট ২০শের মত লাগতে পারে। মাঝে একটু ঢাকনা উল্টে লবণ দেখে নিন। হলে ওকে! না হলে দিন!
বাহ, চমৎকার ঘ্রাণ। মন মাতানো…।।
চাল নরম হল কিনা ভাল করে নেড়ে দেখে নিন। পানি অনুমানে ভুল কিংবা চাল না গলে গেলে আর একটু পানি দিয়ে আবারো কিছুক্ষণ ঢেকে রাখতে পারেন।
ব্যস হয়ে গেল বাবুর্চী পোলাউ, ঝটপট। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
শশুর বাড়ীর লোকজন এলে পোলাউ না খাইয়ে পথ দেখালে খবর করে দিবে! তার চেয়ে এমন করে ঝটপট রান্না করে ফেলাই উত্তম!
আর মেয়ের জামাই এলে! বাবা সোনামানিকের জন্য পোলাউ না হলে কি চলে! আফটার অল… গ্রেট হিরো অফ দ্যা ফ্যামেলী!
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
আমরা সাধারণ ভাবে বাসায় যে ভাবে পোলাউ রান্না করি তার রেসিপিটা এখানে আছে, চাইলে এটাও দেখে নিতে পারেন – সাধারণ পোলাউ রান্না।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
শুভেচ্ছা সবাইকে…
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন।
কিছুক্ষণ আগে আমার ব্যাটারীর সাথে কথা হল তিনি একটা কথা যোগ করে দিতে বললেন – যারা তেল পছন্দ করেন না তারা তেল না দিয়েও এইভাবে পোলাউ রান্না করে পোলাউয়ের মজা লুটতে পারেন।
LikeLike
তাহলে একদিন আসবার সময় ঠিক ৩০ মিটিন আগে ফোন দিয়ে বলবো, সাহাদাত ভাই, আমি আসছি, হা হা হা।
সুস্বাদু পোস্টে সুস্বাদু ভাল লাগা।
LikeLike
৩০ মিনিট**
LikeLike
ধন্যবাদ দাইফ ভাই…। হা হা হা…
LikeLike
যত সহজ রেসিপিই হোক, এই গরমে চুলার কাছে আমি যাবো না, যাবোই না। আর এই গরমে পোলাউ? এখন ঝালবিহীন লাউ হলেই ভালো হয়, ‘পো’ বাদ।
জানা থাকলো, গরম কমুক, রান্না করে রাখবেন, যেয়ে খেয়ে আসবো। তবে শুধু পোলাওয়ে চলবে না, ঐ যে গরু-খাসি-মুরগির রেসিপি আগে দিয়েছিলেন, সেগুলোকেও রাখবেন সাথে।
LikeLike
হুদা ভাই, আপনার জন্য লাউ! হা হা হা… লাউ কিন্তু বেহেস্তি তরকারী… দেব নাকি লাউ চিংড়ী একটা রেসিপি!
আসুন, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
LikeLike
হুদা ভাইএর কমেন্টে ভুটাপ!
