গরুর গোশত রান্না আমাদের সবার খেতে বেশ লাগে। গরুর গোশত দিয়ে কত কি করা যায়, কত ভাবে যে রান্না করা যায় তা বলে শেষ করা যাবে না। অনেকে বলেন গরুর গোশত শুধু লবণ দিয়েও যদি ফুটানো যায় তবু খেয়ে ফেলা যাবে। কথা মন্দ নয়! তবে আমি বলি একটু ভিন্ন কথা!
যদি কেহ বলেন তিনি ভাল রান্না করতে পারেন তবে তাকে দিয়ে আমি যে ‘রান্নাটেস্ট’ করাবো তা হচ্ছে গরুর গোশত রান্না। যদি তিনি গরুর গোশত রান্না করে উতরে যেতে পারেন তবে আমি তাকে বলব, তিনি ভাল রান্না করতে পারেন। রান্নায় আমার যা অভিজ্ঞতা তা থেকেই আমি বলছি, যিনি গরুর গোশত ভাল বা মুখরোচক রান্না করতে পারবেন তার রান্নার হাত নিয়ে আর কোন কথা নাই, তিনি দুনিয়ার একজন ভাল রান্নাবিদ।
যাক, আজ আপনাদের সামনে তেমনি একটা গরুর গোশতের রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি – গরুর গোশত ভুনা বা বিফ ভুনা। দৈ ব্যবহারে আরো বেশ মজাদার হয়েছে। তবে আমার রেসিপি যারা পড়েন তারা জানেন আমি সহজ রেসিপি দিয়ে থাকি। হা, এটাও একটা সহজ রেসিপি। আশা করি আপনারা সবাই পারবেন।
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ (উপকরণের অনুমান আপনি নিজেও করে নিতে পারেন)
– কেজি খানেক হাড় সহ গরুর গোশত
– এক কাপ টক দৈ (সাধারণ গ্রোসারিতেও এখন পাওয়া যায়)
– পেঁয়াজ কুচি (হাফ কাপ)
– দুই টেবিল চামচ আদা বাটা
– দুই টেবিল চামচ রসুন বাটা
– এক চামচ লাল গুড়া মরিচ (ঝাল কেমন তা আপনি দেখে নিবেন)
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– এক চামচ হলুদ গুড়া
– কয়েকটা এলাচি
– কয়েক পিস দারুচিনি
– পরিমাণ মত লবণ
– পরিমাণ মত তেল
প্রণালীঃ
গোশত ভাল করে ধুয়ে সামান্য সিরকা বা ভিনেগার (না থাকলে নাই) দিয়ে মাখিয়ে রাখুন।
কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ দিন, সামান্য লবণ দিন এবং ভাল করে ভেজে কিছুক্ষণ পরে আদা, রসুন, এলাচি, দারুচিনি দিয়ে আবারো ভাজুন।
হলুদ গুড়া ও মরিচ গুড়া দিন। ভাল করে ভেজে এক কাপ পানি দিয়ে ঝোল বানিয়ে নিন।
একটা চমৎকার ঘ্রাণ পেতে থাকবেন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে পারেন।
এবার গোশত দিয়ে দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবং ঢাকনা দিয়ে হালকা আঁচে মিনিট ২০ এর মত চুলায় রেখে দিন। মাঝে মাঝে দেখবেন যদি পানি লাগে তবে দেবেন। পানি আপনার গোশত কেমন নরম হচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে। বুড়া গরু হলে খরব করে ছাড়বে! (চিনি বা সুপারি থেরপিতে না যাওয়াই ভাল)
ফাঁকে আবারো লবণ দেখে নিন। লাগলে দিন না লাগলে ওকে বলুন।
কষানো এবং ঝোল উঠে গেলে এবার দৈ দিয়ে দিন।
ভাল করে মিশিয়ে আবারো হালকা জালে কিছুক্ষণ রেখে ঝোল কমিয়ে গা গা করে নিন।
ব্যস হয়ে গেল বিফ ভুনা, দৈ সহযোগে! পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
এমন পেলে পুরা বাটি সাইজ করা কোন ব্যাপার না! কিন্তু বিফের ব্যাপারে আমার কিছু কথা আছে, পেলেই বেশী খাওয়া উচিত না। বিশেষ করে যাদের বয়স চল্লিশ পার হয়েছে! যদি বলেন কেন? আমি বলব, আশে পাশের চল্লিশ পার হাওয়া কাউকে জিজ্ঞেস করুন! হা হা হা…
আশা করি এই চমৎকার/সহজ রান্নাটা একবার করে দেখবেন। শুভেচ্ছা সবাইকে।
ভাই আমার ব্লগটা একবার ঘুরে আসার অনুরোধ। চতুরে যান না কেন?
