গ্যালারি

রেসিপিঃ রামচোষ মাছ রান্না (বরিশাল, ঝালকাঠির সুস্বাদু মাছ)


আমার পাশের বাসায় এক বরিশালের পরিবার থাকেন। তাদের দুই মেয়ে আর আমার এক ছেলে, ওরা ছোট বেলা থেকে এক সাথে বেড়ে উঠছে। আমার ছেলে যেমন ওদের রান্না করা খাবার খায়, তেমনি ওই পরিবারের মেয়েরাও আমাদের পরিবারের খাবার খায়। ভাল কিছু রান্না হলে, ছেলে মেয়েদের জন্য এই পরিবার সে পরিবার করা হয়! বেশ কিছু দিন আগে আমার ছেলে ওই পরিবারে একটা রান্না করা মাছ খেয়ে এসে বলল, আজকের মাছটা বেশ স্বাদের ছিল। আমি শুনে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করি, তিনি উক্ত মাছের নাম বলতে পারেন নাই কিন্তু মাছটা চিনেন বলে জানালেন।


এর কিছুদিন পর আমি আর আমার স্ত্রী মাছ বাজারে গেলে, তিনি আমাকে উক্ত মাছ দেখান এবং কিনে ফেলতে বলেন। এই মাছ ঢাকার মাছ বাজারে খুব একটা বেশি দেখা যায় না, মাঝে মাঝে দেখা যায়। মাছ দোকানীকে মাছের নাম জিজ্ঞেস করায় কি যেন একটা নাম বলল, মনে রাখতে পারি নাই। বাসায় এসে আমার স্ত্রী উক্ত ভাবী থেকে জানলেন, এই মাছের নাম হচ্ছে – রামচোষ। বার বার জিজ্ঞেস করে আমি মনে রাখি!


যাক এর পর আমরা এই মাছ রান্নায় লেগে গেলাম। মাছের দাড়ি মোছ কেটে কুটে পরিষ্কার করা হল। কিছু টিপস ছিল, উক্ত বরিশাল ভাবীর। রান্না খুব একটা জটিল মনে হয় নাই। মাছ হাল্কা ভাজি করে, ঝোল করে রান্না। খেতে বসে, আমার ছেলে বলল, হ্যাঁ বেশ মজার। আমার কাছেও বেশ লাগল।


হাল্কা তেলে মাছটা ভেজে নিতে হবে।


ভাজা শেষে মাছ গুলো উঠিয়ে রাখতে হবে।


রান্নার কড়াইতে পেঁয়াজ কুচি করে তেলে ভেজে নিতে হবে।


প্রয়োজনীয় মশলা পাতি। এক চামচ মরিচ (দেখে শুনে), আদা চামচ হলুদ, সামান্য রসুন, সামান্য আদা বাটা ও পরিমাণ মত লবণ দিয়ে ভাল করে ভেজে নিতে হবে।


ভাল করে কষানো হলে এক কাপ পানি দিয়ে ঝোল বানিয়ে তাতে কয়েকটা কাচা মরিচ ছেড়ে দিতে হবে (ঘরে থাকার উপর নির্ভর) এবং হাল্কা আঁচে গরম করতে হবে।


কষানো হয়ে গেলে, ভালা রামচোষ মাছ গুলো দিয়ে দিন।


ভাল করে ঝোলে মিশিয়ে নিন। রামচোষ মাছ নরম মাছ, তাই নাড়াতে সাবধান। যেন না ভেঙ্গে যায়।


কিছুক্ষণ পর ঘরে থাকলে কিছু ধনিয়া পাতা দিয়ে দিন এবং ফাইনাল লবণ চেক করুন। লাগলে দিন না লাগলে ওকে।


ব্যস হয়ে গেল রামচোষ মাছ রান্না। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


গরম ভাতের সাথে আমার কাছে বেশ সুস্বাদু লেগেছিল। মাছের মাংস বেশ নরম এবং তেমন কাটা নেই। পুরা কাঁটাকুটা সহ চিবিয়ে খেয়ে ফেলা যায়।

একদিন রান্না করে দেখুন, এক দেশে বসবাস করে নানান জেলার মাছ খাবেন না তা কি করে হয়!

19 responses to “রেসিপিঃ রামচোষ মাছ রান্না (বরিশাল, ঝালকাঠির সুস্বাদু মাছ)

  1. বরিশালের কোন ব্লগার থাকলে, এই মাছ নিয়ে আরো ভাল বলতে পারবেন।

    Like

  2. Reblogged this on lancernabin and commented:
    amra mashe bate banglali………amader to r ata sara hoy na……….

    Like

  3. মাছ অনেক পছন্দের। তবে এই মাছের কথা সত্যি জানতামনা।
    রেসিপি ভাল লাগলো অনেক।

    Like

  4. রান্নাতো ভাই এটা সেই বিখ্যাত তপসে মাছ। যে মাছের গুনকির্তন রবীন্দ্রনাথ করেছিলেন। অসাধারন স্বাদ!!!! বাপী ভাই আমায় চিনিয়েছিলেন। এটা শুধু ভাজা খেতেও ভালো লাগে। আর তরকারী রান্না করলে মাছটা না ভেজে রান্না করে খেয়ে দেখবেন। বেগুন দিয়ে মাখা মাখা করে খেতেও দারুন লাগে। সিলেটে এ মাছ পাওয়া যায়না।

    Like

    • ধন্যবাদ রান্নাতো বোন। আমিও এই মাছ প্রথম খেলাম। কুমিল্লা পদ্ধতিতে রান্না। কুমিল্লায় যে কোন মাছ ভেজে রান্না করা হয়! হা হা হা… আবার কোনদিন বাজারে পেলে না ভেজে রান্না করবো। তপসে মাছ। আমার কাছে বেশ স্বাদের মনে হয়েছে। বেগুন দিয়ে ভাল হবে বুঝাই যায়।

      সুখী মাছ।

      Like

  5. bhai thank u… khub khushi holam.

    Like

  6. Amar ek Borishaler Bondhu amake ei fish er golpo bolechilo & pore ekdin ranna kore khaiyechilo. Emnite ei Fish er Book naam “Topse” but Locally “Ramchosh” bole daka hoy. Here Ram (Ram-Lokkhon-Ramayan) bolte “too large/big” & Chosh bolte Moch (Mustache) bojhay. That means Ramchos = Large Mustache Fish. Sorry Banglay Type korte parchi na.

    Liked by 1 person

  7. উদরাজী ভাই, মাছটার নাম ‘রামছোচ’। বরিশালের লোকাল উচ্চারণে ছোচ মানে ছোট মোচ বা গোঁফ। নিজের এলাকার মাছ এবং রেসিপি দেখে নস্টালজিক হলাম। ধন্যবাদ 🙂

    Liked by 1 person

  8. ধন্যবাদ !

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]