গ্যালারি

সহজ রান্না শিক্ষা – শাহী ডিম ভুনা (লেখকঃ মেঘ রোদ্দুর)


[ব্লগার মেঘ রোদ্দুর ভাইয়ের এই লেখাটা আমি কপি করে এখানে এনে রাখলাম। একটা চমৎকার রেসিপি, আগামীতে কাজে লাগবে আমাদের সবার।]

লিখেছেনঃ মেঘ রোদ্দুর (তারিখঃ ৩০ জানুয়ারি ২০১২, ৮:১১ অপরাহ্ন)

যারা আমার লেখা আগে পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই ভাবছেন বিষয়টা কি।
এটা আমার রান্নার প্রথম এবং খুব সম্ভবত শেষ পোস্ট। অল্পবিস্তর সবারই রান্না করা হয়ে থাকে। আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি, তাদেরতো আরও বেশী। ছুটির দিনে হঠাৎ মাথায় আসলো আমার অতি সমাদৃত এবং খুবই সহজ একটা রান্নার পোস্ট দিলে কেমন হয়? আমার স্ত্রীকে জানাতেই সেও খুশী মনে সহযোগিতা করলো।

এই পোস্টটা তৈরি করতে যেয়ে আমি বুঝতে পেরেছি, আমাদের সবার প্রিয় সাহাদাত উদরাজী ভাইকে আসলে কত কিছু করতে হয় তার প্রতিটা রান্নার পোস্টের জন্য। প্রিয় সাহাদাত উদরাজী ভাইএর প্রতি অনেক শ্রদ্ধা জানিয়ে এই পোস্টটা দিলাম। সবার ভালো লাগলেই পোস্টের সফলতা। সাহাদাত উদরাজী ভাই, ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা রাখি।

শাহী ডিম ভুনা

(এই পোস্টটা লিখতে যেয়ে মনে পড়ে গেলো, হুমায়ূন আহমেদের ‘সমুদ্র বিলাস প্রাঃ লিঃ’ নামক নাটকে ডিম রান্নায় পারদর্শী, কুয়েত ফেরত বাবুর্চির (ডাঃ এজাজ) কথা।)

প্রথমেই রান্নার জন্য যা যা লাগবে তা রেডি করে নিন। রান্নার পাত্র, নাড়ার জন্য একটি বড় চামচ, ছুরি, ছোট চামচ, এগুলো ধুয়ে মুছে নিন। রান্নার সময় হাতের কাছে ছোট্ট একটা তয়লা রাখা ভালো। এটা বেশ কয়েকবার কাজে লাগবে, রান্নার বাইরেই।

এবার শুরু করুন শাহী ডিম ভুনা রান্নার প্রথম ধাপ। প্রথমে ডিমগুলোকে ভালো করে ধুয়ে, একটি পানি ভরা পাত্রে দিয়ে চুলায় বসান। মধ্যম আঁচে ডিমগুলো সিদ্ধ করুন কম পক্ষে ১৫ মিনিট। সিদ্ধ হয়ে গেলে খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে নিন।

এবার ডিমগুলোর গায়ে কাটা চামচ দিয়ে কিছু ছিদ্র করে নিন। এতে মশলা ভিতরে যেয়ে স্বাদ বাড়িয়ে দিবে।

এবারে আদা রশুন বাটা, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া ও জিরার গুঁড়া, লবন, তেল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, দারচিনি, এলাচি, তেজপাতা, ধনে পাতা, এবং এই রান্নার বিশেষ অথিতি কাজু বাদাম ও কিসমিস আন্দাজ মত নিয়ে নিন। আমি ৬ টা ডিমের জন্য নীচে ছবিতে দেখানো পরিমাণে এগুলো নিয়েছি। ঝাল কম খেলে কম মরিচ, বেশী খেলে বেশী। বাদবাকি মশলার ক্ষেত্রেও একই ফর্মুলা প্রযোজ্য। তবে শাহী ডিম ভুনা বলে কথা, একটু মশলা বেশী না হলে কি আর স্বাদ হবে ?

এবারের কাজটা আমার আবিষ্কৃত (জানিনা অন্য কেও করেন কিনা)। একটু লবন ও মরিচের গুঁড়া মিলিয়ে ডিমগুলোর গায়ে মাখিয়ে নিন।

পেঁয়াজ, ধনে পাতা কেটে নিন।

রান্নার পাত্র চুলায় চাপিয়ে, চুলা জ্বালিয়ে নিন। পাত্র একটু গরম হলেই, তাতে একটু তেল দিয়ে ডিমগুলোকে হালকা ভেজে উঠিয়ে নিন।

পাত্রে এবার রান্নার জন্য পরিমাণ মত তেল নিন, আগের তেলের সাথেই নিতে পারেন। তেজপাতা, দারচিনী, এলাচি গরম তেলে কিছুক্ষণ নেড়ে নিন।

এরপর কাটা পেঁয়াজ দিয়ে মধ্যম আঁচে কিছুক্ষণ নাড়ুন।

পেঁয়াজের রঙ একটু লালচে হয়ে আসলে, একে একে, আদা রশুন বাটা, হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনের গুঁড়া, লবন দিয়ে নাড়তে থাকুন।

কিছুক্ষণ নাড়ার পর, একটু পানি দিয়ে নিন।

এভাবে ১-২ মিনিট রেখে, নেড়ে নিয়ে ডিমগুলো দিয়ে দিন। ডিমগুলোকে নেড়ে নেড়ে ঘুরিয়ে দিতে থাকুন তাতে মশলা সবদিকে লাগবে।