LikeLike
ধন্যবাদ ফারুক ভায়া।
হা, আমি মাঝে মাঝেই আপনার ব্লগে যাই। বেশ চমৎকার করে গড়ে উঠছে। আরো সুন্দর করার চেষ্টা করুন। চতুরে কম যাচ্ছি…।
শুভেচ্ছা।
LikeLiked by 1 person
দারুন! দারুন!
এলাচ সম্পুর্ণ গুড়ো করে দেবার কথা রেসিপিতে বলবেন। আপনি বললে সবাই উপকৃত হবেন। কে না জানে– আপনি হলেন রেসিপি জগতের মুকুটবিহীন সম্রাট। এলাচ কামড়ে পড়লে খাওয়ার মজাই নষ্ট হয়ে যায়। আবার এলাচ ভালো করে না ফাটালে তো সুগন্ধই হবেনা।
আমি আপনার চাইতেও সহজ করে রান্না করি, অলস বলে। 😛
আমি সব উপকরন একসাথে মেখে, ঘন্টাখানেক রেখে কম আঁচে চুলায় বসিয়ে মাঝে মাঝে নেড়ে দিতাম। ( আমি তাই করি। :p ) পানির প্রয়োজন হলে গরম পানি ব্যাবহার করি। 😀
LikeLiked by 1 person
হা হা হা…। ঝটপট রান্নায় আমার এমন রেসিপি আছে! হা হা হা… টিপসে যোগ করে দিলাম… আপনার নামে।
জ্বর সেরেছে বলে আশা করছি। ভাল থাকুন।
LikeLike
প্রিয় রান্নাতো আপা,
“যদি কেহ বলেন তিনি ভাল রান্না করতে পারেন তবে তাকে দিয়ে আমি যে ‘রান্নাটেস্ট’ করাবো তা হচ্ছে গরুর গোশত রান্না। যদি তিনি গরুর গোশত রান্না করে উতরে যেতে পারেন তবে আমি তাকে বলব, তিনি ভাল রান্না করতে পারেন। রান্নায় আমার যা অভিজ্ঞতা তা থেকেই আমি বলছি, যিনি গরুর গোশত ভাল বা মুখরোচক রান্না করতে পারবেন তার রান্নার হাত নিয়ে আর কোন কথা নাই, তিনি দুনিয়ার একজন ভাল রান্নাবিদ।”
– আপা আমার এই ব্যাপারে তো কিছু বললেন না! আমি কি ঠিক বলছি? উত্তর চাই…
LikeLiked by 1 person
সুন্দর বলেছেন সাহাদাত ভাই। কিছু রান্না আছে যেগুলো পরখ করলেই বোঝা যায় যে রাঁধুনীর হাতের গুণ কেমন। গরুর মাংস রান্না করা তেমনই একটি। আর দই যোগে তো যেকোনো খাবারই হয়ে উঠে অমৃত আর স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল অনেক। ক’মাস আগেই এই রান্নাটি করি আমি রাত ২টায় কাজিনরা মিলে। তাই বুঝতেই পারছেন কেমন পছন্দ আমার।
চমৎকার পোস্টে ভাল লাগা অনেক।
শুভকামনা রইল অনেক প্রিয় সাহাদাত ভাই।
LikeLiked by 1 person
দাইফ ভাই, রান্নার প্রতি আপনার আগ্রহ আমাকে আনন্দ দিচ্ছে। ছেলেরা যখন রান্না করে আমি মনে করি সে একটা সেরা কাজ করল। আমিও আগে রান্নার ধারে কাছে যেতাম না, এখন মনে হয়, রান্নায় স্ত্রীকে সাহায্য করা আমার কর্তব্য। রান্নাঘরে আমাদের বেশ সময় কাটে… আগের চেয়ে এখন আমাদের মনের মিল অনেক অনেক বেশী… হা হা হা…
আশা করি রান্নার এই অভ্যাস জাগিয়ে রাখবেন…
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আপনার রেসিপি গুলো এক কথায় awesome 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ পাপন ভাই। আমার চেষ্টা চলবে…।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
এমন মজার একটা রেসিপি দিলেন, আবার শেষে এসে খেতে মানা করলেন! আপনি এটা করলেন কী? এমন করে রান্না করা যায় না, যে গরুর গোস্ত সবাই খাওয়া যায়?
আর রান্না? না খেয়েও মনে হচ্ছে চমৎকার হয়েছে!
কপাল!!
LikeLike
হা হা হা, হুদা ভাই যে। আসলে কি করব বলুন? আমাদের খেতেও হচ্ছে আবার সর্তকও থাকতে হচ্ছে!