এই গরমে রান্না ঘরে যাওয়ার কথা মনে হলেই ভয়ে বুক কাপে।
কোনমতে এক তরকারী চুলায় বসিয়ে বার বার এসে ফ্যানের নিচে বসি। 😦
তবে সহজ তরিকায় এই পোলাও রান্নাটা খুব পছন্দ হলো।
এই তরিকা জানা ছিলোনা।
আমার মা পোলাও রান্না করতেন অন্য ভাবে। গরম পানিতে পিয়াজ, রসুন, আদা,জিরা গরম মসলা সব কিছু একটু থেতো করে পরিস্কার পাতলা কাপড়ে পুটলি বেধে ঘন্টা-খানিক ফুটিয়ে চাল ভেজে ঐ গরম পানি দিতেন।
এতো সুন্দর, ধবধবে সাদা পোলাও হতো। আর নামানোর আগে এক কাপ দুধে জাফরান গুলে দিতেন।
LikeLike
হা হা হা…।
গরম কি পেট বুঝবে! পেটে না দিলে মারা পড়বেন যে! হুদা ভাই ফাঁকিবাজ হয়ে গেছেন? আজকাল আর রান্নাঘরে যেতে চাইছেন না! এটা চলবে না…
আপনার মায়ের মত করে একবার রান্না করব বলে আশা করছি। দুধ আর জাফরান দিয়ে একবার বানাতে চাই…।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
বলেন কি, তেল ছাড়াও হবে? তাহলে আজকে কালকের মধ্যেই একবার চেষ্টা করে দেখব। সাধারণত চাল ভেজেই পোলাও করি, আপনার আগের রেসিপির মত। আমার এক পোলাও-মাস্টার বন্ধু বলেছে, পোলাওয়ে ২ টা জিনিস জরুরী ১) চাল যত ভাজবেন তত মজা, ২) পানি দেয়ার পর একদম নাড়ানো যাবেনা, নাড়ালেই ঘ্যাট হয়ে যেতে পারে।
রেসিপিটার জন্য ধন্যবাদ!
LikeLike
ধন্যবাদ রনি ভাই। আপনার বন্ধুকেও শুভেচ্ছা। তিনি ভাল পরামর্শ দিয়েছেন।
একবার তেল ছাড়া করে দেখতে পারেন, আমিও বানিয়ে দেখব…। হা হা হা…
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ শাহী চিকেন রোষ্ট (সিষ্টার সায়মার জন্য শুভকামনা) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
1kg polao er chal koy joner jonno?
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। তবে সরি দেরীতে উত্তর দেয়ার জন্য।
আমাদের দেশে সাধারণত এক কেজি পোলাউএর চালে তৈরী পোলাউ ৬ জনের হিসাবে ধরা হয়। তবে আমার মত খানেওয়ালা হলে এক কেজি তে ৪ জন!
পোলাউ সাধারণত একটু বেশীই রান্না করতে হয়। খেতে বসলে যেন টান না পড়ে! আর যদি কেহ যোগ দেয় তবে অসুবিধা নেই!
এবারের ঈদে কি কি রান্না করলেন?
শুভেচ্ছা।
LikeLike
এই রান্নাটির জন্য বিশেষ ধন্যবাদ দাদা আপনাকে ও মানসুরা হোসেনকে, কারণ আমার বাবা একেবারেই তেল মশলা দেওয়া খাবার সহ্য হয় না, অথচ উনি খুব খেতে ভালোবাসেন, খাদ্য রসিক বলতে পারেন। পোলাও রান্না হলে ঘি/তেল দিতেই হত । এইভাবে করে দেখতেই হচ্ছে। অসংখ্য ধন্যবাদ।
LikeLike
ধন্যবাদ আপনাকেও। তেল কম দিয়ে যে কোন রান্নাই চলতে পারে। যিনি রান্না করবেন উনাকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। তেল সব সময়েই কম ভাল। ঘি তো এখন আর কেহ ই খেতে চান না। এদিকে ঘিতে ভেজাল আবার বেশী।
রান্নায় বেশী আগ্রহ দেখিয়ে কবিতা ভুলে যাবেন না।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ গাঁজর পোলাউ (রেসিপি লাভার্সদের জন্য) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ শাহী চিকেন রোষ্ট (সিষ্টার সায়মার জন্য শুভকামনা) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
হা হা হা
মানসুরা আপু পুরাটা অনেক বিনোদনের সাথে শিখলাম
LikeLiked by 1 person
হা হা হা
অনেক বিনোদন পেলাম
LikeLiked by 1 person
হা হা হা
LikeLiked by 1 person
তাহলে কি ১ কেজি চালের জন্য ২ কেজি পানি দিলে হবে?
LikeLike
সরি দেরীতে উত্তর দেয়ার জন্য। চালের উপরে এক ইঞ্চির মত হতে হবে, তবে এটা পাতিলের সাইজ বা চালের উপর নির্ভর করে।
LikeLike