এবারে কাজু বাদাম, কিসমিস দিয়ে দিন।

একটু নেড়ে অল্প আঁচে ঢেকে রাখুন ২-৩ মিনিট। প্রয়োজনে একটু পানি দিয়ে নিতে পারেন, কিন্তু বেশী যেন না হয়।

এবারে কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার একটু ঢেকে রাখুন।

সব শেষে ধনে পাতা দিয়ে একটু নেড়ে ১-২ মিনিট চুলায় রাখুন।

ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো শাহী ডিম ভুনা। এবার উপভোগ করুন পুরো দমে, আর মতামত দিন।

প্রথম প্রকাশঃ

http://tinyurl.com/7g37er2

12 responses to “সহজ রান্না শিক্ষা – শাহী ডিম ভুনা (লেখকঃ মেঘ রোদ্দুর)

  1. ব্লগার মেঘ রোদ্দুর ভাইয়ের অনুমতি নিয়ে লিখাটা এখানে এনে রাখলাম। আশা করি আমাদের কাজে লাগবে…।

    ১৪ মে ২০১২, ৭:২৬ অপরাহ্ন তারিখে মেঘ রোদ্দুর বলেছেন

    প্রিয় সাহাদাত ভাই, আলহামদুলিল্লাহ্‌, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? চতুরে বেশ কিছুদিন যাবত অনিয়মিত হয়ে গেছি একটু।

    মহান আল্লাহ্‌র রহমতে, গত ২৪ তারিখে, রাত ০০:২৪ টায় আমাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে।

    আপনাদের সবার দোয়া কাম্য।

    আপনার রেসিপির সাইটটা দেখে সত্যি খুবই খুশি হলাম।

    আপনার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কাজের ব্যস্ততার মাঝেও আপনার এই বাড়তি শ্রম যে দারুণ সফল তা আবারো প্রমাণ হোল।

    আমার এই ক্ষুদ্র রেসিপিটা আপনার সাইটে রাখবেন, এটা তো আমার সৌভাগ্য। কিন্তু এরকম অতি সাধারণ পোস্ট, নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে। আপনার মেসেজ পেয়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন। আপনার পরিবারের সবার জন্য দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।

    লেখক/ব্লগার মেঘ ভাইয়ের শুভদিন কামনা করছি। আমাদের ভাতিজা বড় হয়ে মেঘ ভাইয়ের মত উদার হউক।

    মেঘ ভাই, আশা করি আপনার আগামী দিন গুলো অনেক অনেক সুখের ও আনন্দের হবে। পিতা/মাতা হবার জন্য অভিনন্দন জানাই আপনাদের।

    শুভেচ্ছা সব সময় থাকবে…

    Like

  2. এই রান্নাটা সবারই শিখে রাখা উচিত। কারণ খুব অল্প সময়েই যেকোনো কিছু দিয়ে ডিমের এই রান্নাটা তৈরি করে খাওয়া যায়। ধন্যবাদ লেখককে আর ধন্যবাদ সাহাদাত ভাইকে লেখাটি শেয়ার দেবার জন্য।

    Like

    • ধন্যবাদ দাইফ ভাই, এই রেসিপিটার লেখক মেঘ রোদ্দুর ভাই আসলেই একজন চমৎকার মানুষ। তার হাতের রান্না স্বাদ না হয়ে পারে না! তিনি মাঝে মাঝে রান্না করেন বলে জেনেছি।

      হা, এ ডিমের রান্না হলে আর অন্য কি চাই! দেখেই প্রান জুড়ে যাচ্ছে।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  3. its really fantastic..

    Like

  4. প্রিয় সাহাদাত ভাই,
    অনেক অনেক ধন্যবাদ।
    আমি সত্যি এতোটা আশা করিনি। আমার ব্লগ জীবনে এই প্রথম এমন দারুণ উপহার পেলাম। আপনার সাইটে আমার লেখা রেখে আমাকে কৃতজ্ঞ করলেন। বেশ কয়েকবার দেখলাম। আরও দেখবো। রান্নার এরকম বাংলা সাইট আর আছে বলে আমার জানা নাই। খুবই উপকারি আর দারুণ সুন্দর উপস্থাপনায় সাজানো প্রতিটা রেসিপি। আমি মুগ্ধ হয়ে পড়ি। আপনাকে আবারো অনেক ধন্যবাদ। আপনার ও পরিবারের সবার জন্য দোয়া করছি।
    rowshan haque ও দাইফ, দুজনকেই অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

    Like

  5. উদারাজী ভাই, ছবিটা আপনার পছন্দ হয়েছে জেনে খুশি হলাম।
    ছবিটা আমারও ধার করা। আপনার সাইটের ব্যানারে দেখে ভালো লাগছে খুব…!

    Like

    • ধন্যবাদ মেঘ ভাই। জানতে পারলাম আপনি বাংলাদেশে এসেছেন। দেখা বা ঢাকায় এলে একটা ফোন করলে দেখা হতে পারে।

      ছবিটা আসলেই সুন্দর আমি ও ভালকরে ব্যানারে ব্যবহার করতে পারি নাই। ছবিটা একটা সুন্দর কিচেন।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  6. এর মত সহজ রেসিপি আর হয় না, উদরাজীর রেসিপি বলে কথা

    Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]