আপনার জন্য ফার্মের মুরগ বেষ্ট! হা হা হা…
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
LikeLike
যদি কেহ বলেন তিনি ভাল রান্না করতে পারেন তবে তাকে দিয়ে আমি যে ‘রান্নাটেস্ট’ করাবো তা হচ্ছে গরুর গোশত রান্না। যদি তিনি গরুর গোশত রান্না করে উতরে যেতে পারেন তবে আমি তাকে বলব, তিনি ভাল রান্না করতে
পারেন। রান্নায় আমার যা অভিজ্ঞতা তা থেকেই আমি বলছি, যিনি গরুর গোশত ভাল বা মুখরোচক রান্না করতে পারবেন তার রান্নার হাত নিয়ে আর কোন কথা নাই, তিনি দুনিয়ার একজন ভাল রান্নাবিদ।”
একেবারে খাটি কথা। 😀
আমার ছেলে প্রবাসে সব চেয়ে মিস করে আমার রান্না গরুর গোস্ত।
আমি কিন্তু সব সময় ফাঁকিবাজী করেই রান্না করি।
যেমন গরুর গোস্তের পিঁয়াজ কুচি করিনা। ৪ টুকরো করেই দিয়ে দেই। একেবারে সব কিছু দিয়ে মাখিয়ে বসিয়ে দেই। অন্যান্য রান্নাতেও যথেষ্ট ফাঁকিবাজী করি।
তারপরও কেমন করে যেন তা মজাদার হয়ে যায়। 😛
আজ জ্বর আসেনি। দোয়া করবেন।
LikeLike
হা হা হা… আসলে সবই হাত, মন এবং কোপালের গুন। আপনার হাতের ছোঁয়াতেই খাবার সুস্বাদু হয়। রান্নায় অভিজ্ঞতা একটা বিরাট ব্যাপার, যা আপনার আছে।
– আশা করি ভাল যাবেন তাড়াতাড়ি…।
LikeLike
darunto 🙂
apnar blog tao bes posondo hoise 🙂
LikeLike
হা হা হা… বোন নীল দর্পণ। আপনার পরের কমেন্ট দেখে বুঝতে পারলাম। সালাম ও শুভেচ্ছা। আশা করি সাথে থাকবেন।
LikeLike
oh ager comment ta oggato hisebe aslo! ami neel-dorpon
LikeLike
ধন্যবাদ বোন নীল দর্পন। আপনি কমেন্ট করছেন দেখে বেশ খুশি লাগছে। কারন রান্না ও রেসিপিতে আপনার অনেক অনেক আগ্রহ আছে এটা আমি জানি। আশা করি সাথে থাকবেন।
LikeLike
বাহ ! চমৎকার পোষ্ট !
গরুর কাল ভুনাটা কি একবার দেবেন সাহাদাত ভাই। ওটা এখন অব্দি করতে পারিনি।
LikeLike
চল্লিশ হওয়ার আরো সাত বছর বাকী আছে। আল্লাহ ভরসা!
LikeLike
হা হা হা ……।
স্ময় কিন্তু পানির মত বয়ে চলে! এই তো সেদিনের ব্যাপার, কত ছোট ছিলাম! এখন মৃত্যুর মিছিলে আছি! একদিন চলেও যাব।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ধন্যবাদ আরিফ ভাই, তার পরো সাবধানে চলুন, এতে জীবন সুন্দর হবে। চল্লিশের ধাক্কা কঠিন ধাক্কা। আমরা পার করছি! হা হা হা…
LikeLike
ভাইয়া, হিঃ হিঃ
আমি কিন্তু গরুর যেকোনো প্রিপারেশন ভালো রান্না করতে পারি। এখন পর্যন্ত কেউ বলে নাই খারাপ, প্রশংসা করেছে, এমনকি এক্সপেরিমেন্ট করলেও……
কিন্তু, আমার বাকি রান্না খুবই খারাপ। 😦 আর আমার রান্না করতে খুব ভালো লাগে, সব্জী এর আইটেমগুলো খুবই খারাপ হয় আর ভাত তো কখনো রান্নাও করি নাই
আমারটা তাহলে কি বলবেন? 😉
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আমি আপনাকে ভাল রান্নাকারীই বলবো। ব্যাপার না! গরুর গোসত যিনি ভাল রান্না করেন তার আর অন্য রান্নার দরকারই নেই! হা হা হা… প্রশংসা যদি ভাল লাগে তবে অন্য রান্না গুলোও শিখে নিন! হা হা হা…। আপনি পারবেন বোন!
শুভেচ্ছা। প্রথম কমেন্ট করার জন্য অভিনন্দন। আশা করছি, মাঝে মাঝে এসে দেখে যাবেন। আমরা খুশি হব।
LikeLike
আজকে আপনার এই রেসিপি দিয়ে রান্না করছি। খেয়ে জানাবো টেস্ট কেমন।
LikeLike
ভালই লাগলো
LikeLiked by 1 person