গ্যালারি

চিকেন মাখনী


আমার ছেলেকে নিয়ে দোকান পাটে গেলে আমি দেখি ওর চোখ দু’টো শুধু জ্বলজ্বল করে। এখানে সেখানে খুঁজতে থাকে কি কি কেনা যায়! কিছু একটা পছন্দ কিংবা নিতে মন চাইলে কানের কাছে এসে বলে, বাবা এদিকে এস। কাছে যেয়ে ওই দ্রব্য নাড়া ছাড়া করতে থাকে। সব সময় বলা হয় না, মাঝে মাঝে এবং দাম হাতের নাগালে থাকলে বলি, নিয়ে নে! বিশেষ করে খাবারের কোন আইটেম ধরে ঝুলে থাকলে আমি তাড়াতাড়ি বলি, নে!

গত কদিন আগে এমনই এক গ্রোসারী শপে গিয়ে সঞ্জীব কাপুরের চিকেন মাখনীর রেডি মিক্স মশলা নিয়ে ঝুলে পড়ল! বাবা আমি চিকেন মাখনী খাব। হাতে নিয়ে মশলার উল্টা সাইড পড়ে দেখলাম, নেয়া যেতে পারে। বাসায় চিকেন আছে, মশলায় মেখে চুলায় দিলেই তৈরী হয়ে যাবে।


সঞ্জীব কাপুরকে আশা করি আপনারা সবাই চিনেন। আমার যতদূর মনে পড়ে, ইন্ডিয়ান স্যাটেলাইট টিভিতে (জি তে) তিনিই প্রথম ব্যাক্তি, যে খাবারের অনুষ্ঠান নিয়ে ভীষন জনপ্রিয়তা পান, তার অনুষ্ঠানের নাম ছিল – খানা খাজানা, পিউর হিন্দি ভাষার অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটা এখনো জি টিভিতে চলে। এত বছর ধরে রান্না/খাবারের অনুষ্ঠান চালানো সহজ কথা নয়। আমার পরিস্কার মনে আছে, আমি তখন আরবে থাকি, সাল মনে নেই তবে ১৯৯০/১৯৯১ এর মাঝামাঝি হবে হয়ত!

বড় বড় ডিস এবং রিসিভার দিয়ে স্যাটেলাইট টিভি দেখতে হত। দু’টি অনুষ্ঠান দেখতে আমরা সবাই জড় হতাম, আমরা কয়েকজন মিলে ডিস ও রিসিভার কিনেছিলাম। এক হচ্ছে টিভিএস সারেগামাপা (নূতন শিল্পীদের হিন্দি গানের অনুষ্ঠান) এবং অন্যটি হচ্ছে খানা খাজানা। সারেগামাপা’র উপস্থাপক সানু নিগাম তো এখন সুপারস্টার। আন্নু কাপুর নামের আর একজন উপস্থাপক হিন্দি গানের কলি নিয়ে একটা অনুষ্ঠান চালাতেন নাম ছিল, ক্লোজআপ আন্তেক্সরী। এই অনুষ্ঠান আমরা দেখতাম না। মেয়েদের জন্য এটা একটা জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ছিল, এর পর পর ই ধারাবাহিক আসে! আমার মনে হয় এই আন্তেক্সরী দেখেই বাঙ্গালী আপারা, মেয়েরা, বধূরা, মায়েরা, মামীরা, ফুফুরা হিন্দি সিরিয়ালে পড়ে যায়! যা থেকে আজো বের হতে পারে নাই! না যাই, এসব লিখে আবার আপারা, মেয়েরা, বধূরা, মায়েরা, মামীরা, ফুফুরা আমাকে মন্দ বলবে।


দেড় কাপ পানিতে প্যাকেট মশলা ঢেলে গুলিয়ে তাতে এক কেজি চিকেন দিয়ে দিতে হবে। সামান্য একটু তেল দিতে হবে।


ভাল করে মেখে কিছুক্ষন রেখে চুলায় চড়াতে হবে। মিক্স মসলাতে সব কিছু দেয়া থাকে বলে আর কিছু যোগ করার দরকার নাই।


চিকেন/ মুরগীর গোসত সিদ্ব না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে হবে। ঢাকনা দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। পানি কমে গেলে কিছু পানি যোগ করা যেতে পারে।


ঝোল টেষ্ট করে দেখি স্বাদ বুঝা যাচ্ছে না তাই আমি কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়েছি, একটু ঝাল হউক।


এবার হচ্ছে মাখনীর আসল উপাদান, ফুড ক্রীম/মাখন।


ক্রীম দেয়ার পর ভাল করে জ্বাল দিতে হবে।


ব্যস হয়ে গেল, চিকেন মাখনী সঞ্জীব কাপুরের রেডিমিক্স মশলা দিয়ে।

আমার পুর্ব অভিজ্ঞতায় বলে এই ধরনের মিক্স মশলায় খাবার সুস্বাদু হয় না। কিন্তু সঞ্জীব কাপুরে মশলায় হয়েছে। রুটি/পরটায় ভালই লাগছিল। তবে মাখনী মশলায় একটু বেশী মেথি দেয়াতে মেথির ঘ্রান অনেকের কাছে ভাল নাও লাগতে পারে। সুতারাং দেখে, শুনে!

1 responses to “চিকেন মাখনী

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]